রোহিঙ্গাদের এলাকায় রাখাইনদের ঘর
১৬ মার্চ ২০১৮কো তান কাউক গ্রামে ধীরে ধীরে বাড়ছে গরিব রাখাইনদের ভিড়৷ একদিকে বিশাল এলাকাজুড়ে বুলডোজারে ধুলোয় মিশিয়ে দেয়া রোহিঙ্গাদের পোড়া ঘর-বাড়ির ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা চিহ্ন, অন্যদিকে গড়ে উঠছে ছোট ছোট সাজানো-গোছানো ঘর-বাড়ি৷ ঘরগুলো তৈরি হচ্ছে সেনাবাহিনীর সহায়তা এবং বেসরকারি উদ্যোক্তাদের বিনিয়োগে৷ প্রতিটি পরিবারের জন্য ঘর তৈরিতে ব্যয় হচ্ছে মাত্র সাড়ে চারশ' মার্কিন ডলার৷ বোঝাই যায়, ঘরগুলো তৈরি করা হচ্ছে দরিদ্রদের জন্য৷ ইতিমধ্যে তৈরি হয়েছে ৬৪টি ঘর৷ ২৫০ জনের মতো দরিদ্র রাখাইন এসে ঠাঁই নিয়েছেন সেখানে৷
এতদিন কেন সেখানে আসেননি? এখন কেন? এমন প্রশ্নের জবাবে বার্তা সংস্থা এএফপিকে চিট সাইন ইয়েইন বললেন, ‘‘আমরা আসলে ওই কালাদের (রোহিঙ্গা) ভয় পেতাম৷ তাই এতদিন এখানে আসার কথা ভাবতেই পারিনি৷ কিন্তু এখন তো ওরা নেই, তাই আমাদের আত্মীয়দের সঙ্গে মিলিত হওয়ার সুযোগ পেলাম৷ ''
বিশ্লেষকরা বলছেন, এক সময়ের রোহিঙ্গা অধ্যুষিত লোকালয়ে ‘মুসলিমমুক্ত এলাকা' গড়ে তোলার জন্যই এভাবে পরিকল্পনামাফিক রাখাইনদের জন্য আবাসন গড়ে তোলা হচ্ছে৷ এ আশঙ্কা যে ভুল নয় তার প্রমাণ পাওয়া গেল উ হ্লা স-এর কথায়৷ রাখাইন রাজ্যের এই সাংসদ এএফপিকে জানালেন, ‘‘এই পুরো এলাকাটা মুসলিমদের দ্বারা প্রভাবিত ছিল৷ সেনা অভিযানের পর তারা পালিয়ে গেছে৷ তাই এখন এখানে আমাদের রাখাইনদের থাকার ব্যবস্থা করতে হবে৷''
২০১৭ সালের ২৫শে আগস্ট ব্যাপক সেনা অভিযানের পর থেকে এ পর্যন্ত ৭ লাখেরও বেশি রোহিঙ্গা মুসলমান মিয়ানমার থেকে পালিয়ে বাংলাদেশে আশ্রয় নিয়েছে৷ আন্তর্জাতিক চাপের মুখে মিয়ানমার সরকার রোহিঙ্গাদের ফিরিয়ে নিতে রাজি হলেও পুনর্বাসন প্রক্রিয়া শুরু করা যায়নি৷ গত ফেব্রুয়ারিতে বাংলাদেশ প্রথম ধাপে ৮০৩২ জনকে ফিরিয়ে নেয়ার জন্য তাদের বিস্তারিত তথ্য মিয়ানমার সরকারের কাছে হস্তান্তর করেছিল৷ কিন্তু মিয়ানমার জানিয়েছে, ৮০৩২ জনের মধ্যে মাত্র ৩৭৪ জনকে ফিরিয়ে নেয়া সম্ভব৷ দেশটির দাবি, বাকিরা যে মিয়ানমারে ছিলেন তা প্রমাণের জন্য উপযুক্ত তথ্য দিতে ব্যর্থ হয়েছে বাংলাদেশ৷
এসিবি/ডিজি (এএফপি)