মিয়ানমারে সাংবাদিকরা কতোটা স্বাধীন?
২৭ অক্টোবর ২০১২কী আশ্চর্য, ইয়াঙ্গুনের ঐতিহ্যবাহী শোয়েদগাও বৌদ্ধ মন্দিরে গিয়ে কোথায় সৃষ্টিকর্তার প্রতি কৃতজ্ঞতা জানাবেন, তা নয়, কিছু লোক কৃতজ্ঞতা জানাচ্ছেন মিয়ানমারের বর্তমান সরকারের প্রতি! তাঁরা যে এখন কিছুটা প্রাণ খুলে নিজের সমস্যার কথা বলতে পারছেন সেই জন্য!
কিছুদিন আগেও সেটা একেবারেই সম্ভব ছিল না৷ দাবি আদায়ের জন্য মিছিল দূরের কথা, একটু জোরে কোনো সমস্যার কথা কোথাও বলেছেন তো পাকড়াও করবে এসে পুলিশ – এই ছিল অবস্থা৷
সেই তুলনায় এখনকার পরিস্থিতি যে অনেক ভালো সে কথা মিয়ানমারের এক মহিলা চিকিৎসকও মানেন৷ তবে এখনো নিজের নাম প্রকাশ না করার শর্ত দিয়েই তিনি বলেন বদলে যাওয়া অবস্থার কথা৷ এখন যে সাংবাদিকরা অনেক স্বাধীন, কৃষকরা তাঁদের সমস্যার কথা সম্মিলিতভাবে প্রকাশ্যে জানাতে পারছেন – এর পেছনে ইন্টারনেট, রেডিও, ইউটিউব'কে কৃতিত্ব দিলেন তিনি৷ বললেন, ‘‘আমার মনে হয় লোকজন ইন্টারনেট, ফেসবুক, ইউটিউব ইত্যাদির মাধ্যমে দেশের বাইরে বিশ্বের কোথায় কী কী হচ্ছে তা বিস্তারিতভাবে জানতে পারেন৷ ওভাবে বাইরের খবর জানলে এবং নিজ দেশের অবস্থার সঙ্গে তুলনা করে বুঝতে পারেন যে নিজেরা কেমন আছেন৷ তখন অবস্থা পরিবর্তনের উদ্যোগও আসে৷''
মিয়ানমারে অবশ্য আরব বসন্তের মতো প্রচলিত ব্যবস্থার বিরুদ্ধে কোনো গণজোয়ার আসেনি৷ তারপরও সেখানে সংসদ নির্বাচনের পর নতুন সরকার মত প্রকাশের স্বাধীনতার প্রশ্নে উদারতা দেখিয়েছে৷ আগে সাংবাদিকরা স্পর্শকাতর কোনো বিষয় নিয়ে কাজ করলে প্রচারের আগে অনুমতি নিতে হতো সরকারের৷ সম্প্রতি সরকার জানিয়েছে যে, আগের মতো আর রিপোর্ট জমা দেয়ার দরকার নেই৷
দ্য মিয়ানমার টাইমস ম্যাগাজিনের এক সাংবাদিক জানালেন, এ ঘোষণার পরও সরকার সংবাদমাধ্যমের ওপর ঠিকই কড়া নজর রাখছে৷ আগে রিপোর্ট জম দিতে হতো, আপত্তি থাকলে প্রচার করা যেত না৷ কিন্তু এখন প্রচারের পর যদি দেখা যায় যে আপত্তিকর কিছু আছে, তাহলে মামলা ঠুকে দেয়া হয়৷
এ অবস্থাকেও বড় উন্নতি হিসেবে দেখছেন সাবেক ওই সাংবাদিক৷ কয়েক বছর আগে সাংবাদিকরা চায়ের দোকানেও সরকারের সমালোচনা করলে ধরে নিয়ে যেত পুলিশ৷ এখন তো সেখানে তুমুল আড্ডা জমে, সরকারের তীব্র সমালোচনা করলেও গ্রেপ্তার হতে হয়না – এই বা কম কিসে!
এসিবি/ডিজি (ডিপিএ)