ভালোবাসার যত্ন
‘ভালোবাসা’-র মানুষকে কাছে পাওয়ার জন্য প্রথমদিকে যেমন আবেগ, উৎসাহ আর আগ্রহ থাকে, ধীরে ধীরে তেমনই তা ম্লান হয়ে যায় যা খুবই স্বাভাবিক৷ তারপরও কীভাবে সম্পর্ককে মধুর, আনন্দময় রাখা যায় – সে বিষয়ে এই ছবিঘরে পাবেন কিছু ‘টিপস’৷
মিলেমিশে কাজ করা
প্রায়ই দেখা যায় স্বামী-স্ত্রী দু’জনে একসাথে বাইরে থেকে ফিরলেন৷ কিন্তু খাবার তৈরি বা সংসারের অন্য কাজে লেগে গেলেন স্ত্রী৷ আর স্বামী টিভি চালিয়ে বসলেন সোফায়৷ এমনটা না করে বরং সংসারের কাজকর্ম দু’জনে মিলেমিশে শেষ করে, পরে একসাথে দু’জন মিলে টিভি দেখুন বা গল্প করুন৷ সারাদিন কে কী করলেন একে অপরেকে জানান৷
ক্রুটি বড় করে না দেখা
একসাথে থাকতে গেলে অনেক সময় ছোটখাটো অভ্যাসগুলো অসুবিধার কারণ হয়ে দাঁড়ায়৷ একজন হয়ত সব সময় মোজা খুলে বিছানায় রেখে দেন৷ অপরজন চুথপেস্টের ঢাকনা লাগাতে যান ভুলে৷ অনেক পরিবারে এ সব ছোটখানো বিষয় নিয়ে অযথা ঝগড়া শুরু হয়৷ তাই এই সব বিষয়গুলো এড়িয়ে চললে জীবন কিন্তু অনেক মধুর হতে পারে৷
স্বীকৃতি
সব মানুষই মাঝে মাঝে তাঁর কাজের স্বীকৃতি চায়, এমনকি সংসারের কাজের ক্ষেত্রেও৷ তাই মাঝে মধ্যে একে অপরকে সে কথা জানান৷ আরো রোম্যান্টিক হয়, যদি কথাটা জানানো যায় ছোট্ট একটি ‘নোট’ লিখে অথবা এসএমএস-এর মারফত৷ দেখবেন পরের দিন কাজের আগ্রহ তো বাড়বেই, তার সঙ্গে আপন মানুষটিকে মনে হবে আরো কাছের৷
প্রশংসা
অনেকদিন একসাথে থাকার ফলে সব কিছুই কেমন যেন সাধারণ ব্যাপার হয়ে যায়৷ তাই বিশেষজ্ঞরা বলেন, নতুন পোশাক বা হেয়ার স্টাইলে আপনার সঙ্গিকে সুন্দর লাগছে – এ কথা বলতে একদম সংকোচ করবেন না৷ আসলে এমন ছোটখাটো প্রশংসার ‘এফেক্ট’ কিন্তু অনেক বড় হয়৷ অর্থাৎ ‘প্রশংসা ছোট তবে তার এফেক্ট বড়’৷
ভালোবাসার স্পর্শ
ভালোবাসা গাছের মতো, যত যত্ন করা যাবে ততই বাড়বে৷ ভালোবাসার স্পর্শে ডালপালা ফলে-ফুলে ভরে যায়, আর অযত্নে যায় শুকিয়ে৷ অনেক দম্পতি মনে করেন, ‘ভালোই তো আছি, আবার ভালোবাসা দেখাতে হবে কেন? অথচ ভালোবাসা দেখালে দাম্পত্য জীবন হতে পারে মধুময়৷ ঠিক গাছের মতোই যত্ন নিন৷ হঠাৎ করেই ফুল বা ছোটখাটো উপহার দিয়ে আপনার প্রিয়া বা প্রিয়তমকে দিন চমকে!
‘হবি’ বা সখ
মাঝে মাঝে কখনো নিজেরা একসাথে এমন কিছু করুন, যাতে অন্য ধরণের গল্প বা আলোচনা হতে পারে৷ একসাথে সাইকেল চালাতে বা হাঁটতে যেতে পারেন৷ খোলা আকাশের নীচে প্রাণ খুলে হাসুন বা কথা বলুন৷ একে অপরের সাথে সব কিছু ভাগাভাগি করার নামই যে বন্ধুত্ব, আর সেটাই তো দীর্ঘ ও সুখি দাম্পত্যের আসল কথা৷
রাগ পুষে রাখতে নেই
রাগ, অভিমান ছাড়া কি দাম্পত্য জীবন মধুর হয়? রাগ, দুঃখ, অভিমান তো থাকবেই৷ কিন্তু তাই বলে রাগ যেন বেশিক্ষণ না থাকে৷ দিনের শেষে রাগ ভুলে অপরের কাছে এগিযে যান৷ রাগ বা মান ভাঙানোর উত্তম সময় সেটা৷ তা না হলে দু’জনকেই হয়ত না ঘুমিয়ে সারাটা রাত কাটাতে হবে, যার প্রভাব পড়বে পরবর্তীতেও৷
কিছুটা দূরত্ব
মাঝে মধ্যে দাম্পত্য জীবনের সব কিছুই একঘেয়েমি মনে হতে পারে৷ তাই স্বামী তাঁর সহকর্মী বা পুরনো বন্ধুদের সাথে কখনো আড্ডায় যেতে পারেন৷ স্ত্রী তাঁর ছেলেবেলার বন্ধু-বান্ধবী বা কাছের কোনো মানুষের সাথে শপিং বা সিনেমা দেখতে যেতে পারেন৷ এতে নিজেদের অনেকটা হালকা মনে হবে৷ মাঝে মাঝে একটু দূরত্ব কিন্তু স্বামী-স্ত্রীর মধ্যে একে-অপরকে কাছে পাওয়ার আনন্দ বাড়িয়ে দেয়৷
বিবাহিত জীবনের জন্য পুরস্কার
দীর্ঘ বিবাহিত জীবনের জন্য বেশ কয়েকটি দেশে পুরস্কার দেওয়ার রীতি রয়েছে৷ পোল্যান্ডের কোনো দম্পতির ৫০ বছর পূর্ণ হলে তাঁদের প্রেসিডেন্ট পদক দেওয়া হয়৷ অ্যামেরিকায় ৫০ বছর হলে হোয়াইট হাউস থেকে শুভেচ্ছা বার্তা পাঠানো হয়৷ আর ইংল্যান্ডে ৬০ বছরের বিবাহবার্ষিকী পালন করা কোনো দম্পতিকে রানির কাছ থেকে বার্তা পাঠানো হয়৷
ঝগড়া এড়িয়ে চলুন!
ঝগড়া অকালমৃত্যুর কারণ হতে পারে৷ ডেনমার্কের কোপেনহাগেন বিশ্ববিদ্যালয়ের বিজ্ঞানীরা গবেষণা করে বের করেছেন যে, যাঁরা খুব বেশি ঝগড়া করেন তাঁদের অকালমৃত্যুর ঝুঁকি অন্যদের তুলনায় দুই থেকে তিনগুণ বেশি৷ কাজেই ঝগড়া এড়িয়ে চলুন!
গুরুত্বপূর্ণ আলোচনা পরে
খাওয়ার আগে কখনো কোনো গুরুত্বপূর্ণ আলোচনায় যাবেন না৷ পারলে মিষ্টি কিছু খেয়ে নেবেন৷ কারণ ওহাইয়ো স্টেট বিশ্ববিদ্যালয়ের বিজ্ঞনীরা গবেষণা করে দেখেছেন যে, শরীরে শর্করার পরিমাণ কম হলে একে-অপরের প্রতি রাগ, ক্রোধ কেমন যেন আক্রমণাত্বক হয়ে ওঠে৷ বলা বাহুল্য, গ্লুকোজ বা শর্করা মানুষের শরীরে জ্বালানির মতো কাজ করে৷