‘পদ্মা সেতুতে অর্থায়ন বাতিল’
৭ জুলাই ২০১৪রবিবার বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা যোগাযোগ মন্ত্রণালয় পরিদর্শনে যান৷ সেখানে তিনি বলেন, ‘‘পদ্মা সেতু নির্মাণ নিয়ে অনেক তোলপাড় হয়ে গেল৷ এটা নিয়ে অন্য উদ্দেশ্য ছিল৷ কোনো কারণ ছাড়া বিশ্বব্যাংকের সাবেক প্রেসিডেন্ট তাঁর শেষ কার্যদিবসে এ দেশের একটি মহল এবং অ্যামেরিকার প্ররোচনায় পদ্মা সেতুর বরাদ্দ বন্ধ করে দেন৷''
তিনি বলেন, ‘‘পদ্মা সেতু নিয়ে দুর্নীতি হয়েছে – বিশ্বব্যাংক এ অভিযোগ করার পর, আমরা চ্যালেঞ্জ করলাম৷ কী দুর্নীতি হয়েছে, তার ‘ডকুমেন্ট' চাইলাম৷ কিন্তু তারা যে কাগজ-পত্র দেখাল, তা ছিল আগের সরকারের আমলের ঢাকা-ময়মনসিংহ চার লেন সড়কের কাজ নিয়ে৷''
শেখ হাসিনা বলেন, ‘‘ওরা অনেক চালাকি করেছে৷ নানা শর্ত জুড়ে দিয়েছে৷ একবার বলছে অমুক অমুককে বাদ দিতে হবে৷ আবার বলছে এঁদের ‘অ্যারেস্ট' করলে অর্থ বরাদ্দ পাওয়া যাবে৷''
তাঁর কথায়, ‘‘বিআরটিসি বাস সার্ভিস বা খুলনা শিপ ইয়ার্ডের মতো অনেক প্রকল্পই বন্ধ করার পরামর্শ দিয়েছিল তারা৷ এমনকি বাংলাদেশের পাটকল বন্ধ করে ভারতকে এই খাতে অর্থায়ন করেছে বিশ্বব্যাংক৷ বিশ্বব্যাংকের অনেক পরামর্শই সরকার গ্রহণ করেনি৷ আর এতে বাংলাদেশের ক্ষতি নয়, বরং লাভ হয়েছে৷''
শেখ হাসিনা জানান, ‘‘অনেক চড়াই-উতরাই পার হয়ে নিজস্ব অর্থায়নে পদ্মা সেতু নির্মাণের সব প্রস্তুতি শেষে এর বাস্তবায়নের কাজ শুরু হয়েছে৷ মূল সেতু নির্মাণে ‘চায়না মেজর ব্রিজ কোম্পানি লিমিটেড'-এর সঙ্গে আমাদের চুক্তি হয়েছে৷ এ কোম্পানিকে কার্যাদেশ দেওয়া হয়েছে৷''
সময়মতো পদ্মা সেতুর নির্মাণকাজ শেষ হবে বলেও জানান প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা৷ সেতু নির্মাণে আর যাতে কোনো বাধা না আসে, সে ব্যাপারে সবাইকে সতর্ক থাকার আহ্বান জানিয়েছেন তিনি৷
প্রধানমন্ত্রী মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তাদের উদ্দেশ্যে বলেন, ‘‘আমরা যে কাজটি শুরু করেছি, তা যেন ভালোভাবে করতে পারি, সে ব্যাপারে নজর রাখতে হবে৷ মুক্তিযুদ্ধ করে স্বাধীনতা অর্জন করতে পারলে একটা ব্রিজ বানাতে কেন পারব না?''
বৈদেশিক মুদ্রার অভাব নেই উল্লেখ করে তিনি বলেন, দেশে এখন রিজার্ভ ২১ বিলিয়ন মার্কিন ডলার৷ তার থেকে এক-দুই বিলিয়ন খরচ করলে সমস্যা হবে না৷''
তিনি বলেন, ‘‘ব্রিজ হওয়ার পর পদ্মার পাড়ে হংকংয়ের মতো শহর নির্মাণ করা হবে, যেখানে একটি আন্তর্জাতিক কনভেনশন সেন্টার তৈরি করা হবে৷ আর ভবিষ্যতে সেখানেই অনুষ্ঠিত হবে আন্তর্জাতিক বাণিজ্যিক মেলা৷''