নেতানিয়াহুর বিতর্কিত বক্তব্য
২৩ অক্টোবর ২০১৫মধ্যপ্রাচ্যের পরিস্থিতি এখন উত্তেজনাপূর্ণ বললেও কম বলা হয়৷ ইসরায়েল ও ফিলিস্তিনিদেরও এক দশা, সেখানেও পরিস্থিতি চরমে উঠছে৷ তরুণ ফিলিস্তিনিরা নির্বিচারে ইসরায়েলিদের উপর আক্রমণ চালাচ্ছে৷ ইসরায়েলি সামরিক বাহিনী তার কঠোরতম জবাব দিচ্ছে, কেননা নাগরিকদের নিরাপত্তা চিরকালই ইসরায়েলের রাজনীতি ও প্রতিরক্ষানীতির ভিত্তিপ্রস্তর৷
গত কয়েক দিনে জার্মান সরকার ও মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী জন কেরি মধ্যপ্রাচ্যে উত্তেজনা কমানোর চেষ্টা করেছেন৷ তবে বার্লিনের প্রচেষ্টা যে সফল হয়েছে, এ'কথা বলা শক্ত৷ বার্লিন সফরের আগেই দেখা গেছে, ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী ঠিক কতোটা নার্ভাস৷ যাত্রার প্রাক্কালে নেতানিয়াহু একটি বক্তৃতায় বলেন যে, চল্লিশের দশকের সূচনায় জেরুসালেমের গ্র্যান্ড মুফতি আমিন আল-হুসেইনি আডল্ফ হিটলারের সঙ্গে সাক্ষাতে হিটলারকে ইহুদি নিধনের প্রেরণা যোগান৷ হিটলার স্বয়ং নাকি ইহুদি হত্যা নয়, ইহুদিদের বিতাড়নের কথাই ভেবেছিলেন - বলেন নেতানিয়াহু৷
দুই ইহুদি বিদ্বেষি
গ্র্যান্ড মুফতি নিঃসন্দেহে ইহুদিবিদ্বেষি ছিলেন৷ অপরদিকে আডল্ফ হিটলার তাঁর ১৯২৫ সালে প্রকাশিত ‘‘মাইন কাম্ফ'' বইতেই নিজের ইহুদি বিদ্বেষের পরিচয় দিয়েছিলেন৷ তিনি পরিকল্পিতভাবে জার্মানি ও ইউরোপের ইহুদিদের নিশ্চিহ্ন করতে চেয়েছিলেন৷ তাঁর ইহুদি নিধন নীতি কার্যকরি করা হয় আউশভিৎস, ট্রেবলিঙ্কা, মাইদানেক ও ব্যার্গেন-বেলজেন'এর মতো নাৎসি বন্দিশিবিরে - বা ওয়ারশ'র ইহুদি ‘ঘেটো'-তে৷ সেজন্য হিটলারের গ্র্যান্ড মুফতির প্রয়োজন পড়েনি৷
ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী স্বভাবতই সে-কথা জানেন৷ কাজেই তিনি এই মারাত্মক তুলনাটি করেছেন অন্য কারণে৷ তাঁর উদ্দেশ্য ছিল, গ্র্যান্ড মুফতি থেকে আব্বাস অবধি ইহুদি বিদ্বেষের একটা চলমান ধারা প্রদর্শন করা, ইসরায়েল যে ধারার সম্মুখীন৷ বহু ইসরায়েলির অনুভূতিও অনুরূপ, যে কারণে তাদের চোখে সরকারের আপোষবিহীন মনোভাব ন্যায্য ও যুক্তিযুক্ত৷ নেতানিয়াহু কিন্তু এই পন্থায় নিজেই উত্তেজনা বাড়াচ্ছেন - এবং শান্তি অথবা কমপক্ষে যুদ্ধবিরতির ক্ষীণতম আশাকে অঙ্কুরেই বিনষ্ট করেছেন৷