মহাকাশযানে চড়েই চলে যেতে পারবেন দূরের কোনো দেশে
৫ জুলাই ২০০৯পদার্থবিজ্ঞানী স্টিফেন হকিংস অপেক্ষায় আছেন৷ সাবেক ফর্মুলা ওয়ান ড্রাইভার নিকি লডাও দিন গুণছেন৷ দু'জনেরই স্বপ্ন মহাকাশযাত্রা৷ এ স্বপ্ন সত্যি হবে, কারণ, তাদের মতো আরো কিছু আগ্রহী মানুষের কাছ থেকে ৪০ মিলিয়ন ডলার সংগ্রহ করেছে ভার্জিন গ্যালাকটিক৷ যারা টাকা দিয়েছেন তাঁদের নিয়ে আগামী দু'বছরের মধ্যেই মহাকাশযাত্রার পরিকল্পনা করছে রিচার্ড ব্র্যানসনের ভার্জিন গ্রুপের এই অঙ্গ সংগঠন৷ ভার্জিন গ্যালাকটিকের পরিচালক উইল হোয়াইটহর্ন জানিয়েছেন, এর বাইরে ৩০০ লোক জনপ্রতি ২ লাখ ডলার করে দিয়ে মহাকাশযানে চড়ে ভ্রমণের আগ্রহ প্রকাশ করেছেন৷ তাদের বেশির ভাগই মনে করেন, এমন ভ্রমণের আয়োজন বাণিজ্যিকভাবেও সফল হবে৷
ইতিমধ্যে পরীক্ষামূলক কিছু ফ্লাইট পরিচালনা শুরু করেছে ভার্জিন গ্যালাকটিক৷তারা আশা করছে, শিগগিরই বিমান চলাচল কর্তৃপক্ষ তাদের লাইসেন্স দিয়ে দেবে এবং তা পেয়ে গেলে সাধারণ যাত্রীদের নিয়ে দূরপথে যাত্রা শুরু করায় আর কোনো বাধা থাকবে না৷ তার মানে, তখন উড়োজাহাজের পরিবর্তে মহাকাশযানে চড়েই বেরিয়ে পড়া যাবে বিদেশ ভ্রমণে৷ যাদের আর্থিক সঙ্গতি আছে, তাদের জন্য এ এক লোভনীয় সুযোগ৷ উইল হোয়াইটহর্ন এক সাক্ষাৎকারে বলেছেন, মহাকাশযানের যাত্রীরা একরকম চোখের পলকেই পৌঁছে যাবেন গন্তব্যে৷ ব্রিটেন থেকে অস্ট্রেলিয়া যেতে লাগবে মাত্র ৩০ মিনিট, ভাবা যায়!
ভার্জিন গ্যালাকটিক মনে করছে, আগামী কুড়ি বছরের মধ্যেই অভাবনীয় এ ঘটনাটি ঘটবে৷ সে আশা নিয়ে কাজেও নেমে পড়েছে তারা৷ স্টিফেন হকিংসদের নিয়ে মহাকাশযাত্রার ভাবনাটি সেই পরিকল্পনা বাস্তবায়নেরই প্রথম ধাপ৷
মহাকাশযানকে বেসরকারি পর্যায়ে বাণিজ্যিক ভিত্তিতে পরিচালনার পরিকল্পনা আরো কোনো সংস্থাও হয়তো করছে, তবে ভার্জিন গ্যালাকটিক মনে করে, আসল কাজটি তারাই আগে করে দেখাবে৷ এমন মনে করার যথেষ্ট কারণও আছে৷ এরই মধ্যে বড় বড় কিছু বাণিজ্যিক প্রতিষ্ঠান ভার্জিন গ্যালাকটিকের অংশীদার হতে চেয়েছে৷ তা দেখে উইল হোয়াইটহর্নও আশাবাদী, বলছেন, এখন যারা মহাকাশযানে চড়াকে প্রথম বিবেচনায় রাখতে পারছেন না, মহাকাশ থেকে পৃথিবীটা দেখা যাবে তা ভাবলে তাদের দৃষ্টিভঙ্গি বদলে যেতে পারে৷ তাছাড়া এ পর্যন্ত মহাকাশে গিয়েছেন মাত্র ৫০০ মানুষ৷ তাঁদের প্রত্যেকের পেছনে গড়ে ৫০ থেকে ১০০ মিলিয়ন ডলার খরচ হয়েছে৷ আপাতত যে মহাকাশযাত্রার কথা ভাবা হচ্ছে তাতে জনপ্রতি খরচটা তো অনেক কম হবে৷
প্রতিবেদক : আশীষ চক্রবর্ত্তী, সম্পাদনা : আবদুস সাত্তার