‘মমতার অসহযোগিতায় ছিটমহল বিনিময় সম্ভব নয়'
১২ এপ্রিল ২০১২ডয়চে ভেলেকে দেয়া একান্ত সাক্ষাৎকারে তিনি বলেন, ‘‘ছিটমহল বিনিময়ের লক্ষ্যে ১৯৭৪ সালে ইন্দিরা-মুজিব যে চুক্তি সই করেছিলেন তা আজও বাস্তবায়ন হয় নি৷ কারণ সেই চুক্তিকে বাংলাদেশ সংসদে পাশ করলেও ভারতে এখনো সেটাকে রেটিফাই করা হয় নি৷''
ছিটমহল বিনিময় প্রসঙ্গে কিছুদিন আগেও উদ্যোগ নিয়েছিলেন ভারতের প্রধানমন্ত্রী ড. মনমোহন সিং এবং বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা৷ কিন্তু মমতা বন্দোপাধ্যায়ের সহযোগিতা না পাওয়ায় তাদের সেই উদ্যোগ বাস্তব রূপ লাভ করে নি বলে মনে করেন ড. ইমতিয়াজ৷
ড. ইমতিয়াজ আহমেদ বলেন, ‘‘ভারতের কেন্দ্রীয় সরকার মমতার উপরে অনেকখানি নির্ভরশীল৷ কিন্তু মমতার অনাগ্রহের কারণে এই চুক্তি ঝুলে গেছে৷''
ছিটমহল হস্তান্তর নিয়ে বার বার উদ্যোগ নিয়েও সফল না হবার ফলে দুই দেশের সম্পর্কে এর নেতিবাচক প্রভাব পড়তে পারে বলে মনে করেন তিনি৷ বিশেষ করে, ভবিষ্যতে অন্য কোনো চুক্তির ক্ষেত্রে ভারতের প্রতি বাংলাদেশের অবিশ্বাস তৈরি হবার আশঙ্কাও থাকতে পারে বলে মনে করেন ড. ইমতিয়াজ৷
বাংলাদেশে রয়েছে ভারতের ১১১টি ছিটমহল৷ আর বাংলাদেশের ৫১টি ছিটমহল রয়েছে ভারতীয় ভূখন্ডে৷
১৯৭৪ সালে স্বাক্ষরিত ইন্দিরা-মুজিব চুক্তি অনুযায়ী, ছিটমহলগুলো হস্তান্তর হবার কথা৷ কিন্তু ভারতীয় সংসদে এ সংক্রান্ত সিদ্ধান্ত পাশ না হওয়ায়, ছিটমহল বিনিময় আজও ঝুলে আছে৷ ফলে, মানবেতর জীবনযাপন করছে ছিটমহলের লাখ লাখ মানুষ৷
ছিটমহল বিনিময় সহ আরো তিন দফা দাবিতে গত ১৮ই মার্চ থেকে একযোগে আন্দোলনে শুরু করেছে বাংলাদেশ ও ভারতের ছিটমহলবাসীরা৷
বাংলাদেশ-ভারত ছিটমহল বিনিময় সমন্বয় কমিটির উদ্যোগে পঞ্চগড়-ঢাকা মহাসড়কের পাশে বোদা উপজেলার ভারতীয় পুটিমারি ছিটমহলে অস্থায়ী মঞ্চ তৈরি করে, ১১১টি ভারতীয় ছিটমহলের নেতা-কর্মীরা অনির্দিষ্টকালের জন্য অনশনে নামেন৷
অনশনের ২৪তম দিনে তাদের কাছে বিশেষ দূত পাঠিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা৷ খুব দ্রুতই ছিটমহল বিনিময়ের কাজ শুরু করা হবে আশ্বাস দিয়ে আন্দোলনকারীদের অনশন ভাঙিয়েছেন প্রধানমন্ত্রীর পাঠানো দূত সাংসদ ফরিদা আক্তার হীরা৷
প্রতিবেদন: আফরোজা সোমা
সম্পাদনা: দেবারতি গুহ