নির্যাতনের চিহ্ন ঢাকবে মেকআপ?
৩ ডিসেম্বর ২০১৬২৩ নভেম্বর বুধবার নারীর বিরুদ্ধে সহিংসতা নিরসনের আন্তর্জাতিক দিবসে এই অনুষ্ঠানটি প্রচার করে মরক্কোর সরকারি চ্যানেল টুএম৷ সাবাহায়ৎ বা সুপ্রভাত নামের অনুষ্ঠানটিতে এটি প্রচার করা হয়৷ অনুষ্ঠানটিতে দেখানো হচ্ছিল এক মেক আপ আর্টিস্ট এমন একজন নারীর মেকআপ করছেন, যার মুখে নকল কালসিটে দাগ দেয়া রয়েছে৷
মেকআপ শিল্পী বলছেন, ‘‘রাতে আপনার স্বামী, বাবা বা ভাই আপনাকে মেরেছেন আপনার চোখে মুখে এমন কালসিটে পড়েছে৷ এ অবস্থায় আপনি অফিস যাবেন কীভাবে? আপনাদের জন্য তাই আজকের টিপস, নির্যাতনের চিহ্ন ঢাকার মেকআপ৷'' এরপর কীভাবে মেকআপের সাহায্যে নির্যাতনের চিহ্ন আড়াল করা যায় তার টিপস দেন তিনি ৷
প্রথমে বুধবার চ্যানেলের ওয়েবসাইটে এটি পোস্ট করার পর শুক্রবারের মধ্যে এটা নিয়ে সমালোচনার ঝড় ওঠে৷ তখন কর্তৃপক্ষ তা ওয়েবসাইট থেকে মুছে ফেলতে বাধ্য হয়৷ বেশিরভাগ মানুষ ব্যঙ্গ করে লিখেছেন, ‘আপনি আপনার বাবা-মা ও ভাইয়ের হাতে মার খেয়েছেন? আপনার জন্য সমাধান দেকে টুএম চ্যানেল৷' চ্যানেলের ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষ এক বিবৃতিতে এ বিষয়ে দুঃখপ্রকাশ করলেও ২৮ তারিখ ফেসবুকে আবারও ভিডিওটি পোস্ট করা হয়৷ এরপর এটা অনিচ্ছাকৃত ভুল বলে জানায় কর্তৃপক্ষ৷ কিন্তু এবার রোষের আগুনে ঘি ঢালে তা৷ চ্যানেলটি দাবি করেছে নারীদের সম্মান জানাতেই তাদের এই অনুষ্ঠান৷ তাদের অধিকারের পক্ষে সোচ্চার তারা৷
তবে বিক্ষুব্ধ দর্শকদের অভিযোগ, এই অনুষ্ঠানের মধ্য দিয়ে নারী নির্যাতনকে আরো উসকে দেয়া হয়েছে৷ এটি সামাজিক যোগাযোগের মাধ্যমে পোস্ট করার পর থেকে সমালোচনার ঝড় উঠে, যা বিশ্বে ছড়িয়ে পড়ে৷ ভিডিওটি সামাজিক যোগাযোগের মাধ্যমে ভাইরাল হয়ে যায়৷ নারী নির্যাতনের শিকার হলে বিচারের জন্য আদালতের দারস্থ না হয়ে মেকআপের সাহায্যে নির্যাতনের চিহ্ন ঢেকে কেন অফিস বা চাকরি ক্ষেত্রে যাবে এ প্রশ্ন তুলেছেন অনেকেই৷ নারী বিষয়ক এই অনুষ্ঠানটি ঐ চ্যানেলে প্রতিদিন সকালে প্রচারিত হয়৷
এদিকে, মরক্কোর অডিও ভিজুয়াল মন্ত্রণালয়ে অন্তত দুই হাজার ব্যক্তি চ্যানেলের বিরুদ্ধে একটি আবেদনে স্বাক্ষর করেছেন৷ এরপর মন্ত্রণালয় একটি জরুরি বৈঠক ডাকে৷ সরকারি ‘টুএম' চ্যানেল এ সাবাহায়ৎ ছ'বছর ধরে প্রচার হয়ে আসছে৷ যার বক্তব্য ‘‘প্রতিটি নারীর প্রতিটি বিষয় মূল্যবান''৷ অনুষ্ঠানটির প্রধান প্রযোজক এক বিবৃতিতে জানান, ‘‘‘টুএম'-এর পুরো টিমের পক্ষ থেকে আমি এই অনুষ্ঠান প্রচারের জন্য দুঃখ প্রকাশ করছি৷ আমরা আপনাদের অনুভূতিকে সম্মান জানাই৷ আশা করছি ভবিষ্যতে এমন আর কোনো ঘটনা ঘটবে না৷''
এপিবি/ডিজি (এপি, এএফপি, রয়টার্স)
এ ঘটনার মধ্য দিয়ে নারী নির্যাতনকে আরো উসকে দেয়া হয়েছে – এ কথাটা কি আপনি সমর্থন করেন? লিখুন নীচের ঘরে৷