অবশেষে ত্রাণ পৌঁছালো মাদায়ায়
১২ জানুয়ারি ২০১৬জাতিসংঘের আন্ডার-সেক্রেটারি-জেনারেল ফর হিউম্যানিটারিয়ান অ্যাফেয়ার্স স্টিফেন ও'ব্রায়েন আশা করছেন যে, উত্তরোত্তর ত্রাণ সরবরাহ পাঠানো সম্ভব হবে – অর্থাৎ এটা কোনো একক ঘটনা থাকবে না৷
সিরিয়ায় প্রায় ৪৫ লক্ষ মানুষ অবরুদ্ধ হয়ে, কিংবা যুদ্ধের কারণে প্রত্যন্ত প্রদেশে আটকা পড়েছেন৷ অনেকক্ষেত্রে তাদের যেমন শহর কিংবা গ্রাম ছেড়ে যেতে দেওয়া হচ্ছে না, তেমন খাদ্য, ঔষধপত্র বা জ্বালানি ইত্যাদি আসাও ব্যাহত বা বিঘ্নিত হচ্ছে৷
রাজধানী দামেস্কের ১৫ মাইল দূরে অবস্থিত পাহাড়ি শহর মাদায়াতে গত অক্টোবর মাসের পর কোনো সরবরাহ পৌঁছায়নি৷ চল্লিশ হাজার অনশনক্লিষ্ট মানুষ সোমবার দেখেছেন, ট্রাকে করে কিভাবে ত্রাণসাহায্য পৌঁছালো৷
সিরিয়ার এই বিস্মৃত জনপদগুলিতে যে নীরব ট্র্যাজেডি ঘটে চলেছে, সে সম্পর্কে দুনিয়াকে সচকিত করে এ ধরনের ছবি৷
এবার যে ত্রাণ পৌঁছেছে, তার কল্যাণে মাদায়ার মানুষজনের প্রায় চল্লিশ দিন ক্ষুধা মিটবে, বলে আশা করা হচ্ছে৷ মাদায়া বিদ্রেহীদের হাতে; তাকে ঘিরে রয়েছে আসাদ-সমর্থক যোদ্ধারা এবং হেজবোল্লা সশ্স্ত্র গোষ্ঠীর যোদ্ধারা৷ উত্তরে ফুয়া ও কফারিয়া, এই দু'টি শিয়া অধ্যুষিত শহর অবরোধ করে রয়েছে বিদ্রোহীরা৷ আটকে পড়া বাসিন্দাদের পরিস্থিতি সর্বত্রই এক: মাদায়ার মানুষজন যখন পাতা সেদ্ধ করে নুন দিয়ে খাচ্ছেন, তখন শত শত মাইল উত্তরে ফুয়া আর কফারিয়ার বাসিন্দারা জীবনধারণের জন্য ঘাস পর্যন্ত খাচ্ছেন, বলে খবর পাওয়া গেছে৷ সাধে কি মোহাম্মদ এল-বারাদেই টুইট করেছেন: ‘মাদায়া আর অন্যত্র রক্তস্রোত ও অনশন; আমরা কি অম্লানমুখে মানবিক মূল্যবোধের কথা আওড়াতে পারি? আমাদের ‘সভ্য' জগতে কোথাও একটা পচন ধরেছে৷'
মাদায়া গত জুলাই মাস যাবৎ অবরুদ্ধ৷ ডক্টর্স উইদাউট বর্ডার্স ত্রাণ সংগঠন মাদায়ায় একটি স্বাস্থ্যকেন্দ্র চালিয়ে থাকে৷ সেখানে নাকি পয়লা ডিসেম্বর যাবৎ অনশনে মৃত্যুর ২৩টি ঘটনা ঘটেছে, তার মধ্যে ছ'টি শিশু ও পাঁচজন বৃদ্ধ-বৃদ্ধা৷ জাতিসংঘের স্টিফেন ও'ব্রায়েন সম্ভবত ডক্টর্স উইদাউট বর্ডার্স-এর সূত্রেই অবিলম্বে মাদায়া থেকে ৪০০ জন রুগ্ন, অনশনক্লিষ্ট মানুষকে স্থানান্তরিত করার প্রয়োজনের কথা বলেছেন৷ অপরদিকে সংগঠনটি তাদের টুইটে যে চিত্র তুলে ধরেছে, তা সত্যিই মর্মস্পর্শী: ‘মাদায়ার চিকিৎসা-কর্মীরা গত এক সপ্তাহ ধরে কিছু খাননি৷ ক্লান্ত, দুর্বল রোগীদের লাইন বেড়েই চলেছে – সবাই মরীয়া৷'
এসি/ডিজি (এপি, এএফপি, ডিপিএ)
আগামী ২৫শে জানুয়ারি জাতিসংঘের সিরিয়া বৈঠক৷ সাফল্যের সম্ভাবনা দেখছেন কি? লিখুন নীচের ঘরে৷