1. কন্টেন্টে যান
  2. মূল মেন্যুতে যান
  3. আরো ডয়চে ভেলে সাইটে যান

পরিবেশ দূষণ

২ মার্চ ২০১২

পরিবেশ দূষণ৷ শিল্পক্ষেত্রের কার্বন প্রদূষণ এবং তার কুফল৷ এই সবকিছুকে যদি একসঙ্গে প্রত্যক্ষ করতে হয়, যেতে হবে চীন৷ চীনের শহরাঞ্চলগুলির পরিস্থিতি ভয়াবহ৷ অবশেষে টনক নড়েছে সরকারের৷

https://p.dw.com/p/14CwF
ছবি: AP

সূর্যের জন্য ‘নো এন্ট্রি'

সকাল আটটা৷ চীনের রাজধানী বেইজিং-এর একটি দৃশ্য৷ আবহাওয়ার ছবিটা প্রথমে বলা যাক৷ রৌদ্রকরোজ্জ্বল দিন৷ আকাশে সূর্য বেশ পূর্ণমাত্রায়৷ সকালবেলার অফিস টাইমে যথারীতি ব্যস্ত রাজপথে সারি সারি গাড়ি৷ কিন্তু তাদের সকলকেই চলতে হচ্ছে হেডলাইট জ্বেলে৷ কারণ, আকাশে সূর্য যতই থাকুক না কেন, গোটা শহরে কিন্তু প্রদোষের মত আলো-অন্ধকার৷ বাতাসের দূষণ এক ঘন কুয়াশার মত দূষিত চাদরে ঢেকে রেখেছে গোটা শহরকে৷ তাতে নিশ্বাস নেওয়া মানে প্রতি পলে মৃত্যুকে টেনে নেওয়া ফুসফুসে৷ আর প্রতিদিন প্রতি মুহূর্তে সেই দূষণের মাত্রা বেড়ে চলেছে৷ আরও আরও গাড়ি, আরও আরও শিল্প, এবং আরও আরও আরও দূষণ চরাচরকে ঢেকে দিচ্ছে৷ সে দূষণের এমন ভয়ংকর শক্তি যে সূর্যের আলোর পর্যন্ত সেখানে প্রবেশাধিকার নেই৷ মাত্র দশ হাত দূরের পথও দেখা যায়না৷ এমনকি দিনের বেলাতেও৷

Mehr Chinesen in Städten als auf dem Land
ছবি: picture alliance/landov

চীনের বাস্তবতা

চীনের এই পরিস্থিতির কথা গোটা দুনিয়া জানে৷ শুধু চীন কেন, দক্ষিণ এশিয়ার একাধিক বড় শহরের এই পরিস্থিতি৷ শহরের মধ্যে যেখানে বায়ুদূষণ বা ‘স্মগ' এমন জঘন্য পরিস্থিতি তৈরি করে মৃত্যুকূপের ব্যবস্থা করে রেখেছে, সেখানে শহর থেকে কিছুটা দূরে গেলে কিন্তু দেখা যাবে স্বাভাবিক নির্মল প্রকৃতির ছবি৷ যেখানে দূষণ তার করাল ছায়া সেভাবে ফেলতে পারেনি৷

প্রশাসনিক উদ্যোগ

China Hongkong Panorama Rekordpreis für Luxus-Appartment
ছবি: picture alliance/dpa

অতএব চীনের প্রশাসন এবার উঠেপড়ে লেগেছে এই দূষণ কমাতে৷ বেশ কিছুদিন ধরে চীনের ভিতরে পরিবেশ আন্দোলনকারীরা এই দূষণের মাত্রা কমাতে দাবি দাওয়া জানিয়ে আসছিল৷ দাবি দাওয়া উঠছিল বিভিন্ন নাগরিক সংগঠন এবং স্বাস্থ্য সুরক্ষা সংগঠনের তরফেও৷ চীনের স্টেট কাউন্সিল অবশেষে কিছুটা হলেও ব্যবস্থা নিতে বাধ্য হয়েছে তাই৷ সম্প্রতি তাদের ওয়েবসাইটে প্রচারিত নির্দেশনামায় বলা হয়েছে, রাজধানী বেইজিং এবং প্রধান শহর সাংহাই সহ মোট ৩১টি শহরের বাতাস দূষণের মাপজোক শুরু করতে হবে৷ এবং সেখানেই শেষ নয়, সেই দূষণের মাত্রাকে সহনীয় পর্যায়ে নামিয়ে আনতেও কড়া ভাষায় নির্দেশ জারি করা হয়েছে৷ বলা হয়েছে, ২০১৩ সালের মধ্যে এই লক্ষ্যমাত্রা পূরণ করতে হবে৷

A man collects dead fish in Guanqiao Lake in Wuhan in central China's Hubei province, 11 July 2007. Some 5.000 kilogrammes fish died due to the polluted lake water and the sizzling weather in the city. EPA/Zhou Chao +++(c) dpa - Report+++
ছবি: picture-alliance/dpa

২.৫ এর দাওয়াই

এবার দেখা যাক, কী মাত্রায় দূষণ কমানোর নির্দেশ জারি করেছে চীন সরকার৷ বাতাসে প্রতি মিলিগ্রামে ২.৫ মিলিগ্রাম পর্যন্ত সহনীয় মাত্রায় দূষণকে নামাতে হবে বলে বলা হয়েছে প্রাথমিক নির্দেশে৷ যদিও আসল পরিস্থিতি কিন্তু সম্পূর্ণ আলাদা৷ চীনের পরিবেশবাদীদের অভিযোগ, ৩১টি প্রাদেশিক রাজধানী সহ গোটা চীনের মোট ১৩১ টি শহরের বায়ুদূষণ সমস্ত উচ্চমাত্রা ছাপিয়ে গেছে৷ কোথাও কোথাও ৮০ শতাংশ দূষণের পরিমাপ বহুদিন ধরেই পরিলক্ষিত হচ্ছে৷ এই পরিস্থিতিতে যদি অবিলম্বে বেশ বড়সড় আকারে দূষণ নিয়ন্ত্রণের বন্দোবস্তো না করা যায়, তবে অদূর ভবিষ্যতে আর কিছুই করার থাকবে না৷ বসবাসের অযোগ্য হয়ে পড়বে বিশ্বের সবচেয়ে বেশি জনসংখ্যার দেশ চীনের অধিকাংশ শহর৷

কী বলছে গ্রিনবেগেল

Flash-Galerie China Ölpest
ছবি: AP

বায়ুদূষণকে কমিয়ে ২.৫-এর সহনীয় মাত্রায় নামানোর যে সিদ্ধান্ত প্রাথমিকভাবে ৩১ টি শহরের ক্ষেত্রে নামাতে নির্দেশ জারি করেছে প্রশাসন, সে কাজে গতি আনার পাশপাশি পরিবেশবাদী চীনা সংগঠন গ্রিনবেগেলের দাবি, মোট ১৩১টি শহরকে এই দূষণ নিয়ন্ত্রণের আওতায় আনতে হবে৷ সেইসঙ্গে তাদের আশঙ্কা, যেরকম হালকা ভাবে উদ্যোগ নিচ্ছে সরকার, তাতে দূষণের মাত্রা কমতে প্রচুর সময় লাগবে৷ গ্রিনবেগেলের তরফে সংস্থার এক কর্তা ওয়াং কুইঝিয়া জানাচ্ছেন, চীনে সবচেয়ে বেশি মাত্রায় কয়লা ব্যবহৃত হয় জ্বালানি হিসেবে৷ এই দূষণের অন্যতম কারণ সেটাই৷ আর রয়েছে অসংখ্য পুরানো গাড়ির ব্যবহার, যেগুলি বাতাসে ভয়াবহ মাত্রার দূষণকে আরও বাড়িয়ে চলেছে৷ বাতাসে দূষণ কমাতে হলে সর্বাগ্রে এই দুটি ক্ষেত্রে ব্যবস্থা নিতে হবে৷ কিন্তু, সে কাজ সরকার চাইলেও এক্ষুণি করতে পারবে না৷ সুতরাং? সুতরাং, এত সহজে এই দূষণের ক্ষতি কমবে না৷ বরং বাড়বেই৷

প্রতিবেদন: সুপ্রিয় বন্দ্যোপাধ্যায়
সম্পাদনা: দেবারতি গুহ

স্কিপ নেক্সট সেকশন এই বিষয়ে আরো তথ্য

এই বিষয়ে আরো তথ্য