1. কন্টেন্টে যান
  2. মূল মেন্যুতে যান
  3. আরো ডয়চে ভেলে সাইটে যান

মা-মেয়ের জীবন : বাংলাদেশে নারীর বাস্তবতা ও ইউরোপের অভিজ্ঞতা

তাহসিনা ইসলাম
২৬ অক্টোবর ২০২৪

আমি আর আমার সাড়ে তিন বছর বয়সি মেয়ে চেক প্রজাতন্ত্রের প্রাগ শহর থেকে জার্মানির বন শহরের দিকে ফিরছিলাম। ভোর তখন ৪টা পেরিয়ে গেছে, ট্রেনে আমার পাশে আমার ছোট্ট মেয়ে ঘুমিয়ে আছে।

https://p.dw.com/p/4mFzX
সাগর তীরে মা ও শিশু
ইউরোপে রাষ্ট্র ব্যবস্থা এমনভাবে তৈরি, যা নারীদের নিরাপত্তা এবং কাজের পরিবেশকে গুরুত্ব দেয়ছবি: Image Source/IMAGO

ট্রেন চলছে, আমি কফিতে চুমুক দিয়ে মেয়ের মুখের দিকে তাকিয়ে আছি। নির্ভাবনার ঘুমে আমার মেয়ে। রাতের অন্ধকার সত্ত্বেও, ট্রেনের ভেতরের উজ্জ্বল আলো আর নিরিবিলি পরিবেশে আমার মনে এক প্রকার স্বস্তি বিরাজ করছে। ইউরোপের ট্রেন ভ্রমণ মানেই সবসময়ই অসাধারণ—আরামদায়ক সিট, পরিচ্ছন্ন পরিবেশ, আর সবচেয়ে বড় ব্যাপার হলো নিরাপত্তা।

আমি বাংলাদেশে বড় হয়েছি, জার্মানিতে আছি এক বছরের বেশি হলো। তাই বাংলাদেশের বাইরে ব্যতিক্রম কোনো সুবিধা, আতিথেয়তা পেলে স্বাভাবিকভাবেই একটা তুলনা করার মানসিকতা কাজ করে। কফিতে চুমুক দিয়ে আমি ভাবছিলাম অনেক কিছু, মনের ভেতর হাজারো প্রশ্ন ঘুরপাক খাচ্ছিল। ভাবছিলাম, যদি বাংলাদেশ এমন হতো, রাত ৪-৫টায় একজন মা তার বাচ্চাকে নিয়ে একা ভ্রমণ করতে পারতো কি? সেখানে নারীদের জন্য রাতের ভ্রমণ কি এতটা নিরাপদ? এসব দেশের মতো কি বাংলাদেশের মেয়েরা রাতে বাইরে কোন কাজে আটকে গেলে নিরাপত্তার ভাবনায় এমন স্বাচ্ছন্দ্য বোধ করে? এমন সব প্রশ্নের উদ্রেক আর সেগুলো ভাবনার সঙ্গে মিলিয়ে যাচ্ছে।

তখনই মনে হলো এজন্যই সমাজবিজ্ঞানীরা অনেক আগেই সমাজকে সুন্দর করার জন্য অনেক উপায় বলে দিয়েছিলেন। এর মধ্যে থেকে আমি সামাজিক চুক্তি তত্ত্বের উদাহরন টানতে পারি। এই তত্ত্বের মূল ভিত্তি হলো, নাগরিকরা কিছু স্বাধীনতা ছেড়ে দিয়ে রাষ্ট্রের কাছে সুরক্ষা ও নিরাপত্তার নিশ্চয়তা পায়। বিশেষ করে উন্নত দেশগুলোতে, যেমন জার্মানিতে এই চুক্তি অত্যন্ত দৃঢ়ভাবে কার্যকর।

এক্ষেত্রে সম্প্রতি আমার একটি ব্যক্তিগত অভিজ্ঞতা এই ধারণার স্পষ্ট উদাহরণ হিসেবে ধরা যেতে পারে। আমি ভিসা অফিসে কাজ করার সময় এক কর্মকর্তা নিজেই নিচে নেমে এসে আমার সব কাগজপত্র প্রসেস করে দেন, কারণ, সেই সময় ওই ভবনের এলিভেটর কাজ করছিলা না। আর আমার ছোট মেয়ে তখন স্ট্রোলারে ঘুমিয়ে ছিল, তাকে নিয়ে আমার পক্ষে সিঁড়ি বেয়ে ওঠা কষ্টকর ছিল। তবে ওই কর্মকর্তার এভাবে আমাকে সাহায্য করার ঘটনাটি প্রমাণ করে যে, রাষ্ট্র তার নাগরিকদের জীবনের সুবিধা ও নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে সবসময় তৎপর।

সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমগুলোতে বাংলাদেশে এখন ‘দ্বিতীয় স্বাধীনতা' এই ধরনের চর্চা প্রতিনিয়ত চোখে পড়ে। কিন্তু আমরা আসলে কি নারী হিসেবে আদৌ সেই স্বাধীনতা পেয়েছি? অনেক দিন ধরে আমি দেশের বাইরে আছি, তাই ৫ আগস্টের পর দেশে ফিরে যেতে খুব ইচ্ছা করছে। কিন্তু এই স্বাধীনতার ধারণা মাঝে মাঝে আমাকে ভয় ধরায়।

এই তো কিছুদিন আগে, নারীর পোশাক নিয়ে স্বাধীনতা প্রসঙ্গে নিয়ে আমার একটি লেখা সামাজিক মাধ্যমে পোস্ট করার পর নানা ধরনের নেতিবাচক মন্তব্য আসতে শুরু করে। মনে হচ্ছিল, মন্তব্যকারীরা যদি আমাকে সামনে পেতো, তাহলে কী না করতো! অথচ, বাংলাদেশের সংবিধানের ৩২ অনুচ্ছেদে জীবনের সুরক্ষা এবং ব্যক্তিগত সম্পত্তির রক্ষার কথা বলা আছে। কিন্তু প্রকৃতপক্ষে, এই নিশ্চয়তা বাংলাদেশে কতটা কার্যকর?

নিজ দেশের বাইরে এসে আমি বুঝতে পারলাম, আমাদের দেশের নারীরা অনেক ধরনের বৈষম্যের সম্মুখীন হন। কর্মক্ষেত্রে সমান বেতন না পাওয়া, মাতৃত্বকালীন সুবিধার অভাব,মাতৃত্ব পরবর্তী সুবিধার অভাব এবং যৌন হয়রানি—এগুলো অনেক নারীর জন্য বড় বাধা হয়ে দাঁড়ায়।

অপরপক্ষে জার্মানিতে নারীদের জন্য সবক্ষেত্রে সমর্থন এবং ইনক্লুশন রয়েছে। যেমন, জার্মানির সরকার নারীদের কর্মক্ষেত্রে সমান বেতন নিশ্চিত করার আইন প্রণয়ন করেছে। মাতৃত্বকালীন ছুটি ও সুবিধা সম্পর্কেও তাদের নীতি রয়েছে, যা নারীদের কাজের সঙ্গে পরিবার পরিচালনা করতেও সহায়তা করে। এখানে নারীরা কর্মক্ষেত্রে স্বাধীনভাবে কাজ করতে পারেন এবং যৌন হয়রানির বিরুদ্ধে কঠোর আইন রয়েছে, যা তাদের জন্য রক্ষাকবচ হিসেবে কাজ করে। এইসব বিষয় আমাকে ভাবায়, যদি আমাদের দেশে নারীদের জন্যও এমন একটি সাপোর্টিভ পরিবেশ তৈরি করা যেত, তাহলে আমাদের দেশের নারীরা কতটা স্বনির্ভর এবং আত্মবিশ্বাসী হয়ে উঠতে পারতো।

বাংলাদেশে ইউরোপের মতো সুবিধা না পেলেও অন্যভাবে ভাবা যেতে পারে। সাধারণত ইউরোপের দেশগুলোতে একটি ধারণা নিয়ে রাষ্ট্র চালানো হয়। সেটি হচ্ছে ‘ওয়েলফেয়ার স্টেট' বা 'কল্যাণমূলক রাষ্ট্র' ধারণা। এই ধারণার অর্থে বোঝানো হয় যে, রাষ্ট্রের কাজ হলো জনগণের মৌলিক অধিকার, যেমন স্বাস্থ্য, শিক্ষা এবং নিরাপত্তা নিশ্চিত করা৷ জার্মানির মতো উন্নত দেশে, সরকার নাগরিকদের নিরাপত্তার জন্য যথেষ্ট ব্যবস্থা গ্রহণ করে। এখানকার রাষ্ট্র ব্যবস্থা এমনভাবে তৈরি, যা নারীদের নিরাপত্তা এবং কাজের পরিবেশকে গুরুত্ব দেয়। নারীরা যেন স্বাচ্ছন্দ্যের সঙ্গে চলাফেরা করতে পারে, সেটির নিশ্চয়তা দেয়। কিন্তু আমাদের দেশে অনেক পরিবারে নারীদের ভূমিকা এখনো কেবলমাত্র ঘরবন্দী এবং সন্তানের যত্ন নেওয়ার মধ্যেই সীমাবদ্ধ রাখা হয়। স্বামীর বা পরিবারের অন্য সদস্যদের সিদ্ধান্তের ওপর নির্ভর করতে হয়। স্বাধীনভাবে কোনো সিদ্ধান্ত নেওয়া তাদের পক্ষে কঠিন হয়। আমার যখন জার্মানি আসা নিশ্চিত হয়, তখন আমাকেও এই একই পথের পথিক হতে হয়েছে। আমাকে যে বাঁধা দেওয়া হয়েছিল, এমন না, তবে স্বাধীনভাবে চিন্তার জায়গাকে বারবার রুদ্ধ করার অনুভূতি একটু হলেও পেয়েছি। জার্মানিতে আমার যাত্রা ডাড (DAAD) বা জার্মান অ্যাকাডেমিক এক্সচেঞ্জ বৃত্তির মাধ্যমে। এত আলোচনা বা ভূমিকা দিয়েছি শুধু এই বৃত্তির মাধ্যমে এখানে এসে এসব দেশের স্বাধীনতা বা মৌলিক জায়গাগুলোর স্বাদ নেওয়ার অভিজ্ঞতা জানাতে।  ডাড সার্ভিসের এই বৃত্তি আমাকে শুধু অ্যাকাডেমিক ও আর্থিকভাবে নয়, বরং মানসিক ও সামাজিকভাবেও ভিন্ন অনুভূতি ও সহায়তা দিয়েছে। জার্মানিতে আসার পর সবকিছু একদম নতুন ছিল। নতুন পরিবেশ, নতুন ভাষা—সবকিছু মোকাবিলা করতে আমার পাশে ছিল ডাড। তারা শুধু পড়াশোনা নয়, জীবনের অন্যান্য ক্ষেত্রেও আমাকে সমর্থন দিয়ে যাচ্ছে। ডাড শুধু একজন স্কলারের সব খরচই বহন করে না, বরং স্কলারের পরিবারের সদস্যদের জন্যও ভাতার ব্যবস্থা করে। এর সাথে যদি বাড়িভাড়া বেশি হয়, সেটার খরচও তারা দেয়, যাতে পড়াশোনায় কোনো বাধা না আসে। ডাডের ট্র্যাভেল গ্র্যান্ট এবং রিসার্চ গ্র্যান্টও সবকিছু সহজ করে তোলে। পড়াশোনার পাশাপাশি আমি এখন ডয়চে ভেলেতে কাজ করছি। আর এই যে পড়াশোনা আর কর্মজীবন একই সঙ্গে চালানোর যে জটিলতা, সেটি আমার খুব কমই পীড়া দেয়। ডয়চে ভেলে এমনভাবে সাজানো, যেখানে মা-বাবাদের জন্য কর্ম পরিবেশ যেন অনুকূলে থাকে। এরই ফলস্বরূপ এখানে প্যারেন্ট-কিড রুমের ব্যবস্থা রয়েছে, কাজেই কাজের সময় মেয়ে যখন খেলায় ব্যস্ত থাকে, তখন আমি মানসিক চাপমুক্ত হয়ে কাজ করতে পারি। শুধু এখানেই সীমাবদ্ধ না; আমার নিজ বিভাগ ছাড়াও মেয়ে সে অন্য বিভাগের সহকর্মীদের কাছেও যায় এবং সবাই তাকে খুব উষ্ণভাবে স্বাগত জানায়। সে নির্দ্বিধায় অন্যদের কাছে যায় এবং তাদের সঙ্গে খেলাধুলা করে। এই ধরনের সহায়ক পরিবেশ সত্যিই অভাবনীয়। অন্যান্য দেশের মতো জার্মানির সমাজেও পারস্পরিক সহযোগিতার একটি সংস্কৃতি রয়েছে, যা অনেক ক্ষেত্রে বিদেশিদের জন্য একটি উপভোগ্য অভিজ্ঞতা প্রমাণ হয়ে থাকে- এটিকে আমি ‘কমিউনিটারি থিওরি'-র অধীনেও ফেলতে পারি, যা মূলত বলে যে একটি সমাজে সহানুভূতি এবং পারস্পরিক দায়িত্বের গুরুত্ব অপরিসীম।

এটি আমি দেখেছি যখন আমার ৭৫ বছর বয়সি বাড়িওয়ালী আমার মেয়ের সাথে খেলেন। তিনি ইংরেজির পাশাপাশি জার্মান ভাষায়ও কথা বলেন, যার ফলে আমার মেয়ে এখন জার্মান বোঝে। এছাড়া, যখন আমি পরীক্ষার জন্য পড়ি, তখন তিনি আমার মেয়েকে দেখাশোনা করেন, যাতে আমি শান্তিতে পড়াশোনা করতে পারি। এটির মাধ্যমে আদতে তিনি শুধু একজন মা-কে সাহায্যই করছেন না, বরং একটি শক্তিশালী সমাজের ভিত্তিও গড়ে তুলছেন, যেখানে সকলের মধ্যে সহযোগিতা বিদ্যমান থাকবে। জার্মানরা সাধারণত জানে, একজন মায়ের জন্য সাপোর্টিভ পরিবেশ কতটা গুরুত্বপূর্ণ।আমার মতে, এটি সমাজে ‘কমিউনিটি স্পিরিট'-এরও একটি প্রতিফলন, যা একটি ইতিবাচক পরিবেশ বজায় রাখতে সহায়তা করে।

ঠিক একইরকম পরিবেশ পেয়েছি আমার অ্যাকাডেমিক ক্ষেত্রেও। আর যদিও জার্মানির ইতিবাচক দিকের সংখ্যা বেশি , তবে কোনো দেশই পুরোপুরি নিখুঁত নয়। বর্তমান সময়ে জার্মানিতে কিন্ডারগার্টেন কর্মী সংকট রয়েছে, যা অনেক অভিভাবকের জন্য সমস্যার কারণ। আর এই পরিস্থিতিতে আমার মেয়ে প্রায় নিয়মিতভাবে আমার লেকচারে আসে। আমার বিভাগের পরিচালক এবং সকল অধ্যাপক নিশ্চিত করেছেন যে, যাদের সন্তান আছে, তাদের জন্য লেকাচারে আসা যেন সহজ হয়। তারা সবাই আমার মেয়েকে আন্তরিকভাবে গ্রহণ করেছেন। তাই যখন আমি দেখি, আমার মেয়ে আমার শিক্ষকদের সঙ্গে কথা বলছে, খেলছে, তাদের সাথে জার্মান ভাষায় কথা বলছে, আমার মনে হয়, আমি যেন এই দেশেও একটি পরিবার খুঁজে পেয়েছি আর আমার একা চলার সাহসের কারণ হয় আমার মেয়ের হাসি এবং তার নতুন বন্ধুত্বগুলো। আর এরই সাথে এটি আমাকে মনে করিয়ে দেয়, বাচ্চাদের জন্য নিরাপদ এবং সহায়ক পরিবেশ তৈরি করতে আমাদের সকলেরই কিছু না কিছু দায়িত্ব রয়েছে। বাংলাদেশের প্রেক্ষাপট: বাংলাদেশে সিঙ্গেল মায়ের জন্য এমন সুবিধা স্বপ্নের মতো। ৩২ অনুচ্ছেদে নিরাপত্তার কথা বলা হলেও, বাস্তবতায় নিরাপত্তার অভাব ঘরে-বাইরে সবখানে। নারীর জন্য নিরাপদ পরিবেশ ও সুযোগ নিশ্চিত করা হলে, তারাও আত্মবিশ্বাসী হয়ে উঠতে পারবে। জার্মানির কল্যাণমূলক রাষ্ট্রব্যবস্থা সিঙ্গেল মায়েদের জন্য আদর্শ। এখানে প্রতিদিনের জীবনে এবং কর্মক্ষেত্রে সহায়তা পেয়ে আমি অভিভূত। যদি বাংলাদেশেও এমন নিরাপদ ও সমর্থনমূলক পরিবেশ তৈরি করা যায়, তবে সেটি হবে এক বিশাল অগ্রগতি। এই অভিজ্ঞতার মাধ্যমে আমি শিখেছি, নিরাপত্তা, সহায়তা এবং সহযোগিতা জীবনের গুরুত্বপূর্ণ অংশ। আমি কখনো চাই না এমন কোনো তুলনা করতে, যেখানে আমার দেশ ছোট হয়। ক্লাসে বা আড্ডায় সব সময় সব ইস্যুতেই দেশের ইতিবাচক দিকগুলো আলোচনায় নিয়ে আসি। তবে যখন বুঝি আমার দেশ অনেক কিছুতেই পিছিয়ে আছে আর সেগুলো বলা দরকার, তখন লিখতে ইচ্ছা হয়। নারীর পোশাক, নারীর ব্যবহার, সামাজিকতা, নারীর স্বাধীনতা -এসব বিষয় আমাকে ভাবিয়ে তোলে। আমি দেখেছি, বিগত বছরগুলোতে বাংলাদেশে নারীরা শিক্ষা, কর্মসংস্থান, এবং রাজনৈতিক অংশগ্রহণে অনেক অগ্রগতি অর্জন করেছে। কিন্তু এখনো পিতৃতান্ত্রিক সমাজ ব্যবস্থা, ধর্মীয় প্রভাব এবং সামাজিক দৃষ্টিভঙ্গির কারণে তারা নিজের চিন্তার, নিরাপত্তার জায়গায় নানা রকম বাধার সম্মুখীন হচ্ছে। সমাজের একটি বড় অংশ এখনো নারীর স্বাধীনতা নিয়ে রক্ষণশীল দৃষ্টিভঙ্গি পোষণ করে। নারীদের পোশাক, চলাফেরা এবং জীবনের বিভিন্ন দিক নিয়ে সামাজিক চাপ এবং সমালোচনা দেখা যায়, যা নারীর স্বাধীনতাকে সীমিত করে।

অবশ্য সাম্প্রতিক সময়ে, তালেবান আফগানিস্তানে নারীদের শিক্ষা নিষিদ্ধ করার মধ্য দিয়ে নারী ক্ষমতায়নের প্রক্রিয়াকে বড়সড় ধাক্কা দিয়েছে। এবং এটি মানবাধিকার লঙ্ঘনের একটি সুস্পষ্ট দৃষ্টান্ত। তালেবান কী করে এবং তাদের শাসন ব্যবস্থা কিভাবে কার্যকর হয়, তা নিয়েও সাধারণ মানুষের সচেতনতা বেড়েছে। আসলে, অনেকেই জানেন যে, তালেবানের নিয়ন্ত্রণে থাকে কিছু শক্তিশালী আন্তর্জাতিক গোষ্ঠী, যারা তাদের কর্মকাণ্ডের পেছনে রয়েছে, তবে সেটা নিয়ে ভিন্ন বিতর্কে যাওয়া যেতে পারে। আপাতত মূল আলোচনা হলো, নারী স্বাধীনতা কখনোই নারীশিক্ষাকে পাশ কাটিয়ে গিয়ে নিশ্চিত করা সম্ভব নয়। আমি এমনটা চাই না যে, বাংলাদেশ জার্মানি হয়ে যাক। তবে বাংলাদেশে নারীরা বিভিন্ন স্তরে যে বাধার মুখোমুখি হচ্ছে, যা তাদের স্বাভাবিক জীবনে প্রভাব ফেলছে- সেই জায়গা থেকে বের হয়ে আসুক। শিক্ষিত ও অর্থনৈতিকভাবে স্বনির্ভর হওয়ার জন্য নারীরা সংগ্রাম করছে। সরকার ও সমাজ যেন সেইদিকে নজর দেয়। আর পরিবর্তন না হলে এই বাধাগুলো অতিক্রম করা কঠিন হবে। আইন এবং সমাজ উভয় স্তরেই নারীর স্বাধীনতা এবং নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে কাজ করা প্রয়োজন।

DW Akademie Bangladesch Tahsina Islam
তাহসিনা ইসলাম তাহসিনা ইসলাম
স্কিপ নেক্সট সেকশন এই বিষয়ে আরো তথ্য

এই বিষয়ে আরো তথ্য