1. কন্টেন্টে যান
  2. মূল মেন্যুতে যান
  3. আরো ডয়চে ভেলে সাইটে যান

মুঠোফোনের প্রেমে জার্মানি

ক্লাউস উলরিশ/এসি১৫ সেপ্টেম্বর ২০১৩

জার্মানরা এ বিষয়ে একমত: মোবাইল টেলিফোন ছাড়া বাঁচা যায় না৷ ৩০ বছর বয়সের নীচে প্রায় প্রত্যেকেরই মোবাইল আছে৷ জার্মানরা যাকে বলেন ‘হ্যান্ডি’, অর্থাৎ হাতফোন৷ প্রবীণেরাও ধীরে ধীরে এই ‘হ্যান্ডি’-র স্বাদ পাচ্ছেন৷

https://p.dw.com/p/19hY8
ছবি: Fotolia/Robert Kneschke

প্রতি দশজন জার্মানের মধ্যে ক'জনের মুঠোফোন আছে, সেটা প্রশ্ন নয়৷ প্রশ্ন হলো, ক'জনের নেই৷ উত্তর হলো: প্রতি দশজন জার্মানের মধ্যে শুধু একজনের মুঠোফোন নেই৷ দেশের জনসংখ্যা আট কোটির কিছু বেশি৷ তার মধ্যে ছয় কোটি ত্রিশ লাখ মানুষ মুঠোফোন ব্যবহার করেন৷ অর্থাৎ গত দু'বছরে মুঠোফোন ব্যবহারকারীদের সংখ্যা বেড়েছে বিশ লাখ৷ জার্মানির হাইটেক শিল্প সমিতি বিটকম-এর সর্বাধুনিক জরিপে এ সব তথ্য পাওয়া গেছে৷

‘‘আরো দেখা যাচ্ছে: প্রবণতা স্মার্টফোনের দিকে, অর্থাৎ যে মোবাইল ফোনে ইন্টারনেট পাওয়া যায়,'' ডয়চে ভেলেকে বললেন বিটকম-এর মুখপাত্র মার্ক থুইলমান৷ জার্মান নাগরিকদের ৪০ শতাংশ নাকি ইতিমধ্যেই স্মার্টফোনের অধিকারী – এক বছর আগেও যা ছিল ৩৪ শতাংশ৷ আর ২০১৩ সালে এ যাবৎ যত মুঠোফোন বিক্রি হয়েছে তার ৮০ শতাংশই নাকি স্মার্টফোন৷

নবীনে-প্রবীণে

৬৫ বছরের বেশি বয়সের জার্মানদের প্রায় দুই-তৃতীয়াংশের মুঠোফোন আছে৷ থুইলমানের ধারণা, প্রবীণদের আধুনিক প্রযুক্তি সম্পর্কে ভীতি কিংবা বিতৃষ্ণার কারণেই আরো বেশি বয়োজ্যেষ্ঠ মানুষ মুঠোফোন ব্যবহার করা শুরু করেননি৷ এছাড়া এই বয়সের মানুষজনের মধ্যে একটি ব্যাপকভাবে প্রচলিত ধারণা হলো, মুঠোফোন ব্যবহারের খরচ খুব বেশি৷ ‘‘কিন্তু মুঠোফোন এবং মুঠোফোন থেকে কলের খরচ যে ব্যাপকভাবে কমে গেছে, সেটাও প্রবীণরা একদিন জানতে পারবেন'', বলেন আশাবাদী থুইলমান৷

Olympische Sommerspiele 2012 in London Sportler mit Handy
ছবি: Reuters

৫০ থেকে ৬০ বছরের মানুষেরা ইতিমধ্যেই মুঠোফোন ব্যবহারে অভ্যস্ত হয়ে গেছেন৷ বয়স বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে তারা যে মুঠোফোন ব্যবহার ছেড়ে দেবেন, তার সম্ভাবনা কম৷ বিশেষ করে অত্যাধুনিক স্মার্টফোনগুলিই বয়োবৃদ্ধদের নানা ধরনের সুবিধা এনে দেয়, বিশেষ করে তারা যদি অথর্ব হয়ে পড়েন৷ বিভিন্ন অ্যাপ তাদের স্বাস্থ্যগত অবস্থার উপর নজর রাখতে পারে; এমন সব সেন্সর, যা তারা পড়ে গেলে আত্মীয়স্বজন কি অ্যাম্বুলেন্সকে খবর দিতে পারে৷

ল্যান্ডলাইন থাকছে

মুঠোফোন ক্রমে ক্রমে ল্যান্ডলাইনকে বাজার থেকে তুলে দেবে বলে থুইলমান বিশ্বাস করেন না৷ কয়েকটি ইউরোপীয় দেশে অবশ্য আজ বহু মানুষকে মুঠোফোন ছাড়া ল্যান্ডলাইনে পাবার কোনো উপায় নেই৷ কিন্তু জার্মানিতে সে প্রবণতা পরিলক্ষিত হয়নি৷ বিশেষ করে উচ্চগতির ইন্টারনেট সংযোগের জন্য ভবিষ্যতেও অধিকাংশ মানুষ ল্যান্ডলাইনের উপরেই নির্ভর করবেন – এই হলো থুইলমানের ভবিষ্যদ্বাণী৷

Symbolbild Alte Mobiltelefone Handy Entsorgung
জার্মানির বাড়িতে বাড়িতে প্রায় নয় কোটি পুরনো মুঠোফোন সযত্নে সঞ্চিত আছে!ছবি: imago/imagebroker

বিটকমের জরিপ শুধু জার্মানি এবং বিভিন্ন বয়সের গ্রাহকদের নিয়ে৷ কিন্তু গোটা ইউরোপ দেখলে, উত্তর আর দক্ষিণের মধ্যেও একটা ফারাক আছে৷ ডেনমার্ক কি সুইডেনের মতো উত্তরের দেশগুলি ইন্টারনেট বা স্মার্টফোন ব্যবহারে রোমানিয়া কি বুলগেরিয়ার মতো দক্ষিণের দেশগুলোর চেয়ে অনেক এগিয়ে আছে৷

পুরনো মুঠোফোনটার কি হবে?

শুধু মুঠোফোন নয়, আধুনিক ডিজিটাল প্রযুক্তির চরিত্রগত বৈশিষ্ট্যই হলো এই যে, তাদের আয়ু কম৷ পুরনোটা কিনে তা-তে অভ্যস্ত হতে না হতে নতুনটা হুড়মুড় করে ঘাড়ে এসে পড়ে৷ তখন সেটাকে কিনতে হয় এবং সমস্যা দাঁড়ায়, এবার পুরনোটার কি হবে? বিটকমের পরিসংখ্যান অনুযায়ী, জার্মানির বাড়িতে বাড়িতে প্রায় নয় কোটি পুরনো মুঠোফোন সযত্নে সঞ্চিত আছে! হয় নতুন মুঠোফোনটা খারপ হয়ে গেলে তার বিকল্প হিসেবে, নয়ত পুরনো মুঠোফোনে দরকারি নম্বর ইত্যাদি রক্ষিত আছে বলে৷

ওদিকে পুরনো মুঠোফোনগুলিতে সোনা অথবা রেয়ার আর্থের মতো দামি ধাতু আছে, কাজেই সেগুলো যথাশীঘ্র রিসাইক্লিং করা দরকার৷ পুরনো মুঠোফোনগুলি ডাক মারফত মোবাইল কোম্পানিকে ফেরৎ পাঠানো যায়৷ ডাকটিকিটও লাগে না, ইন্টারনেট মারফত বিনে টিকিটের খাম অর্ডার করা যায়৷ বহু মোবাইল কোম্পানি প্রতিটি ফেরৎ পাওয়া মুঠোফোনের জন্য কোনো পরিবেশ বা সামাজিক বা অন্য কোনো ত্রাণ প্রকল্পে অর্থদান করে থাকে৷

আর পুরনো মোবাইল বেচে দেওয়ার রাস্তা তো রইলই৷ তবে খেয়াল রাখবেন, পুরনো মুঠোফোনে রাখা ড্যাটা আগে মুছে ফেলতে ভুলবেন না কিন্তু!

স্কিপ নেক্সট সেকশন এই বিষয়ে আরো তথ্য

এই বিষয়ে আরো তথ্য