মহামারির পর আবার শুরু স্পেনের ষাঁড়দৌড়
দুই বছর মহামারির কারণে বন্ধ থাকার পর স্পেনের পাম্পলোনায় আবার শুরু হয়েছে ঐতিহ্যবাহী ষাঁড়দৌড় উৎসব৷ বিতর্কিত এই উৎসবে ষাঁড়ের সামনে দৌঁড়াতে গিয়ে আহতও হয়েছেন অনেকে৷
হাজারো পর্যটকের উপস্থিতি
২০২০ এবং ২০২১ সালে করোনা মহামারির কারণে উৎসব বাতিল করা হয়৷ ফলে এবারের উৎসবকে ঘিরে ছিল ব্যাপক আগ্রহ৷ বিশ্বের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে হাজার হাজার দর্শণার্থী এই ঐতিহ্যবাহী আয়োজনে যোগ দিতে জড়ো হন স্পেনের শহর পাম্পলোনাতে৷
ঐতিহ্য, খ্যাতি
কয়েক শতক ধরে স্প্যানিশ শহরটিতে এই আয়োজন করা হয়ে আসছে৷ কিন্তু বিশ্বজুড়ে এর খ্যাতি ছড়িয়ে পড়ে ঔপন্যাসিক আর্নেস্ট হেমিংওয়ের হাত ধরে৷ তার ‘দ্য সান অলসো রাইজেস’ উপন্যাসে এই উৎসবের নানা আয়োজনের পটভূমি তুলে ধরা হয়৷ এরপরই মূলত স্বচক্ষে উৎসবটি দেখার জন্য দলে দলে মানুষ আসতে শুরু করেন শহরটিতে৷
নয় দিনের আয়োজন
সান ফারমিন নামের এই উৎসব শুরু হয়েছে ৬ জুলাই৷ ১৪ জুলাই পর্যন্ত প্রতিদিন স্থানীয় সময় সকাল ৮টায় শুরু হবে ষাঁড়ের দৌড়৷ তবে বাকি সারাদিনও থাকেছে উৎসবকে ঘিরে শহরজুড়ে মেলা, সাংস্কৃতিক আয়োজন ও পার্টির ব্যবস্থা৷
আধা মাইলের দৌড়
ষাঁড়ের সামনে দৌড়ানোর পথটুকু অবশ্য খুব বেশি নয়৷ মাত্র ৮০০ মিটার বা আধা মাইলের কাছাকাছি৷ কিন্তু এই ছোট্ট যাত্রার অংশটুকুও বেশ ঝুঁকিপূর্ণ৷ কারণ শহরের রাস্তাগুলো বেশ সরু৷ বিশেষ করে শহরের পুরাতন অংশে এই আয়োজন করায় সময়মতো ষাঁড়ের শিং বাঁচিয়ে সময়মতো সরে যেতে পারাটা বেশ কসরতের ব্যাপার৷
আহত বেশ কয়েকজন
প্রতি বছরই এই উৎসবে মানুষ আহত হওয়ার ঘটনা ঘটে৷ এবার অবশ্য এখনও পর্যন্ত কেউ ষাঁড়ের পায়ের তলায় পড়েননি৷ কিন্তু ভিড়ের ধাক্কায় এখ মার্কিন দর্শণার্থীর হাত ভেঙে গেছে৷ আরো পাঁচ জনকে অন্য নানা অসুস্থতায় ভর্তি করা হয়েছে হাসপাতালে৷ আহতদের মধ্যে রয়েছে ১৬ বছরের এক কিশোরীও৷ সবশেষ ২০১৯ সালে ৩৯ জন আহত হয়েছিলেন এই উৎসবে, এদের মধ্যে তিন জন পড়েছিলেন ষাঁড়ের পায়ের তলায়৷
ষাঁড়ের ক্ষিপ্রতা
যে ষাঁড়গুলো এই দৌড়ে অংশ নেয়, সেগুলোকে লড়াইয়ের উদ্দেশ্যেই বড় করা হয়৷ এসব ষাঁড়ের জন্য রয়েছে সারা বছর বিশেষ খাবার এবং যত্নআত্তির ব্যবস্থা৷
ষাঁড়ের শেষ পরিণতি
মোট আটটি দৌড় সাধারণত মাত্র তিন থেকে পাঁচ মিনিট স্থায়ী হয়৷ এরপর তাদের বুলরিংয়ে জড়ো করা হয়৷ বিকেলে অনুষ্ঠিত হয় ষাঁড়ের লড়াই৷ এবং এরপর তাদের জবাই করা হয়৷
উৎসব নিয়ে বিতর্ক
প্রতিবারই উৎসবের বিরুদ্ধে প্রাণী অধিকার কর্মীরা প্রতিবাদ জানিয়ে থাকেন৷ তাদের অভিযোগ, এমন আয়োজনের মাধ্যমে পশুর প্রতি মানুষের নৃশংসতা প্রকাশ পায়৷ এবারও ষাঁড়দৌড়ের ভেন্যুর আশেপাশে অনেককে ব্যানার প্ল্যাকার্ড নিয়ে প্রতিবাদ করতে দেখা গেছে৷ অংশগ্রহণকারী মানুষদের জন্যও এই উৎসব বেশ বিপজ্জনক৷ গত কয়েক বছরে অন্তত ১৬ জন মারা গেছেন এই উৎসবে৷