মহাকাশ যাত্রা
১৩ ফেব্রুয়ারি ২০১২মহাকাশে স্যাটেলাইট পাঠাতে এতকাল মার্কিন ‘স্পেস শাটল' বা মহাকাশফেরি উল্লেখযোগ্য ভূমিকা পালন করে এসেছে৷ কিন্তু শাটল কর্মসূচির সমাপ্তির পর এই দায়িত্ব পালন করতে হচ্ছে সাধারণ রকেট'কে৷ রকেটের কাজ পৃথিবী থেকে এক বা একাধিক স্যাটেলাইট'কে মহাকাশে নিয়ে গিয়ে নির্দিষ্ট কক্ষপথে ছেড়ে দেওয়া৷ সোমবার সেই রকেট পরিবারে যোগ হলো ‘ভেগা'৷ ইউরোপের ৭টি দেশ প্রায় ৭৯ কোটি ইউরো ব্যয় করে এই রকেট সৃষ্টি করেছে৷ সব মিলিয়ে প্রায় ১,০০০ মানুষ ও ৪০টি সংস্থা এই প্রকল্পে সক্রিয়৷ ‘ভেগা'র নির্মাণের কাজ প্রায় পুরোটাই ইটালিতেই সম্পন্ন হয়েছে৷ মূলত ছোট আকারের গবেষণামূলক বা পর্যবেক্ষক স্যাটেলাইট'এর জন্যই এই রকেট উপযুক্ত, বলছেন বিশেষজ্ঞরা৷
ইউরোপীয় মহাকাশ সংস্থা ‘ইএসএ' এতকাল দক্ষিণ অ্যামেরিকার ফ্রেঞ্চ গিয়ানা'র কুরু মহাকাশ কেন্দ্র থেকে বিশাল আকারের ‘আরিয়ান ৫' রকেট উৎক্ষেপণ করে এসেছে৷ প্রায় ৫০ মিটার লম্বা ‘আরিয়ান ৫' রকেট সহজেই নজর কাড়ে৷ রাশিয়ার ‘সোইয়ুজ' রকেট মাঝারি মাপের৷ ‘ইএসএ' রাশিয়ার কাছ থেকে এই রকেট কিনে নিজের প্রয়োজনে কাজে লাগাচ্ছে৷ নতুন এই ‘ভেগা' রকেটের আকার আরও ছোট, কিন্তু প্রথম পরীক্ষামূলক যাত্রায় সে মোট ৯টি স্যাটেলাইট কাঁধে নিয়ে রওয়ানা হয়েছে৷ এর মধ্যে দু'টি ইটালির, বাকি ৭টি ‘পিকো' স্যাটেলাইটের মালিক ইউরোপের বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়৷ স্যাটেলাইটগুলি কক্ষপথেও পৌঁছে গেছে৷ ৩০০ থেকে আড়াই হাজার কিলোগ্রাম ওজন বহন করার ক্ষমতা রাখে এই রকেট৷ এর নিজস্ব উচ্চতা ৩০ মিটার, ওজন ১৩৭ টন৷
১৯৯৬ সালের জুন মাস থেকে নতুন কোনো রকেট পরীক্ষা করা হয় নি৷ সেবছর পরীক্ষামূলক উৎক্ষেপণের ৪০ সেকেন্ড পরেই ‘আরিয়ান ৫' রকেটটি ধ্বংস হয়ে যায়৷ সফটওয়্যার'এ ত্রুটির কারণেই এই দুর্ঘটনা ঘটেছিল বলে জানা যায়৷ সোমবারের সাফল্য সেই ব্যর্থতা ঢেকে দিয়েছে৷ ইএসএ'র প্রধান জঁ জাক দরদ্যাঁ বলেন, ‘‘এখন আর এমন কোনো ইউরোপীয় স্যাটেলাইট রইলো না, যা আমরা নিজেরাই মহাকাশে পাঠাতে পারি না৷ এটা ইএসএ ও ইটালির জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ একটি দিন৷'' উল্লেখ্য, এবার ‘আরিয়ানস্পেস' সংস্থা ‘ভেগা'র বাণিজ্যিক ব্যবহার শুরু করতে পারবে৷
প্রতিবেদন: সঞ্জীব বর্মন
সম্পাদনা: আব্দুল্লাহ আল-ফারূক