মিংক থেকে করোনা সংক্রমণ হচ্ছে ডেনমার্কে
৫ নভেম্বর ২০২০বিশ্বের ফ্যাশন দরবারে মিংকের পশমের চাহিদা সব সময়েই বেশি৷ কিন্তু বর্তমানে এই জন্তু ফ্যাশন নয়, করোনা সংকটের কারণে ডেনমার্কের শিরোনামে৷
সাম্প্রতিককালে সরকারের তরফে প্রকাশিত একটি প্রতিবেদন জানাচ্ছে, অনেকটা বেজির মতো দেখতে এই জন্তুটির মধ্যে লক্ষ্য করা গেছে বিশেষ ধরনের জিনগত পরিবর্তন, যার ফলে করোনা ভাইরাসে আক্রান্ত মিংক থেকে সংক্রমিত হচ্ছেন মানুষ৷
এখন পর্যন্ত ১২জন করোনা আক্রান্তের খোঁজ পাওয়া গেছে ডেনমার্কে, যাদের সংক্রমণের উৎস এই প্রাণীটি, বলছে সেই প্রতিবেদন৷ কিন্তু স্বাস্থ্যমন্ত্রী মাগনুস হয়নিকের মত, দেশের ৭৮৩জন করোনা সংক্রমণের অর্ধেকই মিংক-সম্পর্কিত৷
বুধবার ডেনমার্কের প্রধানমন্ত্রী মেটে ফ্রেডেরিকসেন এই প্রতিবেদনের বরাত দিয়ে মিংক সংক্রমণের তথ্যটি জনসমক্ষে তুলে ধরেন৷ শুধু তাই নয়, মিংকের শরীর থেকে পরিবর্তিত রূপের করোনা ভাইরাস যখন মানবশরীরে প্রবেশ করে, তখন তা মোকাবিলা করা অনেক ওষুধের পক্ষে কঠিন হয়ে পড়ে, জানান ফ্রেডেরিকসেন৷
সাংবাদিক সম্মেলনে তিনি বলেন, ‘‘মিংকের শরীরের এই পরিবর্তিত ভাইরাস ভবিষ্যতে করোনার প্রতিষেধকের কার্যকারিতার ক্ষেত্রে বাধা হয়ে দাঁড়াতে পারে৷ এটি খুবই গুরুতর বিষয়৷ গোটা বিশ্বে এই পরিবর্তিত ভাইরাসের প্রভাব ছড়িয়ে পড়তে পারে৷’’
এ সমস্যা মোকাবিলা করতে মেটে ফ্রেডেরিকসেন ডেনমার্কের সমস্ত খামারকে নির্দেশ করেছেন মিংক বাছাই করতে৷ ডেনমার্কের পুলিশ, হোমগার্ডসহ প্রতিরক্ষাবাহিনীর সদস্যরা মিংক বাছাইয়ের কাজে সহায়তা করছেন৷ খাদ্যমন্ত্রী মোগেনস ইয়েনসেন জানিয়েছেন যে, ডেনমার্কে এই মুহূর্তে অন্তত ২০৭টি খামারে ছড়িয়ে পড়েছে সংক্রমণ, যা গত মাস পর্যন্ত ছিল ৪১৷
কত বড় ডেনিশ মিংকের কারবার
ডেনমার্ক বিশ্বের সর্বোচ্চ মিংক পশম প্রস্তুতকর্তা৷ বছরে এক কোটি ৭০ লাখ মিংক পশম তৈরির ক্ষমতা রয়েছে দেশটির৷ দেড় হাজার মিংকপালকের সমবায় সংস্থা ‘কোপেনহাগেন ফার’ থেকেই বিশ্বের ৪০ শতাংশ মিংক পশম আসে, যার বেশিরভাগই বিক্রি হয় চীন ও হংকঙে৷
বর্তমান সংক্রমণের জেরে প্রায় এক কোটি ৫০ লাখ মিংককে সরিয়ে ফেলা হবে খামার থেকে৷ অর্থাৎ, তাদের পশম বাজারে পৌঁছবে না৷ এই প্রক্রিয়ায় সরকারের খরচ হবে মোট পাঁচ বিলিয়ন ডেনিশ ক্রোনার (বাংলাদেশি টাকায় প্রায় ৬৭০০ কোটি)৷ এছাড়া, কর্তৃপক্ষ মিংক পালকদের ক্ষতিপূরণও দেবে বলে জানিয়েছে৷
এসএস/কেএম (এপি, এএফপি, রয়টার্স, ডিপিএ)