1. কন্টেন্টে যান
  2. মূল মেন্যুতে যান
  3. আরো ডয়চে ভেলে সাইটে যান

ভিড় সামলাতে প্রযুক্তি

ফ্রিডো এসেন / এসবি৬ সেপ্টেম্বর ২০১৩

সৌদি আরবে পবিত্র হজ বা ভারতের কুম্ভমেলার সময় বিশাল সংখ্যক মানুষের সমাগম সামলানো প্রশাসনের কাছে বড় চ্যালেঞ্জ৷ জার্মানির গবেষকরা ভিড়ের চাপে বিপর্যয় এড়াতে অভিনব পথ বাতলে দিচ্ছেন৷

https://p.dw.com/p/19dDE
arena3dPunkte.jpg Bildüberschrift: BaSiGo Experiment: 3D Bild der Menschen im Stau Bildbeschreibung: Probanden verlassen die Tribüne eines Fußballstadions. Sie werden als Punkte dreidimensional dargestellt: Rote Punkte stehen im Stau, grüne und blaue bewegen sich vorwärts. Das dreidimensionale Bild ermöglicht zwischen großen und kleinen Menschen zu differenzieren und die Schräge der Tribüne zu berücksichtigen. Das Forschungszentrum Jülich erprobt so das Verhalten von Menschenströmen. (Foto: Forschungszentrum Jülich)
Bildergalerie BaSiGoছবি: Forschungszentrum Jülich

বার বার এমনটা ঘটে৷ মানুষের ভিড় নিয়ন্ত্রণের বাইরে চলে যায়৷ তখন এমনকি জীবন বিপন্ন হতে পারে৷ অনেক সময় ভিড়ের চাপে মানুষ পদপিষ্ট হয়ে যায়৷ এমন বিপর্যয় এড়ানোর চেষ্টা করছেন জার্মানির ইয়ুলিশ গবেষণা কেন্দ্রের বিজ্ঞানীরা৷ ইয়ুলিশ গবেষণা কেন্দ্রের আর্মিন সাইফ্রিড বললেন, ‘‘বাসিগো প্রকল্পের আওতায় আমরা দমকল, পুলিশ ও নিরাপত্তা সংস্থাগুলির সঙ্গে কাজ করছি৷ বড় কোনো অনুষ্ঠানে নিরাপত্তা আরও উন্নত করাই আমাদের লক্ষ্য৷''

‘বাসিগো' প্রকল্পের এক পরীক্ষায় অংশ নিতে ড্যুসেলডর্ফ শহরে মেলা প্রাঙ্গণে ৭০০-রও বেশি স্বেচ্ছাসেবী আনা হয়েছিল৷ ছাদে লাগানো ৩০টি ক্যামেরায় ভিড়ের গতিবিধির প্রতিটি ছবি তোলা হয়েছে৷ প্রত্যেকের মাথার টুপিতে আলাদা ‘বারকোড' ছিল, যাতে তাদের আলাদা করে চেনা যায়৷

অ্যামবুলেন্স-এর কর্মীদের ভিড় ঠেলে এক দিক থেকে অন্য দিকে যেতে কত সময় লাগে – গুরুত্বপূর্ণ এই এক্সপেরিমেন্ট-এর মাধ্যমে সেটাই দেখা হয়েছে৷ গোটা বিশ্বে ইয়ুলিশ কেন্দ্রের গবেষকদের সুনাম রয়েছে৷ সবাই তাঁদের সাফল্যের সুফল পায়৷ আর্মিন সাইফ্রিড বললেন, ‘‘আমরা আমাদের তথ্য আন্তর্জাতিক স্তরে বাকি গবেষকদের সঙ্গে ভাগ করে নেই৷ ওয়েবসাইটেই সবার জন্য তথ্য জমা থাকে৷ সেখান থেকে ভিড়ের গতিবিধির ভিডিও ডাউনলোড করা যায়৷ যত বেশি গবেষক এই তথ্য কাজে লাগিয়ে নিজেদের কাজে উন্নতি আনবেন, আমি ততই খুশি হবো৷''

ফুটবল স্টেডিয়াম, মেলা প্রাঙ্গণ থেকে শুরু করে শহরের মাঝে বিজ্ঞানীরা তাঁদের পরীক্ষা চালিয়ে গেছেন৷ আসল ছবি থেকে কম্পিউটারে অ্যানিমেশন সৃষ্টি করা হয়েছে৷ তাতে দেখা গেছে, লাল জায়গাগুলিতে ভিড়ের চাপ বেশি৷ এই সিমুলেশন থেকে গবেষকরা গুরুত্বপূর্ণ জ্ঞান অর্জন করেছেন৷ যেমন তাঁরা দেখেছেন, ভিড় যত বেশি হয়, মানুষ তাদের নিজস্ব ক্ষমতা হারিয়ে ফেলে৷ আতঙ্ক দেখা দিলে তারা দিশাহারা হয়ে পড়ে৷ স্পষ্ট নির্দেশিকা থাকলে তবেই এমন অরাজকতা এড়ানো সম্ভব৷ সিগেন বিশ্ববিদ্যালয়ের গেবহার্ড রুশ বলেন, ‘‘প্রত্যেকটি মানুষই স্বতন্ত্র, সে অন্যদের সঙ্গে এখনো সমন্বয় করেনি৷ সবাই নিজেকে গড্ডালিকা প্রবাহে ভাসিয়ে দেয়৷ এখন হয় সমষ্টি হিসেবে ভিড়ের মধ্যে মানুষ তার বুদ্ধি খেলিয়ে সমস্যার সমাধান করবে, অথবা বাইরে থেকে তা নিয়ন্ত্রণ করতে হবে৷''

পরীক্ষার মধ্যেই গবেষকরা আচমকা একটা আবিষ্কার করে বসলেন৷ তাঁরা বিশেষ কিছু না ভেবেই মাঝে একটি ছোট থাম বসিয়েছিলেন৷ তার ফলে যা ঘটলো, তা দেখে বেশ অবাক হয়েছেন তাঁরা৷ ইয়ুলিশ গবেষণা কেন্দ্রের আর্মিন সাইফ্রিড বলেন, ‘‘এটা দেখে আমরা বেশ অবাক হলাম যে থাম বসালে সত্যি কাজ হয়৷ মানুষের চলাফেরার পথে কিছু জায়গার দখল নিলে কিন্তু আর জ্যাম এড়ানো যায়৷ এই ফল আমরা স্পষ্ট দেখতে পেলাম৷ এবার তথ্য বিশ্লেষণ করে দেখতে হবে, কোন গতিবেগে বা কতটা ভিড় হলে বাস্তবে কী ঘটে৷ তার জন্য প্রায় ৬ মাস লাগবে৷ কিন্তু খালি চোখে যা দেখলাম, তা সত্যি অবাক করার মতো৷''

ইয়ুলিশ গবেষণা কেন্দ্রের বিজ্ঞানীরা প্রায় এক দশক ধরে মানুষের ভিড় নিয়ে কাজ করছেন৷ তাঁরা সেই কাজ চালিয়ে যাবেন৷ বড় আকারে অনুষ্ঠানে আজকাল যে বিপর্যয় এড়ানো যাচ্ছে, তার পিছনে তাঁদেরও কিছুটা অবদান রয়েছে৷