1. কন্টেন্টে যান
  2. মূল মেন্যুতে যান
  3. আরো ডয়চে ভেলে সাইটে যান

কঠিন কাজ

আন্দ্রে ডিমেডেইরশ কস্টা / এসি৯ নভেম্বর ২০১৩

জার্মান মহাকাশচারী রাইনহোল্ড এভাল্ড এক রুশ-জার্মান অভিযানে অংশ নিয়েছিলেন৷ তাঁর বিস্তারিত অভিজ্ঞতার নিরিখে এই কঠিন প্রক্রিয়ার একটা ঝলক পেতে পারেন সাধারণ মানুষ৷

https://p.dw.com/p/1AEA1
ESA astronaut Luca Parmitano, from Italy, during EVA training at ESA's Neutral Buoyancy Facility at the European Astronaut Centre, in Cologne, Germany, 2 September 2010. This course teaches ESA astronauts basic Extravehicular Activity (EVA, or 'spacewalk') concepts and skills, such as tethering to the International Space Station, the use of special EVA tools, communicating with an EVA crewmate and with the control room and how to keep full situational awareness in a complex and challenging environment.
ছবি: ESA/H. Rueb, 2010

পৃথিবী থেকে আকাশ দেখাটা যতটা ইন্টারেস্টিং, আকাশ থেকে পৃথিবী দেখা তার চেয়ে অনেক বেশি ইন্টারেস্টিং৷ যেন ঝলমল করছে – বিশেষ করে রাইনহোল্ড এভাল্ড-এর চোখে৷ রাইনহোল্ড ১৯৯৭ সালে একটি জার্মান-রুশ অভিযানে নভোচারী ছিলেন৷ ইএসএ-র নভোচারী রাইনহোল্ড এভাল্ড বলেন, ‘‘কক্ষপথে পৌঁছনোর কিছু পরেই আমি পোর্টহোল দিয়ে দেখতে পাচ্ছিলাম, কী আশ্চর্য সুন্দর দৃশ্য! মেঘ আর পানি, কেননা পৃথিবীর অধিকাংশই হল মেঘ আর পানি৷ অন্তত মাটির ৪০০ কিলোমিটার ওপর থেকে দেখলে৷''

সাত বছর ধরে রাইনহোল্ড তাঁর অভিযানের প্রস্তুতি নিয়েছিলেন৷ বিশেষ করে মহাকাশে মাধ্যাকর্ষণ না থাকায় শরীরটাকে অভ্যস্ত করতে হয়৷ এছাড়া মহাকাশে নানা পরীক্ষা-নিরীক্ষা শিখতে হয়৷

নভোচারীদের প্রশিক্ষণের ঠিক এই অংশটাই চলে কোলোনে জার্মান এয়ারোস্পেস প্রতিষ্ঠান ডিএলআর-এ৷ ‘স্কিন বি' এক্সপেরিমেন্টটিতে ভূপৃষ্ঠে নভোচারীর ত্বকের আর্দ্রতা মেপে দেখা হয়৷ মহাকাশযানে নভোচারী স্বয়ং তাঁর ত্বকের আর্দ্রতা মেপে দেখেন – একবার দু'বার নয়, সাতবার৷ একটি যন্ত্র তার খুঁটিনাটি ভিডিও হিসেবে দেখাতেও পারে৷

বিজ্ঞানীরা জানতে চান, ত্বকের উপর মহাকাশযাত্রার কী প্রভাব পড়ে৷ ইতিমধ্যেই জানা গেছে, ত্বক মহাকাশে খুব তাড়াতাড়ি বুড়িয়ে যায়, অন্যদিকে রোগ প্রতিরোধের ক্ষমতা কমে যায়৷

আরো একটি এক্সপেরিমেন্টের মাধ্যমে শরীরে রোগপ্রতিরোধ ক্ষমতা কোন পর্যায়ে আছে, তা পরীক্ষা করা হয়৷ সে জন্য পৃথিবী থেকেই বিভিন্ন কোষসমষ্টি মহাকাশে পাঠানো হয়৷ এছাড়া ইনজেকশনের সিরিঞ্জ, যা দিয়ে নভোচারীরা নিজেরাই নিজেদের রক্তের নমুনা নিতে পারেন৷ নমুনাগুলো আবার আধারে পোরা হয়, তারপর পুরোটা এই ইনকিউবেটরে ঢোকানো হয়৷ এভাবে পৃথিবীতে বসা বিজ্ঞানীরা নমুনাগুলো সরাসরি বিশ্লেষণ করতে পারেন৷

এ সবই এখন আলেক্সান্ডার গ্যার্স্ট-কে শিখতে হবে, কেননা তিনি তাঁর প্রথম মহাকাশযাত্রার জন্য প্রস্তুত হচ্ছেন৷ শক্ত প্রশিক্ষণ, জটিল পরীক্ষা-নিরীক্ষা, এ সবে তাঁর কিছু আসে যায় না৷ তাঁর কাছে সবচেয়ে সমস্যাকর ছিল৷ তিনি বলেন, ‘‘প্রশিক্ষণের সবচেয়ে শক্ত কাজ ছিল, তিনমাসের মধ্যে রুশ ভাষা শেখা৷ সেটা আমার খুবই কঠিন মনে হয়েছিল৷''

এছাড়া আলেক্সান্ডার গ্যার্স্ট-কে মহাকাশযানের প্রতিটি অংশ জানতে হয়েছে, চিনতে হয়েছে – বিশেষ করে, সেগুলো কীভাবে কাজ করে৷ নভোচারীদের যাতে বাড়ির জন্য মন কেমন না করে, সেজন্য তারা ব্যক্তিগত কিছু জিনিসপত্র সঙ্গে নিতে পারেন৷ তিনি বলেন, ‘‘আমাদের খুব বেশি জায়গা নেই৷ জুতোর বাক্সর সাইজের একটি ছোট ব্যাগ, তাতে আমাদের ব্যক্তিগত জিনিসপত্র রাখতে পারি৷ তার অধিকাংশই বোধহয় এমন হবে, যাতে আমার পৃথিবীর কথা মনে পড়ে: বন্ধুদের, বাড়ির লোকেদের ছবি, আর স্বভাবতই আমার মিউজিক, যা আমার কাছে খুবই জরুরি৷ ওপরে একটা এমপি-থ্রি প্লেয়ার আছে কিনা৷ কাজেই আমি আমার সব মিউজিক একটা হার্ড ডিস্ক ভরে ওপরে নিয়ে যাব৷''

২০১৪ সালের মে মাসে আলেক্সান্ডার গ্যার্স্ট আকাশে উঠবেন, মহাকাশে৷ কিছু কিছু নভোচারীর সেজন্য বছর দশেকের প্রশিক্ষণ নিতে হয়েছে৷ নভোচারীদের তাতেও আপত্তি নেই৷ আপত্তি কেন? তাতেই তো তাদের আনন্দ: মহাকাশ সম্পর্কে জানা, সেটা তাদের ব্যক্তিগত মিশন, ব্যক্তিগত অভিযান৷