1. কন্টেন্টে যান
  2. মূল মেন্যুতে যান
  3. আরো ডয়চে ভেলে সাইটে যান

মিতু হত্যাকাণ্ড নিয়ে নানা প্রশ্ন

হারুন উর রশীদ স্বপন, ঢাকা২৭ জুন ২০১৬

চট্টগ্রামে পুলিশ সুপার (এসপি) বাবুল আক্তারের স্ত্রী মাহমুদা খানম মিতু হত্যার বিষয়ে এখন নতুন করে নানা ধরণের প্রশ্ন উঠছে৷ আছে গুজবও৷ দু'জন হত্যার দায় স্বীকার করে আদালতে জবানবন্দি দিয়েছেন৷ বলা হচ্ছে তারা ভাড়াটে খুনি৷

https://p.dw.com/p/1JESu
ছবি: picture-alliance/dpa/Str

এসপি বাবুল আক্তারকে ঢাকার বাসা থেকে নিয়ে ১৫ ঘণ্টা জিজ্ঞাসাবাদ করায় নানা ধরণের প্রশ্ন উঠেছে৷ স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী জানিয়েছেন, ‘‘মিতু হত্যাকাণ্ডের সঙ্গে জড়িত সন্দেহভাজনদের চিহ্নিত করা হয়েছে৷ তাদের মধ্যে দু-একজন ধরা পড়েছে৷ আমি সুনিশ্চিত, ভবিষ্যতে আরও ধরা পড়বে৷''

শুক্রবার দিবাগত রাত ১২টার পর মিতুর স্বামী বাবুল আক্তারকে ঢাকায় তার শ্বশুর বাড়ি থেকে নিয়ে যায় পুলিশ৷ পরের দিন, অর্থাৎ শনিবার বিকেল ৪টার দিকে তাঁকে আবার বাসায় দিয়ে আসা হয়৷ তাঁর শ্বশুর মোশাররফ হোসেন ডয়চে ভেলেকে বলেন, ‘‘তাকে নিয়ে যাওয়ার পর দীর্ঘ সময় আমরা তার অবস্থান জানতাম না৷ তার মোবাইল ফোনও বন্ধ ছিল৷ এটা আমার কাছে অস্বাভাবিক মনে হয়েছে৷ ১৫ ঘণ্টারও বেশি সময় ধরে আমরা তার সঙ্গে যোগাযোগ করতে পারিনি৷ আমি বিশ্বাস করি না যে সে কোনোভাবে মিতু হত্যাকাণ্ডের সঙ্গে জড়িত৷''

মোশাররফ হোসেন

তিনি বলেন, ‘‘বাবুল আক্তার সন্ত্রাসি ও জঙ্গিদের বিরুদ্ধে অনেক সহসী কাজ করেছেন৷ সরকার তার এই কাজকে কীভাবে দেখছে তা আমার কাছে পরিষ্কার নয়৷ সরকার তার কাজকে কীভাবে বিবেচনা করছে তাও আমি জানি না৷''

রবিবার চট্টগ্রামের আদালতে মিতু হত্যাকাণ্ডের সঙ্গে জড়িত বলে দু'জন স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিয়েছেন৷ তারা হলেন, ওয়াসিম এবং আনোয়ার৷ চট্টগ্রামের পুলিশ কমিশনার ইকবাল বাহার জানিয়েছেন, ‘‘হত্যাকাণ্ডের সময় মোটরসাইকেলে থাকা তিনজনের একজন হলো ওয়াসিম৷ সে সরাসরি মিতুকে গুলি করে বলে আদালতে স্বীকার করেছে৷'' তিনি জানান, ‘‘হত্যাতাণ্ডে ৭/৮ জনের একটি পেশাদার চক্র জড়িত৷ বাকিদের ধরার চেষ্টা চলছে৷''

তবে হত্যাকাণ্ডের উদ্দেশ্য বা ‘মোটিভ' সম্পর্কে পুলিশ কোনো তথ্য এখানো জানায়নি৷ আর পেশাদার বা ভাড়াটে সন্ত্রাসীদের কারা ভাড়া করেছে, নেপথ্যে কে আছে, তাও জানায়নি পুলিশ৷ পুলিশ কমিশনার ইকবাল বাহার সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে বলেছেন, ‘‘কার নির্দেশে এবং কেন মিতুকে হত্যা করা হয়েছে, তা এখন বলা সম্ভব নয়৷''

এদিকে ঢাকায় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল সোমাবার এক ব্রিফিংয়ে বলেন, ‘‘বাবুল আক্তারের স্ত্রী মাহমুদা খানম মিতুর দুই খুনিকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে৷ এই হত্যার সঙ্গে জড়িত আরও দু-একজন ধরা পড়বে৷''

মন্ত্রী বলেন, ‘‘সন্দেহভাজন দু-একজনকে গ্রেপ্তারের পর সঠিক ব্যক্তিদের ধরা হয়েছে কিনা সে বিষয়ে নিশ্চিত হওয়ার জন্য জিজ্ঞাসাবাদ করতেই বাবুল আক্তারকে গোয়েন্দা দপ্তরে নিয়ে যাওয়া হয়েছিল৷ সেখানে তাদেরকে বাবুল আক্তারের মুখোমুখি করানো হয়৷'' সন্দেহভাজন নতুন কেউ ধরা পড়লে মামলার বাদী বাবুল আক্তারকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য আবারো ডাকা হতে পারে বলে মন্ত্রী জানান৷

প্রসঙ্গত, গত ৫ জুন ছেলেকে স্কুল বাসে তুলে দিতে গিয়ে চট্টগ্রাম নগরীর জিইসি মোড় এলাকায় দুর্বৃত্তদের এলোপাতাড়ি ছুরিকাঘাত ও গুলিতে খুন হন পুলিশ সুপার বাবুল আক্তারের স্ত্রী মাহমুদা খানম মিতু৷ প্রথমে ধারণা করা হয়েছিল, জঙ্গিরা এই হত্যাকাণ্ডের সঙ্গে জড়িত, কারণ, তাঁর স্বামী বাবুল আক্তার বাংলাদেশে জঙ্গিবিরোধী অপারেশনের প্রথম সারির কর্মকর্তাদের একজন৷

জিজ্ঞাসাবাদ শেষে শনিবার বিকেলে বাসায় ফেরার পর থেকে এসপি বাবুল আক্তার সংবাদমাধ্যমের সঙ্গে কথা বলছেন না৷ টেলিফোনও ধরছেন না৷ তিনি এখনো তার শ্বশুরের বাসায়ই অবস্থান করছেন৷ এরপর থেকে তিনি আর বাসার বাইরেও বের হচ্ছেন না৷ বাসার সামনে নিয়মিত আটজন পুলিশ পাহারায় থাকছে৷

শ্বশুর মোশাররফ হোসেন ডয়চে ভেলেকে জানান, ‘‘কোনো নিষেধাজ্ঞা নেই৷ এমনিতেই বাবুল আক্তার সাংবাদিকদের সঙ্গে কথা বলছেন না, বাইরে যাচ্ছেন না৷ আর মিতু হত্যার পর থেকেই পুলিশ পাহারা দেয়া হয়েছে৷''

স্কিপ নেক্সট সেকশন এই বিষয়ে আরো তথ্য

এই বিষয়ে আরো তথ্য