মুম্বইয়ে ঘোড়ার গাড়ির পথচলা কী শেষ হচ্ছে?
৯ অক্টোবর ২০১১মুম্বইয়ের ঘোড়ার গাড়ি, নাম তার ‘ভিক্টোরিয়া'৷ সেই ব্রিটিশ শাসিত ভারতের সময় থেকে রাস্তায় আছে ‘ভিক্টোরিয়া'৷ শুরুর দিকে এটি ছিল সেকালের বোম্বের বড়লোকদের বাহন৷ সময় পরিবর্তনের সাথে সাথে এই বাহনের আরোহীদের ধরন বদলেছে, এখন মূলত পর্যটকরাই মুম্বইয়ের রাস্তায় ঘুরে বেড়ান ভিক্টোরিয়ায় চেপে৷
সম্প্রতি মুম্বইয়ের আদালতে একটি মামলা দায়ের করা হয়েছে, যেখানে দাবি করা হয়েছে ঘোড়ার গাড়ির ঘোড়াগুলোর যত্নআত্তি ঠিকভাবে হয়না৷ রাস্তায় এই প্রাণীগুলো রোদে পুড়ছে, বৃষ্টিতে ভিজছে৷ এদেরকে রোদ-বৃষ্টি থেকে রক্ষার কোন ব্যবস্থা নেই৷ তাছাড়া ঘোড়াগুলোকে ঠিকভাবে পুষ্টিকর খাবার প্রদান করা হয়না৷ রোগাক্রান্ত বা আহত ঘোড়াদের চিকিৎসা ঠিকমত করা হয়না৷ এমনকি এসব প্রাণীকে ঠিকভাবে পানিও পান করতে দেওয়া হয়না৷
এতসব অভিযোগের প্রেক্ষিতে তাই দাবি উঠেছে, মুম্বইয়ের রাস্তায় ‘ভিক্টোরিয়া' নামক রুপালি রংয়ের ঘোড়ার গাড়িগুলো নিষিদ্ধ করা হোক৷ ঘোড়া বাঁচানোর এই আন্দোলনের সঙ্গে আছেন বলিউড তারকারাও৷
অনেক বলিউড ছবিতেই এসব ঘোড়ার গাড়িকে বিশেষভাবে দেখানো হয়েছে৷ এরমধ্যে ১৯৭২ সালে নির্মিত ‘ভিক্টোরিয়া নং ২০৩' এবং ১৯৭৫ সালের ছবি ‘‘শোলে'' উল্লেখযোগ্য৷ কিন্তু সেসব বর্ণিল দিন এবার বোধকরি শেষ হতে চলেছে৷ মুম্বই কর্তৃপক্ষের হিসেবে, বর্তমানে বৈধ ভিক্টোরিয়ার সংখ্যা ১৩০টি, অথচ ১৯৭৩ সালে এই সংখ্যা ছিল ৮০০৷
প্রাণী অধিকার সংগঠন পেটা এক খোলা চিঠিতে লিখেছে, মুম্বইয়ের রাস্তার যানচলাচল বৃদ্ধি পাওয়ায় তা ঘোড়া, চালক, সাইকেল আরোহী এবং পথচারীদের জন্য বিপজ্জনক হয়ে উঠেছে৷
গত কয়েকবছর ধরে অবৈধ ভিক্টোরিয়া, অপ্রাপ্তবয়ষ্ক চালক, আর ঘোড়াদের প্রতি অবহেলা বেড়েছে বলেই মনে করছে কর্তৃপক্ষ৷ গত সপ্তাহে মুম্বইয়ের স্থানীয় পত্রিকায় একটি অসুস্থ ঘোড়ার ছবি প্রকাশ করা হয়৷ ঘোড়াটি রাস্তার মধ্যে পড়ে গিয়েছিল এবং পাক্কা বিশ মিনিট আর উঠে দাঁড়াতে পারেনি৷ ঘোড়ার গাড়ির অন্যান্য দুর্ঘটনার ছবিও বিভিন্ন সংগঠনের কাছে রয়েছে৷
এসব ঘটনার প্রেক্ষিতে প্রাণী এবং পাখি বিষয়ক দাতব্য ট্রাস্ট ‘এবিসিটি' বোম্বে হাই কোর্টে একটি মামলা দায়ের করেছে৷ এতে অবৈধ ঘোড়ার গাড়ির মালিকদেরকে, বিশেষ করে যারা প্রাণী সুরক্ষা আইনের তোয়াক্কা করছে না, তাদেরকে বিচারের কাঠগড়ায় তোলার দাবি জানানো হয়েছে৷
প্রতিবেদন: আরাফাতুল ইসলাম
সম্পাদনা: জাহিদুল হক