ইসরায়েলের পাশে যুক্তরাষ্ট্র!
২০ জুন ২০১৮জাতিসংঘে নিযুক্ত যুক্তরাষ্ট্রের প্রতিনিধি নিকি হ্যালি এই ঘোষণা দেন৷ সঙ্গে ছিলেন মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী মাইক পম্পেও৷ মানবাধিকার পরিষদের সদস্যদের ‘ভণ্ডামি' ও ইসরায়েলের বিরুদ্ধে পরিষদের ‘পক্ষপাতমূলক আচরণ'এর অভিযোগ এনে এই সিদ্ধান্ত নিয়েছে যুক্তরাষ্ট্র৷
জাতিসংঘের মানবাধিকার বিষয়ক হাইকমিশনার জায়েদ রা'দ আল-হুসেইন সোমবার যুক্তরাষ্ট্রের সমালোচনা করে বক্তব্য রেখেছিলেন৷ মেক্সিকো থেকে যুক্তরাষ্ট্রে পৌঁছানো অভিবাসনপ্রত্যাশী পরিবারের সন্তানদের তাদের মা-বাবার কাছ থেকে পৃথক করার ঘটনা ‘খুব অন্যায়' বলে মন্তব্য করেন তিনি৷
হাইকমিশনারের এই বক্তব্যের পরদিন মঙ্গলবার মানবাধিকার পরিষদ থেকে সরে আসার ঘোষণা দেয় যুক্তরাষ্ট্র৷ তবে হাইকমিশনারের বক্তব্যের সঙ্গে সদস্যপদ প্রত্যাহারের সম্পর্ক নেই বলে জানিয়েছেন হ্যালি ও পম্পেও৷ বরং একবছর ধরে যুক্তরাষ্ট্র মানবাধিকার পরিষদে সংস্কার আনার যে চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছিল, তা সম্ভব নয় মনে করে যুক্তরাষ্ট্র এই সিদ্ধান্ত নিয়েছে বলে জানান তাঁরা৷ হ্যালি বলেন, ‘‘মানবাধিকার পরিষদ অনেকদিন ধরেই মানবাধিকার লঙ্ঘনকারীদের নিরাপত্তা দিয়ে আসছে৷ দুঃখের কথা হলো, আমরা যে সংস্কারের দাবি জানিয়ে আসছিলাম, তাতে কোনো অগ্রগতি দেখা যায়নি৷''
পরিষদ ইসরায়েলের বিরুদ্ধে যে ধারাবাহিকভাবে পক্ষপাতমূলক আচরণ করে আসছে, সেটা ‘খুব অন্যায়' বলে মন্তব্য করেন হ্যালি৷ এছাড়া পরিষদ ভেনেজুয়েলা,
কিউবার মতো দেশের তেমন সমালোচনা করেনি বলেও অভিযোগ তাঁর৷
পররাষ্ট্রমন্ত্রী মাইক পম্পেও বলেন, প্রতিষ্ঠার পর থেকে মানবাধিকার পরিষদ ইসরায়েলের বিরুদ্ধে যত প্রস্তাবনা এনেছে, তার সংখ্যা বিশ্বের অন্যসব দেশের বিরুদ্ধে আনা প্রস্তাবনার চেয়ে বেশি৷
উল্লেখ্য, জাতিসংঘের মানবাধিকার পরিষদের জন্ম ২০০৬ সালে৷ তৎকালীন মার্কিন প্রেসিডেন্ট জর্জ বুশ তখন এই পরিষদে যোগ দেননি৷ পরে বারাক ওবামা প্রেসিডেন্ট হওয়ার পর ২০০৯ সালে পরিষদে যোগ দেয় যুক্তরাষ্ট্র৷
প্রতিক্রিয়া
জাতিসংঘের মহাসচিব আন্তোনিও গুতেরেস যুক্তরাষ্ট্রের সিদ্ধান্তে দুঃখ প্রকাশ করেছেন৷
ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেনইয়ামিন নেতানিয়াহু যুক্তরাষ্ট্রের সিদ্ধান্তকে স্বাগত জানিয়েছেন৷ মানবাধিকার পরিষদকে তিনি ‘ইসরায়েলবিরোধী সংস্থা' বলে আখ্যায়িত করেছেন৷
হিউম্যান রাইটস ওয়াচ যুক্তরাষ্ট্রের সমালোচনা করে বলেছে, উত্তর কোরিয়া,সিরিয়া, মিয়ানমার, দক্ষিণ সুদানের মতো দেশের ক্ষেত্রে মানবাধিকার পরিষদ গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেছে, কিন্তু মনে হচ্ছে ট্রাম্প শুধু ইসরায়েলকে রক্ষায় আগ্রহী৷
ইউরোপীয় ইউনিয়নের পররাষ্ট্র বিষয়ক প্রধান ফেডেরিকা মোঘেরিনি মনে করছেন, মানবাধিকার পরিষদ থেকে সরে আসায় আন্তর্জাতিক রাজনীতিতে যুক্তরাষ্ট্রের ভূমিকা ক্ষতিগ্রস্ত হতে পারে৷
জেডএইচ/এসিবি (এএফপি, ডিপিএ)