মুক্তিযুদ্ধের প্রশিক্ষণ নেওয়া তিন ‘রাজাকারের' ফাঁসি
১৯ মে ২০২২দণ্ডিত যুদ্ধাপরাধীরা হলেন আব্দুল মান্নান ওরফে মনাই, আব্দুল আজিজ ওরফে হাবুল এবং তার ভাই আব্দুল মতিন৷ আব্দুল মতিন পলাতক; বাকি দুজন রায়ের সময় আদালতে উপস্থিত ছিলেন৷
বৃহস্পতিবার এ মামলার রায় ঘোষণা করে বিচারপতি মো. শাহিনুর ইসলামের নেতৃত্বাধীন তিন সদস্যের আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল৷ ট্রাইব্যুনালের অপর দুই সদস্য হলেন বিচারপতি মো. আবু আহমেদ জমাদার এবং কে এম হাফিজুল আলম৷
ট্রাইব্যুনালের প্রসিকিউশন এ মামলায় যে পাঁচ দফা অভিযোগ এনেছিল, তার সবগুলো প্রমাণিত হওয়ায় তিন আসামির সবাইকে মৃত্যুদণ্ড দেওয়া হয়৷
আসামিদের মধ্যে মনাইয়ের পক্ষে শুনানিতে ছিলেন আইনজীবী এম সারোয়ার হোসেন, হাবুলের পক্ষে ছিলেন আব্দুস সাত্তার পালোয়ান৷ হাবুলের ভাই পলাতক আব্দুল মতিনের পক্ষেও রাষ্ট্রনিযুক্ত আইনজীবী হিসেবে আব্দুস সাত্তার পালোয়ানই শুনানি করেন৷
মুক্তিযুদ্ধের প্রশিক্ষণ নিয়ে রাজাকার বাহিনীতে
ট্রাইব্যুনালের তদন্ত সংস্থা বলছে, আজিজ ও মতিন ১৯৭১ সালে মুক্তিযুদ্ধের সময় ছাত্রলীগের নেতাকর্মীদের সঙ্গে ভারতে মুক্তিযুদ্ধের প্রশিক্ষণ নেন৷ প্রশিক্ষণ শেষে পালিয়ে বড়লেখায় এসে তারা হানাদার বাহিনীর কাছে আত্নসমর্পণ করেন এবং রাজাকার বাহিনীতে যোগ দেন৷ তখন তাদের সাথে যোগ দেন মান্নান৷
২০১৬ সালের ১ মার্চ গ্রেপ্তার হওয়ার আগে আব্দুল আজিজ বিএনপির রাজনীতিতে জড়িত ছিলেন৷ আর পলাতক মতিন জামায়াতে ইসলামীর রাজনীতি করতেন৷
তদন্ত সংস্থার ভাষ্য অনুযায়ী, আসামি মান্নান ওরফে মনাই ১৯৭১ সালে জামায়াতের তখনকার ছাত্র সংগঠন ইসলামী ছাত্রসংঘের রাজনীতিতে জড়িত ছিলেন৷
মুক্তিযুদ্ধের সময় তিনি বড়লেখা থানা শান্তি কমিটির সদস্য হন এবং রাজাকার বাহিনীতে যোগ দেন৷ ২০১৬ সালের ১ মার্চ আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যরা তাকে গ্রেপ্তার করে৷
ডয়চে ভেলের কনটেন্ট পার্টনার বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে প্রসিকিউটর সাবিনা ইয়ানমিন মুন্নি বলেন, আসামিরা নিজেদের ‘মুক্তিযোদ্ধা' হিসেবে দাবি করলেও ট্রাইব্যুনালে এ বিষয়ে তারা যথাযথ প্রমাণ দিতে পারেননি৷
‘‘তারা যে মুক্তিযুদ্ধের বিরুদ্ধে গিয়ে রাজাকার বাহিনীতে যোগ দিয়ে হত্যা-ধর্ষণ-নির্যাতনসহ অন্যান্য অপরাধের সাথে জড়িত ছিল তা ১৭ জন সাক্ষীর দেওয়া সাক্ষ্য ও দলিলপত্রে প্রমাণিত হয়েছে৷ আমরা তাদের সর্বোচ্চ শাস্তি মৃত্যুদণ্ড চেয়েছি৷’’
এনএস/জেডএইচ (বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম)