মার্টিন লুথার কিং ও তাঁর স্মরণে বাঁধা কিছু সংগীত
১৩ জানুয়ারি ২০১১বিখ্যাত পপ এবং সৌল সংগীত তারকা স্টিভি ওয়ান্ডার'এর বিখ্যাত হিট গান ‘হ্যাপি বার্থডে' সবারই পরিচিত৷ কিন্তু কার উদ্দেশ্যে এই গান সেটা অনেকেরই জানা নেই৷ ১৯৮৬ সালের জানুয়ারি মাসে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে প্রথমবার, বর্ণবাদ বিরোধী নেতা মার্টিন লুথার কিং'এর দূরদর্শিতা ও কৃতিত্বকে স্বীকৃতি দিয়ে পালিত হয় ‘মার্টিন লুথার কিং' স্মৃতি দিবস৷ আর সে উপলক্ষেই স্টিভি ওয়ান্ডার রচনা করেন এই গান৷
মার্টিন লুথার কিং'এর জন্ম ১৯২৯ সালে অ্যামেরিকার অ্যাটলেন্টা শহরে৷ সে সময় এই শহরে কৃষ্ণাঙ্গ ও শ্বেতাঙ্গের বিভাজন ছিল চরম আকারে৷ তথাকথিত জিম ক্রু আইনের আধিনে আফ্রো অ্যামেরিকানদের সামাজিক আধিকার ছিল খুবই সীমাবদ্ধ৷ যেমন, শ্বেতাঙ্গ ব্যাবহৃত স্কুল, গীর্জা বা সাধারণ প্রতিষ্ঠান সমূহে তাঁদের প্রবেশাধিকার ছিল না৷ জ্যাজ সংগীতের অন্যতম পুরোধা লুইজ আর্মস্ট্রং গেয়েছিলেন ‘গো ডাউন মোসেস'৷
১৭ বছর বয়সে অ্যাটলেন্টা ব্যাপটিস্ট গির্জায় সহকারী যাযক হিসেবে কাজ শুরু করেন তিনি৷ তারপর পড়াশোনা করেন দক্ষিণ অ্যামেরিকার এক মাত্র কৃষ্ণাঙ্গ বিশ্ববিদ্যালয় মোরহাউস কলেজে৷ তাঁর আদর্শ ছিলেন অহিংস নেতা মাহাত্মা গান্ধী৷
গোটা অ্যামেরিকা জুড়ে একের পর এক বর্ণবাদ বিরোধী শান্তি আন্দোলন করেছেন লুথার কিং৷ ১৯৬৩ সালে প্রসিডেন্ট জন এফ কেনেডির সিভিল রাইট অ্যাজেন্ডার সমর্থনে ওয়াশিংটনে দু'লক্ষ পঞ্চাশ হাজার মানুষের একটি মিছিলের নেতৃত্ব দেন তিনি৷ ৬০ হাজারেরও বেশি শ্বেতাঙ্গ অংশ নেন এই মিছিলে৷ ‘আই হেভ এ ড্রিম...' এই কথা গুলো দিয়েই বর্ণবাদ বিরোধী আন্দোলনের ইতিহাসে এক উজ্জ্বল তারকা হয়ে আছেন তিনি৷ বিখ্যাত সৌল সংগীত তারকা জেমস ব্রাউনের কণ্ঠে ধ্বনিত হয়েছিল ‘সে লাউড - আই অ্যাম ব্ল্যাক অ্যান্ড আই অ্যাম প্রাউড৷
১৯৬৪ সালে নোবেল শান্তি পুরস্কার পান তিনি৷ কিন্তু শান্তিতে থাকতে পারেননি তিনি৷ ৩০ বারেরও বেশি গ্রেপ্তার করা হয়েছে তাঁকে, জেল খেটেছেন, মৃত্যুর হুমকি পেয়েছেন বর্ণবাদীদের পক্ষ থেকে৷ ১৯৬৮ সালের চার এপ্রিল আততায়ির গুলিতে মৃত্যুর কোলে ঢলে পড়েন বর্ণবাদ বিরোধী ও মানবদরদি মার্টিন লুথার কিং৷ কবরের ফলকে লেখা রয়েছে ‘ধন্যবাদ সর্ব শক্তিমান, শেষ পর্যন্ত আমরা স্বাধীন'৷ গসপেল সংগীত তারকা গ্লেইনা সিজন গেয়েছেন ‘ফ্রি অ্যাট লাস্ট'৷
প্রতিবেদন: মারুফ আহমদ
সম্পাদনা: দেবারতি গুহ