ভ্যাকসিন দৌড় ও অবিশ্বস্ত বন্ধুর পরিচিত আচরণ
৩০ এপ্রিল ২০২১রাশেদ খান মেনন সরকারি দল আওয়ামী লীগের সদস্য নন৷ তবে তিনি জাতীয় সংসদ নির্বাচনে আওয়ামী লীগের নৌকা প্রতীক নিয়েই লড়াইয়ে নামেন, জয়ী হন৷ গত তিন দফা ধরে এভাবেই চলছে৷ এর মধ্যে একবার সরকারের মন্ত্রীও হয়েছেন৷ কাজেই তাকে এলেবেলে লোক বলা যাবে না৷ তিনি গুরুত্বপূর্ণ মানুষ৷ এরকম গুরুত্বপূর্ণ মানুষ যখন সরকারের কোনো কাজ নিয়ে মন্তব্য করেন, সেটাকে উড়িয়ে দেওয়া যায় না৷
মেননের উচ্চারিত এই ‘ব্যবসায়িক প্রতিষ্ঠান'টি হচ্ছে বেক্সিমকো ফার্মাসিউটিক্যাল৷ কোভিড-১৯-এর ভ্যাকসিন পেতে সরকার নির্ভর করেছিল বেক্সিমকো ফার্মার ওপর৷ কথা ছিল তারা ভারতের সেরাম ইনস্টিটিউট থেকে অক্সফোর্ড-অ্যাস্ট্রাজেনেকার টিকা নিয়ে আসবে বাংলাদেশের জন্য৷ তিন কোটি ডোজ টিকা আনার কথা বলে তারা৷ তাদের কথা অনুযায়ী, দেড় কোটি ডোজ টিকার দাম সরকার আগাম পরিশোধও করে দেয়৷ এ সংক্রান্ত চুক্তিটি হয় ২০২০ সালের নভেম্বরে৷ কথা ছিল, প্রতি মাসে ৫০ লাখ করে টিকা আসতে থাকবে বাংলাদেশে৷
যখন এই চুক্তি হয়, সেটা সময়ের বিবেচনায় আমাদের জন্য বেশ ইতিবাচক৷ এত আগে পৃথিবীর অনেক দেশই টিকা পায়নি৷ আমরা একটু আগেই পাওয়ার ব্যবস্থা করতে পারি৷ এই আগে পাওয়ার আনন্দে এতটাই বগল বাজাতে থাকি যে, টিকার অর্থনীতিটা এখানে চাপা পড়ে যায়৷ প্রতি ডোজ টিকা বাবদ আমাদের দিতে হয় ছয় ডলার করে৷ বলা হয়, এর মধ্যে ৫ ডলার হচ্ছে টিকার দাম, আর এক ডলার পরিবহণ ব্যয়৷ অর্থের এই হিসাব নিয়ে তখনই অনেকে আপত্তি করেন৷ কারণ, এই একই টিকা সেরামের কাছ থেকে ভারত সরকার তখন কিনছিল ৩ ডলার করে৷ তাহলে আমরা কেন ৫ ডলার করে কিনছি? এ প্রশ্ন যে ওঠেনি, তা নয়৷ কিন্তু সে প্রশ্ন চাপা পড়ে যায়৷ সরকারের মন্ত্রীরা বলতে থাকেন, যখন উন্নত বিশ্বেরও অনেকে টিকা পায়নি, তখন আমরা টিকা সংগ্রহ করতে পেরেছি৷ দামটা মুখ্য নয়, প্রধান বিবেচ্য হচ্ছে মানুষের জীবন বাঁচানো৷
কিন্তু বাস্তবে হলোটা কি? বেশি দাম দেওয়ার পরও টিকা কি চুক্তি অনুযায়ী আমরা পেলাম? কথা ছিল প্রতি মাসে ৫০ লাখ ডোজ করে টিকা আসবে৷ এ বছরের জানুয়ারি শেষ সপ্তাহে সে অনুযায়ী প্রথম চালানটি আসে৷ পরের চালানে ৫০ লাখের পরিবর্তে আসে ২০ লাখ৷ বেক্সিমকোর মাধ্যমে এ পর্যন্ত এই ৭০ লাখ ডোজ টিকাই পেয়েছে বাংলাদেশ৷ এছাড়া দুই দফায় ভারতের কাছ থেকে উপহার হিসাবে পায় আরো ৩২ লাখ টিকা৷ সব মিলিয়ে ১ কোটি ২ লাখ৷ সেরাম কিন্তু ওই ৭০ লাখের পর আর কিছুই দেয়নি৷ অথচ তাদের সঙ্গে চুক্তি হয়েছিল প্রতিমাসে ৫০ লাখ করে দেওয়ার৷ যে দেড় কোটির মূল্য অগ্রীম দেওয়া হয়েছে, সেটাও আসছে না৷
টিকা না পাওয়ার পিছনে একটা যুক্তি অবশ্য আছে৷ ভারতের নিজের পরিস্থিতিই এখন বড় বেশি নাজুক৷ আক্রান্ত ও মৃতের সংখ্যা সেখানে ভয়াবহ আকার ধারণ করেছে৷ এরই মধ্যে ভারত সরকার তাদের দেশ থেকে বাইরে টিকা রপ্তানি নিষিদ্ধ ঘোষণা করেছে৷ ফলে সেরাম ইনস্টিটিউট চাইলেও আমাদের এখানে টিকা পাঠাতে পারছে না৷ টিকা আনতে না পারার কারণ হিসাবে বেক্সিমকো এই কথাটি বলেছে৷ তারা বলেছে, সেরাম তো আমাদেরকে দেওয়ার জন্য ৫০ লাখ টিকা রেডি করে রেখেছে, আইনগত জটিলতার কারণে পাঠাতে পারছে না৷ এখন আমাদের সরকার যদি একটু চাপ প্রয়োগ করে, তাহলে হয়তো সেটা পাওয়া যাবে৷
সব মিলিয়ে বাস্তবতা হচ্ছে, বেশি টাকা দেওয়ার পরও আমরা টিকা পাচ্ছি না৷ এদিকে ভারতের করোনা পরিস্থিতির যে খবর পাওয়া যাচ্ছে- তাতে খুব শীঘ্র যে সেখান থেকে টিকা পাওয়া যাবে, তেমন সম্ভাবনাও নেই৷ বেশি বেশি মানুষকে টিকা দিতে রফতানি নিষিদ্ধ করার পাশাপাশি তারা নিজেরাও বিভিন্ন দেশ থেকে টিকা আমদানি করছে৷
এদিকে বাংলাদেশ পড়েছে আরেক জটিল পরিস্থিতিতে৷ ভারত থেকে কম করে হলেও তিন কোটি টিকা তো পাচ্ছিই- এমন নিশ্চয়তায় আমরা ৫৮ লাখ মানুষকে প্রথম ডোজ টিকা দিয়ে দিয়েছি৷ তাদের সবাইকে দ্বিতীয় ডোজ দিতে হলে টিকা থাকা লাগতো ১ কোটি ১৬ লাখ৷ কিন্তু সব মিলিয়ে দেশে টিকা এসেছেই মাত্র ১ কোটি ২ লাখ৷ এই সকল টিকার সবগুলোই যদি দেওয়া সম্ভব হয়, তারপরও ১৪ লাখ মানুষ অ্যাস্ট্রাজেনেকার টিকার দ্বিতীয় ডোজ পাবে না৷ তাহলে তাদের কী হবে? তারা কি দ্বিতীয় ডোজ হিসাবে রাশিয়া বা চীনের টিকা নিতে পারবে? নিলে কাজ হবে?
ঠিক এই পর্যায়ে এসে রাশেদ খান মেননের মন্তব্যের যথার্থতা টের পাওয়া যাচ্ছে৷ মনে হচ্ছে- আসলেই তো অপরিণামদর্শী সিদ্ধান্ত ছিল, আসলেই একটি মাত্র ঝুড়িতে সব ডিম রাখা হয়েছিল৷ এখন ঝুড়ি উল্টে যাওয়ায় সব ডিমই ভেঙে যাচ্ছে৷
দুদিন আগে মন্ত্রিপরিষদের মিটিং থেকে বের হয়ে আমাদের অর্থমন্ত্রী মোস্তফা কামাল সাহেব বেশ দায়িত্ব নিয়ে বললেন, "শুরু থেকেই বলে আসছি যে, ভ্যাকসিনের বিকল্প উৎসের কথা আমাদের চিন্তা করতে হবে৷” কথাটি শুনতে ভালো৷ কিন্তু তারপরও তার এমন বক্তব্য আমাকে খুবই অবাক করেছে৷ উনি শুরু থেকেই কবে বললেন এমন কথা? কোন ফোরামে, কাকে বলেছেন? কই, আমরা তো কেউ শুনিনি৷ আর যদি বলেও থাকেন, তিনি দেশের অর্থমন্ত্রী, তার কথার গুরুত্ব কেন দেওয়া হলো না?
এ প্রশ্নের উত্তর পেতে বরং পররাষ্ট্রমন্ত্রী মোনেম সাহেবের কথার দিকে তাকানো যেতে পারে৷ তিনি বলেন, বেক্সিমকোর চাপের কারণেই তারা টিকার বিকল্প উৎসের দিকে যেতে পারেননি৷ পররাষ্ট্র মন্ত্রীর এমন মন্তব্য আমার কাছে বিস্ময়কর ঠেকেছে৷ উনি এটা কী বললেন! কোনো সরকার কি এমন করতে পারে? দ্রুত টিকা পাওয়া আমাদের জাতির জন্য একটা গুরুত্বপূর্ণ বিষয়৷ কোনো সরকার কি এতটা দুর্বল বা দায়িত্বহীন হতে পারে যে, একটা ব্যাবসা প্রতিষ্ঠানের স্বার্থের কাছে জাতীয় স্বার্থকে জলাঞ্জলি দেবে? এটা কী করে হয়! কিন্তু খোদ পররাষ্ট্র মন্ত্রীর মতো গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তির কথাকে পাত্তা না দেওয়ার সুযোগই বা কোথায়?
আসলে পররাষ্ট্র মন্ত্রী বোধকরি কিছুটা ক্ষেপে গিয়েছিলেন৷ টিকা আনতে না পারা প্রসঙ্গে বেক্সিমকোর এমডি যখন সরকারের হস্তক্ষেপ প্রত্যাশা করেছিলেন, তার প্রেক্ষিতেই ক্ষুব্ধ প্রতিক্রিয়া প্রকাশ করেছিলেন মন্ত্রী৷ মন্ত্রী বলেছিলেন- আমাদের মন্ত্রণালয় থেকে ভারতকে বারবার অনুরোধ করা হয়েছে, খোদ প্রধানমন্ত্রী পর্যন্ত অনুরোধ করেছেন, এরপর আর কি করতে পারি আমরা?
তবে পররাষ্ট্র মন্ত্রীর বক্তব্যে যে ক্ষোভ প্রকাশিত হয়েছে, তার আড়ালে যে অনেকটাই অসহায়ত্ব ছিল, সেটা কিন্তু দেশের ওয়াকিবহাল মহলের বুঝতে তেমন একটা বেগ পেতে হয়নি৷ বেক্সিমকো আসলেই একটা প্রভাবশালী প্রতিষ্ঠান৷ এর এমডি সাবেক রাষ্ট্রপতি জিল্লুর রহমানের পুত্র, বর্তমানে জাতীয় সংসদের সদস্য, ক্রিকেট বোর্ডের সভাপতি৷ আবার এই প্রতিষ্ঠানের অন্যতম মালিক সালমান এফ রহমান মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর একজন উপদেষ্টা৷ তিনি একজন সংসদ সদস্যও বটেন৷ সব মিলিয়ে এলাহী কাণ্ড৷ তাদের ইচ্ছাকে মূল্য না দেওয়া, তাদের বিরুদ্ধে সরাসরি বলা আসলেই কঠিন কাজ৷ এই এখন যে পররাষ্ট্র মন্ত্রী বা অর্থ মন্ত্রী আড়েঠারে বলতে পারছেন, সেটাও সম্ভব হয়েছে ভারতের ‘টিকা জাতীয়তাবাদ' এর কারণে৷ ভারত যদি ঠিকঠাক চুক্তি অনুযায়ী টিকা পাঠাতো, তাহলে হয়ত আজও আমরা সেরাম থেকেই টিকা আনতে থাকতাম, বেক্সিমকো নিয়মিত দীর্ঘমেয়াদে বিপুল মুনাফা গুনতে থাকতো, বিকল্প কোনো উৎসের সন্ধানে যেতে পারতাম না৷
তাহলে কি শাপেবর হয়েছে? আপাতদৃষ্টিতে অনেকটা সেরকমই মনে হতে পারে৷ সেরাম থেকে টিকা না পেয়ে সরকার দ্রুতই বিকল্প উৎসের সন্ধানে নামে৷ ফলও পাওয়া যায় হাতেনাতে৷ এখন রাশিয়া থেকে তাদের স্পুটনিক-ভি এবং চীন থেকে সিনোফার্ম ভ্যাকসিন পাওয়ার বিষয়টি একরকম চুড়ান্ত হয়েছে৷ তাদের সঙ্গে আলোচনা শুরুর পরপরই দ্রুতবেগে সরকারের সংশ্লিষ্ট বিভাগগুলো সক্রিয় হয়েছে৷ অত্যন্ত দ্রুতবেগে এদের টিকা ব্যবহারের জন্য অনুমোদন দেওয়া হয়েছে৷ রাশিয়া অবশ্য বলেছে, তাদের টিকা যাতে আমাদের দেশেই উৎপাদন করা যায়, সেই ব্যবস্থা তারা করবে৷ স্পুটনিক-ভি-এর ফরমুলা দেবে, আমাদের ওষুধ কোম্পানিগুলো তা তৈরি করবে৷ আমাদের দেশেই যদি ভ্যাকসিন উৎপাদন শুরু হয়, তাহলে সেটা ব্যবহারই কেবল নয়, আমরা হয়তো বাইরে রপ্তানিও করতে পারবো৷
এসবই অবশ্য আশার কথা৷ বাস্তবতা সবসময় প্রত্যাশা অনুযায়ী চলবে তেমন নিশ্চয়তা দেওয়া যায় না৷ রাশিয়া টেকনোলজি ট্রান্সফারের প্রতিশ্রুতি দিয়েছে, কিন্তু এটাই শেষ কথা নয়৷ ভ্যাকসিনের জন্য যে বিপুল কাঁচামালের নিয়মিত জোগানের দরকার পড়বে, সেটার কথাও আগেভাগেই ভাবতে হবে৷ আশা করা যায় সরকার এবার আর কারো ব্যবসায়িক খপ্পরে পড়বে না৷
সরকারের যে আচরণটি কিছুটা হলেও আশার সঞ্চার করেছে, সেটা হলো, এবার আর কোনো তৃতীয় পক্ষকে এখানে ঢোকানো হয়নি৷ চীন এবং রাশিয়ার সঙ্গে আলোচনা বা চুক্তি, সবই হচ্ছে সরাসরি সরকারের সঙ্গে সরকারের৷ এটা ভালো৷ সেই সঙ্গে উৎপাদনের জন্য সরকারি কোনো প্রতিষ্ঠানকে কি সম্পৃক্ত করা যেতো না? আইপিএইচ নামে আমাদের একটি সরকারি প্রতিষ্ঠান রয়েছে৷ তারা ৫০ বছর আগে থেকেই ভ্যাকসিন প্রস্তুত করে৷ নানা অবহেলা আর দায়িত্বহীনতার কারণে গত কয়েক বছর ধরে প্রতিষ্ঠানটি হয়ত সেরকম ভালো অবস্থায় নেই৷ কিন্তু সরকার কি পারে না, আইপিএইচকে আধুনিকায়ন করে নিতে? আবার সরকারি মালিকানায় ইডিসিএল নামে একটা ফার্মাসিউটিক্যাল কোম্পানিও আছে৷ এটি চলমান একটা প্রতিষ্ঠান, এর ওষুধের মানও ভালো৷ ভ্যাকসিন উৎপাদনের জন্য ইডিসিএলের কথাও বিবেচনা করা যেতে পারে৷ বারবার সরকারি প্রতিষ্ঠানের কথা বলা হচ্ছে এ কারণে যে, বেসরকারি ওষুধ কোম্পানিকে দায়িত্ব দেওয়া হলে ভ্যাকসিনের দাম কিছুটা হলেও বেড়ে যাবে৷ সরকার হয়ত বলবে- জনগণকে তারা বিনামূল্যেই ভ্যাকসিন দেবে৷ কিন্তু বিনামূল্যে দিলেও সরকারকে ঠিকই ওষুধ কোম্পানিগুলো থেকে তা কিনে নিতে হবে৷ আর সে টাকা প্রকারন্তরে জনগণেরই৷
আসলে সব মিলিয়ে আমরা একটা জটিল পরিস্থিতির মধ্যে আছি৷ এটা কেবল আমাদের একার সমস্য নয়৷ পুরো বিশ্বই এখন ‘ভ্যাকসিন দৌড়'-এর মধ্যে আছে৷ সবাই চেষ্টা করছে, যার যার মতো করে টিকা সংগ্রহের৷ এ নিয়ে আবার চলছে নানা কূটনীতি, নানা রাজনীতি৷ সেই রাজনীতির কিছুটা শিকার যে আমরাও হইনি, তা বলা যাবে না৷ একেবারে শুরুতে চীন চেয়েছিল তাদের একটি টিকার ট্রায়াল আমাদের দেশে করতে৷ সেটা হলে, আমরা হয়ত টিকা প্রাপ্তির ক্ষেত্রে অনেকটাই সুবিধা পেতাম৷ কিন্তু আমরা সে সুযোগটি নিতে পারিনি৷ আবার যখন টিকা সংগ্রহের প্রশ্ন উঠেছে, তখনও ভারতের বাইরে কিছু চিন্তা করিনি৷ এসবের পিছনে যে কোনোই কূটনৈতিক প্রভাব ছিল না, তা বলা যাবে না৷ অনেকটাই ছিল৷ না হলে, ওই সময়ে হঠাৎ করেই ভারতের পররাষ্ট্র সচিব জরুরি ভিত্তিতে দিল্লি থেকে উড়ে ঢাকায় চলে আসবেন কেন? কিন্তু শেষ অব্দি ‘টিকা কূটনীতি' হেরে গেছে ‘টিকা জাতীয়তাবাদ'-এর কাছে৷ পানি, পেঁয়াজ নিয়ে নিয়মিত ঝামেলার পর টিকার মাধ্যমে ভারত আরেকবার প্রমাণ করেছে- তারা আসলেই আমাদের সবচেয়ে অবিশ্বস্ত বন্ধু৷ আর সম্ভবত এ কারণেই ক্ষুব্ধ পররাষ্ট্র মন্ত্রীর কণ্ঠে উচ্চারিত হয়েছে, "কোনো দেশের কাছে নাকে খত দিয়ে বসে নেই বাংলাদেশ৷ করোনা ঠেকাতে রাশিয়া, অ্যামেরিকা, চীন- যে কোনো দেশ থেকেই টিকা আনা হবে৷” তবে আশা ছাড়েননি বেক্সিমকোর ব্যবস্থাপনা পরিচালক নাজমুল হাসান পাপন৷ তিনি বলছেন, "আমরা এখনও বিশ্বাস করি, ভারত আমাদের মহান বন্ধু৷ এখন ভারতের জন্য সময় হয়েছে সেটা প্রমাণের৷ আমরা দেখতে চাই, তারা সেই প্রমাণটি দেবে৷ কেবল মিষ্টি কথায় কাজ হবে না৷ আমরা তাদের কাছ থেকে দয়া চাচ্ছি না৷ সময়ে এসেছে আমাদের অধিকারটি বুঝে নেওয়ার''
পাপনের কথায় কিছুটা হলেও ঝাঁজ হয়তো আছে৷ আবার আছে আশাবাদও৷ কিন্তু এতেও কি পরিবর্তন হবে আমাদের বৃহৎ প্রতিবেশীর মন? অতীত অভিজ্ঞতার আলোকে আমি কিন্তু তেমন একটা আশাবাদী নই৷