1. কন্টেন্টে যান
  2. মূল মেন্যুতে যান
  3. আরো ডয়চে ভেলে সাইটে যান

মিউনিখ নিরাপত্তা প্রতিবেদন : সংকটময় বিশ্বের জটিল বিশ্লেষণ

১৫ ফেব্রুয়ারি ২০২২

১৮ ফেব্রুয়ারি থেকে শুরু হচ্ছে মিউনিখ সিকিউরিটি কনফারেন্স৷ সম্মেলনটি শুরু হচ্ছে এমন সময়ে যখন বিশ্ব অনেক সংকটের মুখোমুখি৷ সম্মেলনের চেয়ারম্যান ভল্ফগাং ইশিঙ্গার মনে করেন, এমন সংকটময় সময় সাম্প্রতিক সময়ে আর আসেনি৷

https://p.dw.com/p/473iE
ছবি: Isaiah Campbell/US MARINE CORPS/AFP

১৮ ফেব্রুয়ারি থেকে শুরু হচ্ছে মিউনিখ সিকিউরিটি কনফারেন্স৷ নিরাপত্তা বিষয়ক সম্মেলনটি শুরু হচ্ছে এমন সময়ে যখন বিশ্ব অনেক সংকটের মুখোমুখি৷ সম্মেলনের চেয়ারম্যান ভল্ফগাং ইশিঙ্গার মনে করেন, এমন সংকটময় সময় সাম্প্রতিক সময়ে আর আসেনি৷

২০০৮ সাল থেকে মিউনিখ সিকিউরিটি কনফারেন্স (এমএসসি)-র চেয়ারম্যানের দায়িত্বে রয়েছেন সাবেক কূটনীতিক ইশিঙ্গার৷ এমএসসি প্রতিষ্ঠিত হয়েছিল ১৯৬৩ সালে৷ গত ৫৯ বছরে এমএসসি এমন পরিস্থিতির মুখে আরো পড়ে থাকলেও, তার নেতৃত্বের এই ১৪ বছরে যে  পড়েনিনি সে বিষয়ে ইশিঙ্গার প্রায় নিশ্চিত৷ চলতি সময়ে সাধারণভাবে সবচেয়ে বড় দুর্ভাবনা নিশ্চয়ই ইউক্রেন সংকট৷ তবে বিশ্বের সব প্রান্তের মানুষের কাছে এই সংকট সবচেয়ে বড় নিরাপত্তা-হুমকি নয়৷

বর্তমান বিশ্বে নিরাপত্তা নিয়ে দুর্ভাবনা বেড়েছে৷ তাই মিউনিখ নিরাপত্তা প্রতিবেদনের পরিসরও বেড়েছে৷ ২০১৫ সালের প্রতিবেদনের প্রথম সংস্করণটি ছিল ৭২ পৃষ্ঠার, এবার তা বেড়ে দ্বিগুণেরও বেশি হয়েছে৷ ‘এবারের মিউনিখ নিরাপত্তা প্রতিবেদনটি ১৮২ পৃষ্ঠার৷

এবারের প্রতিবেদনটি তৈরি হয়েছে সারা বিশ্বে পরিচালিত এক সমীক্ষার ভিত্তিতে৷ সমীক্ষায় বিভিন্ন দেশের মানুষের কাছে জানতে চাওয়া হয়েছিল, এই মুহূর্তে কোন বিষয়টিকে তাদের কাছে সবচেয়ে বড় নিরাপত্তা-ঝুঁকি বলে মনে হয়? নানা রকমের উত্তর পাওয়া গেছে সেখানে৷ সমীক্ষায় অংশ নেয়া যুক্তরাষ্ট্রের অধিকাংশ মানুষ জানিয়েছেন, তাদের কাছে সবচেয়ে বড় দুশ্চিন্তার নাম ‘সাইবার অ্যাটাক’৷

যুক্তরাষ্ট্রের মানুষ যখন সাইবার-হামলার শঙ্কায় বেশি শঙ্কিত, তখন চীনের বেশির ভাগ মানুষ শঙ্কিত যুক্তরাষ্ট্রকে নিয়ে৷ আবার রাশিয়ার মানুষ কিন্তু যুক্তরাষ্ট্রকে নিয়ে এত মাথা ঘামায় না৷ সমীক্ষা অনুযায়ী, অধিকাংশ রুশ মনে করেন, তাদের সামনে এ মুহূর্তে যে বিষয়টি সবচেয়ে বড় বিপদ হয়ে দাঁড়িয়ে, তা হলো, সমাজে ক্রমশ বেড়ে চলা অসাম্য৷ অন্যদিকে ভারতের বেশির ভাগ মানুষের ভাবনা কিন্তু একেবারে অন্যরকম৷ সাইবার আক্রমণ, যুক্তরাষ্ট্র, ভারতের ‘চিরশত্রু’ পাকিস্তান, সমাজে বেড়ে চলা অসাম্য- এসবের কোনোটিই বড় দুশ্চিন্তা নয় তাদের কাছে৷ ভারতীয়দের কাছে এ মুহূর্তে বড় দুশ্চিন্তা হলো ভয়াবহ পারমাণবিক হামলার শঙ্কা৷

এবারের ১৮২ পৃষ্ঠার প্রতিবেদনে সব বিষয় নিয়েই আলোচনা হয়েছে৷ আফগানিস্তান থেকে তড়িঘড়ি বিদেশি সৈন্য প্রত্যাহার, মালির ক্রমশ খারাপ হতে থাকা নিরাপত্তা পরিস্থিতি, ‘হর্ন অব আফ্রিকা’ অঞ্চলের অস্থিতিশীলতাসহ আরো অনেক বিষয়েরই বিশ্লেষণ রয়েছে এই প্রতিবেদনে৷

যারা থাকছেন, যারা থাকছেন না

৩৫ টি রাষ্ট্রের প্রধান এবং বিভিন্ন দেশের শতাধিক মন্ত্রীর মিউনিখ সম্মেলনে যোগ দেয়ার কথা৷ জাতিসংঘের মহাসচিব আন্তনিও গুতেরেস আসছেন সম্মেলনের অন্যতম বক্তা হিসেবে৷

জার্মানির নতুন সরকারেরও অংশগ্রহণও থাকবে চোখে পড়ার মতো৷  জানা গেছে, নতুন চ্যান্সেলর ওলাফ শলৎস তো মিউনিখে যাবেনই, তার মন্ত্রিসভার কয়েকজন সদস্যও থাকবেন সেখানে৷

ভিআইপি অতিথির তালিকায় আরো থাকবেন ন্যাটো মহাসচিব ইয়েন্স স্টলটেনবার্গ৷

যুক্তরাষ্ট্রেরও বেশ বড় একটি প্রতিনিধিদল থাকবে মিউনিখ সম্মেলনে৷ সেই দলের নেতৃত্বে থাকবেন ভাইস প্রেসিডেন্ট কমলা হ্যারিস৷

চীন জানিয়েছে, তারাও অংশ নেবে, তবে সশরীরে নয়৷ চীনের পররাষ্ট্রমন্ত্রী ভিডিও বার্তা পাঠাবেন বেইজিং থেকে৷

রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুটিনকে সম্মেলনে অংশ নেয়ার জন্য আমন্ত্রণ জানানো হয়েছিল৷  ধারণা করা হচ্ছে, তিনি আসবেন না৷ রুশ পররাষ্ট্রমন্ত্রী সের্গেই লাভরভের মিউনিখে আসার সম্ভাবনাও এখন ক্ষীণ৷

ইশিঙ্গারের অবশ্য আশাবাদী মানুষ হিসেবে সুনাম আছে৷ তাই শেষ মুহূর্তেও তার আশা- এবারের সম্মেলন শুধু রাশিয়া নিয়ে কথা হবে না, হয়ত রাশিয়ার সঙ্গেও কথা হবে৷

মাটিয়াস ফন হাইন/ এসিবি