মঙ্গলগ্রহে তাহলে কি প্রাণ নেই?
২৩ সেপ্টেম্বর ২০১৩২০১২ সালের আগস্ট মাসে নাসার মার্স রোভার মঙ্গলগ্রহে নেমেছিল৷ পৃথিবীর সঙ্গে সেই গ্রহের মিল কতটা, সেটা পরীক্ষা করাই ছিল এর মূল উদ্দেশ্য৷ শুধু আজ নয়, অতীতেও কোনো মিল ছিল কি না, সেই প্রশ্নের উত্তর খোঁজাও জরুরি৷ কারণ এর মধ্যেই লুকিয়ে রয়েছে প্রাণের সম্ভাবনার চাবিকাঠি৷
গত দশকে পৃথিবী থেকে টেলিস্কোপের মাধ্যমে ও মঙ্গলগ্রহে যান পাঠিয়ে সেখানকার বায়ুমণ্ডল বিশ্লেষণ করে বিজ্ঞানীদের ধারণা হয়েছিল, যে সেখানে মিথেন গ্যাস রয়েছে৷ ফলে অনুমান করা হয়েছিল, মঙ্গলগ্রহে হয় কোনো জৈবিক অথবা ভূ-তাত্ত্বিক কার্যকলাপ চলছে৷ দিনের বেলায় সূর্যের আলোয় এই গ্যাস ভেঙে যায়৷ কিন্তু পৃথিবীর বায়ুমণ্ডলে প্রায় ৩০০ বছর ধরে থেকে যায় এই গ্যাস৷ মঙ্গলগ্রহের ক্ষেত্রে সেই মেয়াদ ২০০ বছর বলে ধরা হয়েছিলো৷ ২০০৩ সালের মার্চ মাসে মঙ্গলগ্রহে একটি মেঘের মধ্যেই ১৯,০০০ টন মিথেনের খোঁজ পাওয়া গিয়েছিল৷
গত প্রায় ৮ মাস ধরে ‘কিউরিয়সিটি' মঙ্গলগ্রহের বায়ুমণ্ডল পরীক্ষা করে দেখেছে, যে কয়েক বছরের মধ্যেই মিথেন উধাও হয়ে যাচ্ছে বলে মনে হচ্ছে৷ ফলে দেখা যাচ্ছে, বিজ্ঞানীরা এর আগে মঙ্গলগ্রহের বায়ুমণ্ডলে ৬ গুণ বেশি মিথেন আশা করেছিলেন৷
এখন প্রশ্ন হলো, ‘কিউরিয়সিটি'-র পরিমাপই কি নিখুঁত? নাকি ভুলের অবকাশ রয়েছে? বিজ্ঞানীদের ধারণা, কোনো গ্রহের ভূ-পৃষ্ঠ থেকে মিথেন দ্রুত গোটা বায়ুমণ্ডলেই ছড়িয়ে পড়ার কথা৷ অতএব স্থানভেদে পরিমাপে পার্থক্য থাকা উচিত নয়৷ নাসার বিজ্ঞানী ক্রিস্টোফর ওয়েবস্টার মনে করেন, ‘কিউরিয়সিটি' যেখানে অবতরণ করেছে, সেখান থেকে পরিমাপ নিলে তাতে ভুলের সম্ভাবনা পুরোপুরি উড়িয়ে দেয়া যায় না বটে, কিন্তু তার সম্ভাবনা কম৷
তবে আশা পুরোপুরি ছেড়ে দিচ্ছেন না বিজ্ঞানীরা৷ ‘কিউরিয়সিটি' তার কাজ চালিয়ে যাবে৷ আরও নমুনা সংগ্রহ করবে৷ পৃথিবী থেকেও আরও টেলিস্কোপের মাধ্যমে আরও তথ্য সংগ্রহ করা হবে৷
এসবি/ডিজি (রয়টার্স,এএফপি)