ভিন্নমতাবলম্বীদের রক্ষায় ‘ব্যর্থ’ বাংলাদেশ সরকার
২ মে ২০১৭‘বাংলাদেশে বাকস্বাধীনতার উপর আঘাত’ শীর্ষক প্রতিবদনে গত কয়েক বছরে ঘটে যাওয়া ব্লগার হত্যা, সাংবাদিকদের কারাবন্দিসহ নানা ঘটনা তুলে ধরেছে আন্তর্জাতিক মানবাধিকার সংস্থা অ্যামনেস্টি ইন্টারন্যাশনাল৷ এক বিচারহীনতার সংস্কৃতির মধ্যে বিভিন্ন সশস্ত্র গোষ্ঠী নিজেদের অবস্থান শক্ত করেছে, যারা কয়েকজন সুপরিচিত এবং আলোচিত ব্লগারকে হত্যা করেছে বলে মনে করে সংগঠনটি৷ গত চার বছরে ব্লগার হত্যার শুধুমাত্র একটি ঘটনার বিচার সম্পন্ন হয়েছে বলেও উল্লেখ করা হয়েছে প্রতিবেদনে৷
পাশাপাশি সরকারও বিতর্কিত এক আইনের কঠোর প্রয়োগের মাধ্যমে ভিন্নমতামবলম্বীদের কণ্ঠরোধে সক্রিয় ভূমিকা পালন করছে বলেও মনে করে লন্ডনভিত্তিক সংগঠনটি৷ ‘‘সশস্ত্র গোষ্ঠীগুলোর সহিংসতা এবং রাষ্ট্রের দমননীতির মধ্যে পড়ে বাংলাদেশের সেক্যুলার কণ্ঠগুলো ক্রমশ নীরব হয়ে যাচ্ছে,’’ বলেন অ্যামনেস্টির বাংলাদেশ গবেষক ওলফ ব্লমকভিস্ট৷
তিনি বলেন, ‘‘সরকার যে শুধুমাত্র সাধারণ মানুষের বাকস্বাধীনতা রক্ষায় ব্যর্থ হচ্ছে তা নয়, বিভিন্ন হুমকিতে পরা ভুক্তভোগীদেরকে তাদের পরিনতির জন্য দায়ী করছে এবং দমনমূলক আইনের আওতায় ব্লগার এবং সাংবাদিকদের লেখালেখিকেও অপরাধ হিসেবে বিবেচনা করছে৷’’
অ্যামনেস্টির প্রতিবেদনে কয়েকটি হত্যাকাণ্ডের কথা সুস্পষ্টভাবে উল্লেখ করা হয়েছে৷ গত এপ্রিলে ঢাকায় নিজের বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসের কাছে খুন হন অনলাইন অ্যাক্টিভিস্ট নাজিমুদ্দিন সামাদ৷ সেই সময় দেশটির স্বরাষ্টমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল নিহত অ্যাক্টিভিস্টের লেখালেখিকে ‘আপত্তিকর’ আখ্যা দিয়ে পরিণতির জন্য প্রকারান্তরে তাঁকেই দায়ী করেন৷ অন্যদিকে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এক অনুষ্ঠানে বলেন যে, ‘‘মুক্তচিন্তার নামে কারও ধর্মীয় অনুভূতিতে আঘাত দেওয়া বিকৃত রুচি ও নোংরা রুচির পরিচয়৷’’ তিনি সেক্যুলার লেখকদের লেখালেখির মধ্যে ‘নোংরামি, পর্ন’ দেখেন বলেও উল্লেখ করেন৷
বর্তমান প্রেক্ষাপটে বাংলাদেশের এক সময় সক্রিয় সিভিল সোসাইটি এখন ‘সেল্ফ সেন্সরশিপ’ বেছে নিয়েছে বলে মনে করছে অ্যামনেস্টি ইন্টারন্যাশনাল৷ প্রতিবেদনটিতে একাধিক সাংবাদিক এবং ব্লগারের বক্তব্যও প্রকাশ করা হয়েছে৷ ভবিষ্যতে আরো কঠোর আইনের মাধ্যমে বাংলাদেশে বাকস্বাধীনতার চর্চার পথ আরো সঙ্কুচিত করার উদ্যোগ নেয়া হচ্ছে জানিয়ে উদ্বেগও প্রকাশ করেছে অ্যামনেস্টি ইন্টারন্যাশনাল৷
এআই/এসিবি
প্রিয় পাঠক, আপনি কিছু বলতে চাইলে লিখুন নীচে মন্তব্যের ঘরে...