মার্কাউয়ামাচুকো নিয়ে কৌতূহলের শেষ নেই
২৪ নভেম্বর ২০১১মার্কাউয়ামাচুকো কমপ্লেক্সটি সমুদ্রপৃষ্ঠ থেকে বারো হাজার ফুট উঁচুতে৷ পাহাড়ের চূড়ায় তার অবস্থান৷ ইনকা সভ্যতার আগে এই কমপ্লেক্স তৈরি করা হয়েছে এমন ধারণা করছেন প্রত্নতত্ত্ববিদরা৷ পেরুর প্রত্নতত্ত্বের ভাণ্ডারে মার্কাউয়ামাচুকো হল নতুন এক সংযোগ৷ মাচুপিচু থেকে মার্কাউয়ামাচুকো প্রায় ছয়শো মাইল দূরে অবস্থিত৷
মার্কাউয়ামাচুকো নিয়ে কৌতূহল এখন অনেকের মনে৷ কারা বসবাস করতো এখানে? কবে তৈরি করা হয়েছিল পাথর দিয়ে তৈরি এই কমপ্লেক্স? এর কোন সদুত্তর এখনও জানেননা প্রত্নতত্ত্ববিদরা৷ ধারণা করা হচ্ছে অজানা অনেক তথ্য হয়তো এবার বেরিয়ে আসবে৷
পুরো কমপ্লেক্সটি পাথরের তৈরি৷ চারপাশের দেয়াল প্রায় দশ থেকে ১৫ মিটার পর্যন্ত উঁচু৷ রয়েছে চারকোনা এবং গ্যালারির মত চত্বর৷ এর সঙ্গে রয়েছে উপাসনার জন্য বিশেষ একটি স্থান৷
পেরুর সরকারের সঙ্গে কাজ করছেন প্রত্নতত্ববিদ ক্রিস্টিয়ান ভিসকন্ডে৷ তিনি জানান,‘‘পুরো জায়গাটি দেখে যে কারো একটি দুর্গ মনে হতে পারে৷ মনে হতে পারে কোন ধরণের আক্রমণ থেকে নিজেদের রক্ষা করার জন্যই পাথরের একটি কমপ্লেক্স তৈরি করা হয়েছে৷''
বিংশ শতাব্দীর শুরু থেকেই প্রত্নতত্ববিদরা মার্কাউয়ামাচুকো নিয়ে গবেষণা করছেন৷ তারা জানান, এখানে যারা বসবাস করতো তারা বাজ পাখির মাথার মত মুকুট পডরতো, বিশেষ করে পুরুষরা৷ তা থেকেই কেচুয়া ভাষায় নাম মার্কাউয়ামাচুকো৷ প্রত্নতাত্ত্বিকরা মনে করেন, মার্কাউয়ামাচুকোর অনেকটাই এখনো মাটির নীচে রয়েছে৷ অনেক কিছুই এখনো উদ্ধার করা হয়নি৷
পেরুর সরকার বিপন্ন সাংস্কৃতিক ঐতিহ্যসমৃদ্ধ স্থান রক্ষায় নিয়োজিত সংস্থা গ্লোবাল হেরিটেজ ফান্ডের সহযোগিতায় সংরক্ষণের এক বড় উদ্যোগ গ্রহণ করেছে৷ তারই আওতায় গত বছরের অক্টোবর মাসে মার্কাউয়ামাচুকো কমপ্লেক্স পরিষ্কার করা হয়৷ ফলে তার গৌরবময় চেহারা এখন দেখা সম্ভব হচ্ছে৷ প্রত্নতত্ববিদ ভিসকন্ডে আরো বলেন, ‘‘মার্কাউয়ামাচুকোতে যারা বসবাস করতো তাদের ঐতিহ্য এবং সংস্কৃতি সম্পর্কে আমরা এখনো কিছু জানি না৷ শুধু জানি যে সাড়ে তিনশো থেকে চারশো খ্রিষ্টাব্দের মধ্যে এই কমপ্লেক্স তৈরি করা হয়েছে৷ এখানে যারা বসবাস করতো তারা কোত্থেকে এসেছে বা তারা কোথায় চলে গেছে তাও আমাদের কাছে অজানা৷ হতে পারে কোন এক ধরণের মাহামরিতে আক্রান্ত হয়ে পুরো সম্প্রদায়ই নির্মূল হয়ে গেছে৷''
তবে খুব অল্প সংখ্যক মানুষের হাড় পাওয়া গেছে মার্কাউয়ামাচুকোতে৷ সেগুলো নিয়ে গবেষণা করা হবে৷ ধারণা করা হচ্ছে, আশে পাশেই রয়েছে কোন একটি সমাধিস্থান৷ যদি তা পাওয়া যায় তাহলে হয়তো মার্কাউয়ামাচুকো সম্পর্কে পাওয়া যাবে আরো চমকপ্রদ তথ্য৷
প্রতিবেদন: মারিনা জোয়ারদার
সম্পাদনা: আব্দুল্লাহ আল ফারূক