ভারতের ছিল আইটি, রাশিয়া দেখছে ইঞ্জিনিয়ারিং
১৩ মার্চ ২০১১স্বপ্নটা দেখছেন বোয়িং রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট সের্গেই ক্রাভচেঙ্কো৷ বলছেন, ভারত যেমন ২৫ বছর আগে আইটি প্রযুক্তির বিকাশ ঘটানোর সুযোগ পেয়েছিল, তেমনি রাশিয়াও ইঞ্জিনীয়ারিং'এর ক্ষেত্রে তার মানবসম্পদ ব্যবহার করতে পারে৷ ক্রাভচেঙ্কোর এই মন্তব্যের কারণ শুধু মার্কিন ভাইস প্রেসিডেন্ট জো বাইডেনের রাশিয়া সফরই নয়, এর ভিত্তি যুক্তরাষ্ট্রের বোয়িং কোম্পানির একটি ২৭ বিলিয়ন ডলারের পরিকল্পনা৷
বোয়িং রাশিয়া থেকে যন্ত্রাংশ এবং আরএ্যান্ডডি - অর্থাৎ গবেষণা ও বিকাশ সংক্রান্ত পরিষেবা - ক্রয় করতে চায়৷ রুশ প্রযুক্তিবিদরা মস্কোর কাছে স্কলকোভোয় বসে কম্প্যুটারে নকশা করবেন৷ সেই নকশা ক্ষণিকের মধ্যে আমেরিকা-ইউরোপের বোর্ডরুমে পৌঁছে যাবে৷ এবং সময়ের ব্যবধান থাকায় ২৪ ঘণ্টা কাজ হবে৷ মূল কথা, রাশিয়ায় ভালো ইঞ্জিনীয়ার, গণিতজ্ঞ এবং কম্প্যুটার বিজ্ঞানীদের কোনো অভাব নেই৷ দ্বিতীয়ত, তাদের মাইনে পশ্চিমের তুলনায় এক ভগ্নাংশ৷ তৃতীয়ত, রুশীরা কিম্ভূত আকারের পাইপ থেকে শুরু করে সামরিক সরঞ্জাম অবধি সব কিছু বানাতে ওস্তাদ৷ - এ'সবের সঙ্গে যদি পশ্চিমের ব্যবসাবুদ্ধি যুক্ত হয়, তবে তাদের মারে কে!
বামিয়ানে বুদ্ধের বদলে স্কি খেলা
আফগানিস্তানের বামিয়ান প্রদেশটি বছর দশেক আগে নাম করে ফেলে কেননা তালেবানরা সেখানকার বুদ্ধমূর্তিগুলিকে বিস্ফোরক দিয়ে উড়িয়ে দেয়৷ ঘটনাটাকে মানবসংস্কৃতির পক্ষে একটা ট্র্যাজেডি বলা চলে৷ অথচ বামিয়ান আফগানিস্তানের কেন্দ্রে, রাজধানী কাবুল থেকে মাত্র ১৩০ কিলোমিটার পশ্চিমে৷
বামিয়ানের অপর একটি বিশেষত্ব সদ্য আবিষ্কৃত হয়েছে অথবা হচ্ছে৷ সেখানে পাহাড়ের ঢালগুলোতে স্কি খেলা চলে৷ সেখানে তেমন ‘পিস্টে'-ও নেই, স্কি-লিফট'ও নেই, এবং ‘আপ্রে-স্কি' মজা করার বার-রেস্তরাঁও নেই৷ কিন্তু আছে অপরূপ প্রাকৃতিক দৃশ্য, এবং যথেচ্ছ স্কি করার অবাধ স্বাধীনতা৷ আট হাজার ফুট উচ্চতায় গুঁড়ো পাউডারের মতো বরফও থাকে বেশ কয়েকদিন ধরে৷
কাজেই কাবুলের কিছু বিত্ত- এবং প্রগতিশীল আফগান - স্বল্প কয়েকজন মহিলা সমেত - বামিয়ানে স্কি খেলার মজা আবিষ্কার করে ফেলেছেন৷ ওদিকে স্বয়ং আগা খানের ফাউন্ডেশন এবং নিউজিল্যান্ড সরকার মিলে ১২ লক্ষ ডলারের একটি প্রকল্প চালু করেছে এখানে স্কি খেলা এবং পর্যটনের উন্নতির জন্য৷ কোহ্-ই-বাবার তিনটি পর্বতশিখর থেকে স্কি খেলার ঢালগুলি যখন নামে, তখন ঠিক তার উল্টোদিকে দেখা যায় ধ্বংসপ্রাপ্ত বামিয়ান বুদ্ধর শূন্য গহ্বরটি৷ অথচ বস্তুত বামিয়ানে তালেবানদের কোনো দৌরাত্ম্য নেই৷
তীর্থ আছে, তীর্থযাত্রী আছে, শুধু হোটেল নেই
ইরাকে শিয়াদের পবিত্র শহর নাজাফের এই দশা৷ ইরান থেকে একটির পর একটি পর্যটক-তীর্থযাত্রীদের দল আসছে তাদের ন'দিনের সফরে৷ ঐ বিপুল সংখ্যার এক-দশমাংশকেও থাকতে দেবার ক্ষমতা নেই নাজাফের ১৩০টি হোটেলের৷ এক ঘরে চার পাঁচজন অতিথি, হোটেলের লবিতে শোয়া, শুধুমাত্র বাথরুম চানের জায়গা ব্যবহার করার অধিকার, এ'ভাবেই কাজ চলে৷ কাজেই নাজাফের প্রাদেশিক পরিষদ বছর দুয়েক আগে নতুন হোটেল তৈরীর পারমিট দিতে শুরু করেন৷ আগামী তিন বছরের মধ্যে নাজাফে হোটেল ক্যাপাসিটি বেড়ে দ্বিগুণ হবে বলে আশা করা হচ্ছে৷ একটির বদলে দশটি ফোর স্টার হোটেল হবে, যদিও সেখানে বার কি সুইমিং পুল থাকবে না৷ তা'তে কিছু এসে যায় না৷ কেননা তীর্থযাত্রা হল ইরাকি পর্যটন শিল্পের মেরুদণ্ড, বলেছেন ইরাকের পর্যটন মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র আব্দুল তালাকানি৷
প্রতিবেদন: অরুণ শঙ্কর চৌধুরী
সম্পাদনা: সুপ্রিয় বন্দোপাধ্যায়