1. কন্টেন্টে যান
  2. মূল মেন্যুতে যান
  3. আরো ডয়চে ভেলে সাইটে যান

মাঠ দখলের লড়াইয়ে আরো সংঘাতের আশঙ্কা

২১ জুলাই ২০২৩

দেশের বড় দুই দল যার যার এক দফা নিয়ে এখন বলতে গেলে পুরোপুরি মাঠে নেমে গেছে৷ ফলে এরই মধ্যে সংঘাত-সংঘর্ষ আর মামলা শুরু হয়ে গেছে৷ বিশ্লেষকরা বলছেন, যদি সংলাপের মাধ্যমে সমাধান না করে রাজপথে ফয়সালা হয়, তার ফল হবে ভয়াবহ৷

https://p.dw.com/p/4UEV3
Bangladesch Ausschreitungen Khagrachhari BNP
ফাইল ফটো৷ছবি: Shahriar Younus

১২ জুলাই ঢাকায় সমাবেশের মাধ্যমে বিএনপি এক দফার কর্মসূচি দেয়৷ তাদের এক দফা হলো সরকারের পতন৷ সরকারের পদত্যাগের মধ্য দিয়ে তত্ত্বাবধায়ক সরকারের অধীনে নির্বাচন৷ একই দিনে শাসক দল আওয়ামী লীগও সমাবেশের মধ্য দিয়ে এক দফা ঘোষণা করে৷ তাদের এক দফা হলো শেখ হাসিনার অধীনেই নির্বাচন৷ এরপর ১৮ জুলাই বিএনপির পদযাত্রা আর আওয়ামী লীগের শান্তি ও উন্নয়ন শোভা যাত্রার দিনে ঢাকাসহ দেশের বিভিন্ন এলাকায় সংঘাত ও সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে৷ কোনোটা ছিল আওয়ামী লীগ বনাম বিএনপি৷ আবার কোনোটা ছিল ত্রিমুখী৷ সেসব জায়গায় দুই দল এবং পুলিশ সংঘাত সংঘর্ষে জড়িয়ে পড়ে৷ লক্ষীপুরে বিএনপির সহযোগী সংগঠন কৃষক দলের একজন সদস্য এই সংঘাতে নিহত হন৷ পরের দিনও বিএনপির পদযাত্রা এবং আওয়ামী লীগের শান্তি ও উন্নয়ন শোভাযাত্রার কর্মসূচিতে সংঘর্ষ হয়৷

শনিবার ঢাকায় তারুণ্যের সবাবেশ করবে বিএনপি সোহরাওয়ার্দী উদ্যাানে৷ আওয়ামীলীগের সহযোগী সংগঠন যুবলীগও সারাদেশে তারুণ্যের জয়যাত্রা নামে কর্মসূচি পালন করছে৷

বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর এরই মধ্যে বলেছেন, সরকার পদত্যাগ না করলে রাজপথেই ফয়সালা হবে৷ আর প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, রাজনৈতিক কর্মসূচিতে বাধা নেই, তবে কোনো ধ্বংসাত্মক কাজ করলে কোনো রকম ছাড় দেয়া হবে না৷

ধ্বংসাত্মক কাজ না করতেই আমাদের নেতৃবৃন্দকে গুলি করে হত্যা করা হচ্ছে: সৈয়দ এমরান সালেহ প্রিন্স

বিএনপি এখন টানা কর্মসূচির মাধ্যমে মাঠের দখল শক্ত করতে চায়৷ আর সেজন্য তারা শুধু বিএনপি নয়, তাদের সহযোগী সংগঠনগুলোর মাধ্যমে কর্মসূচিতে নতুনত্ব আনার চেষ্টা করছে৷ সমমনা ৩৭টি দলকে মাঠে আরো সক্রিয় করতে চাইছে৷ সমমনা দল আরো বাড়াতে চাইছে৷

অন্যকে আওয়ামী লীগও আগামী নির্বাচন পর্যন্ত টানা কর্মসূচির মাধ্যমে মাঠে থাকবে৷ তাদের টাগেট এই কর্মসূচির মাধ্যমে নির্বাচন পর্যন্ত মাঠে থেকে এই সরকারের অধীনে নির্বাচন সম্পন্ন করা৷ আর বিএনপির টার্গেট এই সরকারের অধীনে কোনো নির্বাচন হতে না দেয়া৷

বিদেশিদের তৎপরতায় এখন পর্যন্তু দুই দলকে সংলাপে রাজি করানো যাচ্ছে না৷ দুই দলের অনঢ় অবস্থানের কারণে সংলাাপের আশা  আপাতত করা যাচ্ছে না৷ তারা  যুক্তরাষ্ট্র, যুক্তরাজ্য যাদের প্রতিনিধির সঙ্গেই কথা বলুন না কেন, যার যার এক দফাই তুলে ধরছেন৷

আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক এস এস কামাল হোসেন বলেন, ‘‘আমরা মাঠে নেমেছি৷ নির্বাচন পর্যন্ত মাঠে থাকবো৷ শেখ হাসিনার অধীনে নির্বাচন করে তারপর আমরা ঘরে উঠবো৷ বিএনপি চাইলেও কোনো ধ্বংসাত্মক কাজ করতে পারবে না৷ দেশের মানুষ তাদের প্রতিরোধ করবে৷’’

তার কথা, ‘‘২০১৩ সাল থেকে বিএনপি রাজপথে আছে৷ অনেক কিছু করার চেষ্টা করেছে৷ বেগম খালেদা জিয়া ঘরে চলে গেছে৷ মির্জা ফখরুলও ঘরে চলে যাবে৷ মির্জা ফখরুল তারেক জিয়ার নির্দেশে একটা অনির্বাচিত সরকার ক্ষমতায় আনার চেষ্টা করছে৷ তারা দেশের বিরুদ্ধে, দেশের সংবিধানের বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র করছে৷ এর জবাব জনগণ দেবে৷’’

এর জবাবে বিএনপির সাংগঠনিক সম্পাদক সৈয়দ এমরান সালেহ প্রিন্স বলেন, ‘‘আমরা ধ্বংসাত্মক কাজ না করতেই তো আমাদের নেতৃবৃন্দকে গুলি করে হত্যা করা হচ্ছে৷ গ্রেপ্তার করছে, মামলা দিচ্ছে৷ কেউ বাড়িতে থাকতে পারছে না৷ এগুলো স্বৈরাচারী ও ফ্যাসিবাদী সরকারের কাজ৷ আমরা এই দমন-পীড়ণ উপেক্ষা করেই আন্দোলনের মাঠে থাকবো৷ আমাদের জয় হবেই৷’’

শেখ হাসিনার অধীনে নির্বাচন করে আমরা ঘরে উঠবো: এস এম কামাল হোসেন

তার কথা, ‘‘সরকার এখন নানা ধরনের হুমকি দিচ্ছে৷ কিন্তু এই হুমকিতে কোনো কাজ হবে না৷ সরকারকে বিদায় নিতেই হবে৷’’

এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, ‘‘এই আন্দোলনে যদি রক্ত ঝরে, সাধারণ মানুষের ক্ষতি হয় তার দায় সরকারকেই নিতে হবে৷ প্রধানমন্ত্রীকেই নিতে হবে৷ ওবায়দুল কাদেরকে নিতে হবে৷ এই দায় আওয়ামী লীগের৷ তার জনগণের দাবিকে উপেক্ষা করে ক্ষমতা  ধরে আছে৷ জনগণ হলো রাষ্ট্রের মালিক৷ তাদের মালিকানা কেড়ে নেয়া হয়েছে৷’’

রাজনৈতিক বিশ্লেষক ও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের আইন বিভাগের অধ্যাপক শেখ হাফিজুর রহমান কার্জন বলেন,‘‘রাজপথে সমাধান অনেক ক্ষতি ডেকে আনে৷ আমরা অতীতে তা দেখেছি৷ তাই প্রকাশ্যে না হলেও পর্দার আড়লে আলাপ-আলোচনার মাধ্যমে একটা সমাধান হওয়া প্রয়োজন৷৷’’

তিনি বলেন, ‘‘এর নানা ধরনের পরিণতি হতে পারে৷ ২০০৬ সালের মতো একটা ভিন্ন ধরনের সরকারও চলে আসতে পারে৷  আবার ১৯৯৬ সালে আওয়ামী লীগের আন্দোলনের মুখেও একটি পরিস্থিতি আমরা দেখেছি৷ সংঘাত আরো বাড়বে, নয়তো অন্য কোনো শক্তি সুযোগ নেবে৷ আগে আমরা তো এরকমই হতে দেখেছি৷’’

তবে তিনি মনে করেন, ‘‘বাংলাদেশের রাজনীতির একটা গ্লোবালাইজেশন হয়েছে৷ অতীতে এমন কখনো দেখা যায়নি৷ এখন বাইরের দেশগুলো কতটা রোল প্লে করে তা দেখার আছে৷ আমরা তো সব কিছু জানি না৷ আর রাজনৈতিক নেতারা সবকিছু বলেন না৷ বাইরে যা বলেন ভিতরে হয়তো অন্যকিছু হচ্ছে৷ এখন দেখা যাক শেষ পর্যন্ত কী হয়৷’’

স্কিপ নেক্সট সেকশন এই বিষয়ে আরো তথ্য

এই বিষয়ে আরো তথ্য

আরো সংবাদ দেখান