চিকিৎসা
৪ নভেম্বর ২০১৫বাংলাদেশেও সম্প্রতি এ ধরণের প্রশিক্ষণ শুরু হয়েছে৷ আন্তর্জাতিক সংস্থা ‘মেন্টাল হেল্থ ফার্স্ট এইড'-এর কার্যক্রম শুরু হয়েছে বাংলাদেশে৷ সেখানকার প্রশিক্ষক ও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের এডুকেশনাল অ্যান্ড কাউন্সেলিং সাইকোলজি বিভাগের প্রভাষক উম্মে কাউসার ডয়চে ভেলেকে বলেন, যখন কোনো মানুষের মধ্যে মানসিক সমস্যা দেখা দেয় তখন তাঁর আশেপাশের মানুষদের অনেক বড় দায়িত্ব নিতে হয়৷ ‘‘যে মানুষগুলো মানসিকভাবে অসুস্থ তাঁদের কথা তাঁদের অবস্থান থেকেই বোঝার চেষ্টা করতে হবে৷ তাঁদের বোঝাতে হবে যে, আপনি তাঁদের কথাগুলোকে গুরুত্ব দিচ্ছেন৷ এই আচরণ, এই মনোভাবটা অনেকবেশি গুরুত্বপূর্ণ৷'' তিনি বলেন, বাংলাদেশে এমন রোগীদের ‘স্টিগমাটাইজ' বা কলঙ্কিত করার একটা প্রবণতা থাকে, যা ঠিক নয়৷
কাউসার বলেন, ‘‘যখন একটা মানুষের মধ্যে মানসিক সমস্যা দেখা দেয় তখন তার মধ্যে কিছু আচরণগত পরিবর্তন লক্ষ্য করা যায় এবং সেটা অনেকদিন ধরেই হয়৷ সবচেয়ে বেশি যে পার্থক্যটা দেখা যায় সেটা মেজাজের ক্ষেত্রে৷'' একজন মানুষকে অনেকদিন ধরে মন খারাপ করে থাকতে দেখলে কিংবা একজন মানুষকে সাধারণত যে মেজাজে দেখা যায় তাতে পরিবর্তন দেখলে বুঝতে হবে তার মধ্যে মানসিক সমস্যা দেখা দিয়েছে৷
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের এই শিক্ষক বলেন, শিশুদের ক্ষেত্রে তাদের বাবা-মাকে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করতে হবে৷ নিজেদের শিশুকে অন্য শিশুর সঙ্গে কীরকম আচরণ করতে হবে তা শেখাতে হবে৷ এক্ষেত্রে স্কুলগুলোতে মনোবিজ্ঞানী নিয়োগ দেয়ার উপরও গুরুত্ব আরোপ করেন তিনি৷
উল্লেখ্য, জাতীয় মানসিক স্বাস্থ্য ইন্সটিটিউটের সহযোগী অধ্যাপক ডা. তাজুল ইসলাম ডয়চে ভেলেকে জানান, ‘‘বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার সঙ্গে যৌথ উদ্যোগে ২০১১ সালে করা এক জরিপে দেখা গেছে, বাংলাদেশের মোট জনসংখ্যার ১৮ বছরের নীচে যাদের বয়স তাদের মধ্যে শতকরা ১৮.১ ভাগ, আর ১৮ বছরের উপরে যাদের বয়স তাদের মধ্যে ১৬.১ ভাগ কোনো না কোনোভাবে মানসিক রোগী৷ অর্থাৎ বাংলাদেশে সাড়ে তিনকোটিরও বেশি মানসিক রোগী রয়েছে৷’’ তবে গুরুতর মানসিক রোগ বিবেচনা করলে সংখ্যাটা মোট জনসংখ্যার শতকরা ৭ ভাগ হবে বলে জানিয়েছেন তিনি৷
সাক্ষাৎকার: জাহিদুল হক
সম্পাদনা: আরাফাতুল ইসলাম
কোনো পরামর্শ থাকলে নীচে মন্তব্যের ঘরে জানাতে পারেন...