মিশরে জনসংখ্যা সমস্যা প্রকট আকার ধারণ করেছে
৪ জুলাই ২০০৮মিশরে গত দশকে জনসংখ্যা প্রবৃদ্ধির হার ছিল প্রায় ২ শতাংশ আর প্রতি একজন মহিলা গড়ে ৩.১ জন সন্তান জন্ম দিয়ে থাকেন৷
নতুন কোনো শিশুর জন্ম দেয়ার আগে তার জন্য প্রয়োজনীয় সবকিছুর ব্যবস্থা আছে কি না চিন্তা করে দেখুন- এ ধরনের শ্লোগানের মাধ্যমে জনসংখ্যা প্রবৃদ্ধির হার কমাতে জনগণের মধ্যে সচেতনতা তৈরী করতে সরকার চেষ্টা করে যাচ্ছে৷
তবে সরকারের গ্রহণ করা পরিবার পরিকল্পনা কর্মসূচি জনগণের মধ্যে সামান্যই প্রভাব ফেলছে বলে জানা গেছে কারণ সেখানকার জনগণের ধারণা একমাত্র আল্লাহই সিদ্ধান্ত নিতে পারে যে কার ঘরে কয়টা সন্তান হবে৷
যেমন কায়রোতে টেক্সী চালান এমন একজন পাঁচ সন্তানের জনক মোহাম্মদ আহমেদকে সন্তান কম নেয়ার জন্য সরকারের আহবান সম্পর্কে প্রশ্ন করা হলে তিনি বলেন অসম্ভব, এ ব্যাপারে সিদ্ধান্ত নেয়ার জন্য আল্লাহ রয়েছেন৷
এছাড়া দেশটির পল্লী অঞ্চলে একটি বদ্ধমূল ধারণা রয়েছে যে বড় পরিবারই হলো অর্থনৈতিক শক্তির সবচেয়ে বড় মাধ্যম৷ আবার অনেক পরিবার ছেলে সন্তানের আশায় একটার পর একটা মেয়ে সন্তানের জন্ম দিয়ে থাকে৷
এদিকে মিশরে প্রাকৃতিক সম্পদের অভাবের কারণে সরকার বেশী সন্তান নেয়ার মানসিকতা পরিবর্তনের জন্য জনগণকে চাপ দিতে পারছে না বলে জানা গেছে৷
উল্লেখ্য, ইরানে ৯০ এর দশকে যেসব পরিবার বেশী সন্তান নিতো তাদের বিরুদ্ধে সরকার কঠোর ব্যবস্থা গ্রহণ করতো৷ এর ফলে সেখানে জনসংখ্যা বৃদ্ধির হার উল্লেখজনকভাবে কমে গিয়েছিল৷ এ ধরনের পদক্ষেপ মিশরে নেয়া হলে সেটা রাজনৈতিকভাবে বিপজ্জনক হতে পারে বলে প্রাক্তন সংসদ সদস্য মিলাদ হানা বলেছেন৷
এছাড়া মিশরে গর্ভপাত ঘটানোর ব্যাপারটি বৈধ হবার সম্ভাবনা নেই যদিও তিউনিশিয়া গর্ভপাত বৈধ করে জনসংখ্যা বৃদ্ধির হার উল্লেখজনকভাবে কমিয়েছে৷ ইরানের মতো ভ্যাসেক্টমির কথাও মিশরে শোনা যায় না৷
হানা বলেন মিশর এমন একটি দেশ যেখানে জনসংখ্যা কমানোর ব্যাপারে সরকারের নাগরিকদের শুধু আহবান জানানো ছাড়া আর কিছু করার নেই৷
তিনি বলেন জনসংখ্যা বিষ্ফোরণ মারাত্মক আকার ধারণ করেছে৷ সরকার জানে না কিভাবে তা মোকাবেলা করতে হবে৷
প্রেসিডেন্ট হোসনী মোবারক জনসংখ্যা নিয়ে আয়োজিত সরকারী এক সম্মেলনে বলেছেন জনসংখ্যার প্রবৃদ্ধি কমানোটা খুব জরুরী হয়ে পড়েছে৷
উল্লেখ্য, মিশরের জনসংখ্যার প্রতি পাঁচজনের একজন প্রতিদিন এক মার্কিন ডলারেরও কম আয় করে৷ এছাড়া বর্তমানে খাদ্য ও জ্বালানী তেলের মূল্যবৃদ্ধির কারণে সেখানে মূল্যস্ফীতির হার গত ১৯ বছরের মধ্যে সবচেয়ে বেশী হয়েছে৷