ভারতের নিরাপত্তাকর্মীদের বিরুদ্ধে মানবাধিকার লঙ্ঘনের অভিযোগ
৩১ জানুয়ারি ২০১২সাম্প্রতিককালের দুটি ঘটনাই মর্মান্তিক৷ একটি ভারত-বাংলাদেশ সীমান্তে৷ গরু পাচারের অভিযোগে বাংলাদেশি নাগরিক হাবিবুর রহমান শেখকে নির্মমভাবে মারধর করে সীমান্ত রক্ষী বাহিনী বিএসএফ৷ পরে তাঁকে অবশ্য ছেড়ে দেয়া হয়৷ মারার দৃশ্যের ভিডিও পরে প্রচার করা হয় স্থানীয় টিভি চ্যানেলে কোলকাতা-ভিত্তিক মানবাধিকার সংস্থা মাউসুম এবং হিউম্যান রাইটস ওয়াচ সংগঠনের সহায়তায়৷
দ্বিতীয় ঘটনা ছত্তিশগড়ে৷ মাওবাদী সন্দেহে স্কুল শিক্ষিকা সোনি শোরীকে গ্রেপ্তার করে রাজ্য পুলিশ৷ আদালতের নির্দেশে পুলিশি হেফাজতে থাকাকালীন তাঁর ওপর চলে পাশবিক অত্যাচার ও যৌন নির্যাতন৷ সোনির অভিযোগ, দান্তেওয়াড়ার পুলিশ সুপার অঙ্কিত গর্গের আদেশে এই অত্যাচারের চালানো হয় তাঁর ওপর৷ অসুস্থ সোনি স্থানীয় হাসপাতালে উপযুক্ত চিকিৎসা পর্যন্ত পাননি৷ পরে সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশে সোনিকে স্থানান্তরিত করা হয় কোলকাতা মেডিক্যাল কলেজে ৷ সেখানে ডাক্তারি পরীক্ষায় প্রমাণিত হয়, সোনির ওপর সত্যিই পাশবিক অত্যাচার করা হয়েছিল৷
পরিহাসের বিষয়, সেই পুলিশ অফিসার অঙ্কিত গর্গকে শাস্তির বদলে এবছর প্রজাতন্ত্র দিবসে দেয়া হয় সাহসিকতার জন্য রাষ্ট্রপতির পুরস্কার৷
হিউম্যান রাইটস ওয়াচ ঐ দুটি ঘটনার ওপর রিপোর্ট সরকারকে দিলে কেন্দ্রীয় সরকার বিএসএফের ৮জন সদস্যকে সাসপেন্ড করে৷ ভবিষ্যতে তাদের সংযত থাকতে বলে৷ হিউম্যান রাইটস ওয়াচ এটাকে যথেষ্ট বলে মনে করেনা৷ দায়ী ব্যক্তিদের বিরুদ্ধে মামলা রুজু করার দাবি জানায়৷ বিচারের দাবি জানানো হয়৷
হিউম্যান রাইটস ওয়াচের দক্ষিণ এশিয়ার অধিকর্তা মীনাক্ষী গাঙ্গুলি ডয়চে ভেলেকে বললেন, কেউ কোনো অপরাধ করলে যেমন তার এফ আই আর করা হয়, তদন্ত হয়, বিচার করা হয়, এদের ক্ষেত্রেও তেমনটা করা উচিত৷ এখানে পুলিশ একটা অভ্যন্তরীণ সিস্টেমে সেটা করে৷ সেটা স্বচ্ছ নয়৷ আমরা বুঝতে পারিনা ঠিকমত অ্যাকশন নেয়া হয়েছে কিনা৷ বন্ধ না করলে এটা একটা কালচার হয়ে দাঁড়াবে৷ ভারত সরকার কখনই সেটা চাইবেনা যে তার নিরাপত্তা বাহিনী এইভাবে আইন লঙ্ঘন করুক এবং ভারতের ভাবমূর্তি বহির্বিশ্বে ক্ষুন্ন হোক৷ দ্বিতীয়ত, অত্যাচার করে স্বীকারোক্তি আদায় করা আদালতে গ্রাহ্য নয়৷
প্রতিবেদন: অনিল চট্টোপাধ্যায়, নতুনদিল্লি
সম্পাদনা: আব্দুল্লাহ আল-ফারূক