তথ্যচিত্র
৩ মার্চ ২০১৩‘‘এটা একটি ক্ষুদ্র, প্রান্তিক গোষ্ঠীর কাহিনি বলে অনেকের ধারণা৷ কিন্তু বর্তমানে পাঁচ কোটি মার্কিন অধিবাসী ঐ পর্যায়ে পড়েন,'' রয়টার্স সংবাদ সংস্থাকে বলেছেন তথ্যচিত্রটির নির্মাতা লোরি সিলভারবুশ৷ তাদের মধ্যে পুলিশ অফিসার, স্কুলশিক্ষক, খামারচাষী, স্কুলের পড়ুয়া, সকলকেই পাওয়া যাবে৷
কিন্তু এই ভুল কিংবা অস্পষ্ট ধারণা কেন? কারণ হিসেবে সিলভারবুশ ও তাঁর সহ-পরিচালক ক্রিস্টি জেকবসন বলেছেন, মানুষ ক্ষুধা বলতে উন্নয়নশীল দেশগুলির রুগ্ন, ক্ষুধার্ত শিশুদের কথা ভাবতেই অভ্যস্ত৷ সঙ্গে রয়েছে লোকলজ্জা: অনেক মার্কিনি স্বীকার করতে চান না যে, তাঁদের খাবার কেনার সামর্থ নেই৷
আরো মজার কথা হল, অত্যধিক মেদ এবং ক্ষুধা একই ব্যক্তির মধ্যে খুঁজে পাওয়া যেতে পারে৷ তথ্যচিত্রে তার কারণ ব্যাখ্যা করেছেন নিউ ইয়র্ক বিশ্ববিদ্যালয়ের পুষ্টি বিষয়ক অধ্যাপক মারিয়ন নেসলে৷ তিনি দেখিয়েছেন যে, ১৯৮০ সাল যাবৎ কারখানায় প্রক্রিয়াজাত খাবারের দাম কমেছে ৪০ শতাংশ, কিন্তু টাটকা ফল ও শাকসবজির দাম বেড়েছে ঠিক ঐ ৪০ শতাংশ৷ তার ফলে কম আয়ের মানুষজন বস্তুত ‘ক্যানড ফুড' বা টিনের খাবার খেয়ে বেঁচে থাকে, যা আরো ওজন বাড়ায়৷
কাজেই কম আয়ের পরিবারগুলির ছোট ছোট ছেলেমেয়েরা ক্রমেই আরো বেশি মোটা হয়ে পড়ে, কেননা তাদের বাবা-মায়েদের টাটকা ফল বা শাকসবজি কেনার ক্ষমতা নেই৷ এমনকি এ'ধরনের মানুষজনের যেখানে বাস, বিশেষজ্ঞরা সেগুলির নাম দিয়েছেন ‘‘ফুড ডেজার্ট'' বা ‘খাদ্যের মরুভূমি', কেননা এখানে টাটকা, পুষ্টিকর কোনো খাবারই পাওয়া যায় না৷
কেন তাঁরা ‘‘এ প্লেস অ্যাট দ্য টেবল'' অর্থাৎ ‘খাবার টেবিলের অতিথি' নাম দিয়ে এই তথ্যচিত্রটি করলেন, এ' প্রশ্নের জবাবে দুই পরিচালক বলেছেন, তাঁরা মার্কিন বিধায়ক, রাজনীতিকদের সঙ্গে কথা বলে দেখেছেন, বিষয়টির কোনো রাজনৈতিক গুরুত্ব নেই৷ কাজেই উভয় পক্ষের সচেতনতা বৃদ্ধির জন্যই এই ছবি৷
ছবিতে কিছু কিছু সমাধানের প্রস্তাবও দেওয়া হয়েছে: যেমন ফুড স্ট্যাম্প বা সস্তায় রেশন; স্কুলে ছোটদের জন্য বিনামূল্যে খাবার; পুষ্টি সংক্রান্ত পাঠক্রম; খামার ভরতুকির প্রশ্নটি পুনর্বিবেচনা করা; এবং ফেডারাল খাদ্য সাহায্য৷
তথ্যচিত্রের সঙ্গে সঙ্গে সোশ্যাল মিডিয়া ভিত্তিক একটি প্রচার অভিযানও শুরু করা হয়েছে৷
এসি / জেডএইচ (রয়টার্স)