1. কন্টেন্টে যান
  2. মূল মেন্যুতে যান
  3. আরো ডয়চে ভেলে সাইটে যান

ভারতে পাচার হচ্ছে রোহিঙ্গা

৫ জানুয়ারি ২০১৮

ভারতের মেওয়ায় রোহিঙ্গা শরণার্থী শিবির প্রতিমাসেই নতুন নতুন অবৈধ রোহিঙ্গারা আসছেন৷ বাংলাদেশের শরণার্থী শিবির থেকে তাদের ভারতে বিক্রি করে দিচ্ছে দালালরা৷

https://p.dw.com/p/2qOL6
Indien Rohingya-Flüchtling beobachtet Myanmars Tragödie bei WhatsApp
ছবি: DW/Ashish Malhotra

তাদেরই একজন আবদুল রহমান৷ রাখাইনে সবুজ ক্ষেতের হাতছানি তাঁর কাছে এখন কেবলই স্মৃতি৷ সেই স্মৃতি বুকে নিয়ে ঝাপসা চোখে তিনি ভারতের মথুরায় ন্যাকড়া কুড়াতেন৷

রাখাইন থেকে প্রথমে বাংলাদেশ৷ এরপর দশ হাজার টাকায় দালাল তাঁকে ভারতে পাচার করে দেয়৷ উত্তরাঞ্চলের মথুরায় মনিব তাঁকে ন্যাকড়া কুড়ানোর কাজ দেন৷ থাকতেন পলিথিনের তৈরি ভাড়া বাড়িতে৷ সেখান থেকেই তাঁকে উদ্ধার করে ভারতীয় কর্তৃপক্ষ৷

শুধু রহমানই নন, তার সঙ্গে আরো সাতটি পরিবারকে বাংলাদেশের শরণার্থী শিবির থেতে পাচার করে দেয়া হয় ভারতে৷

রোহিঙ্গা শিশুদের খোঁজ নিচ্ছে না কেউ

‘‘মনিব আমাকে মাথা গোঁজার ঠাই দেন৷ পেটে দু‘টো দানাপানি পড়ে৷'' রয়টার্সকে দেয়া সাক্ষাৎকারে বলছিলেন ৪৫ বছর বয়সি চার সন্তানের এই জনক৷

‘‘দালাল আমাকে বলেছিল যে, ভারতে এলে ভালো থাকা যাবে৷''

বাংলাদেশের শরণার্থী শিবিরগুলোতে মানবপাচারকারীদের উৎপাত সম্পর্কে আগেই সতর্ক করেছিল জাতিসংঘ৷ ভারতে এই চুক্তিভুক্ত শ্রমিকদের উদ্ধার করার পর দাস হিসেবে এদের চালান করে দেয়ার বিষয়টি সামনে এলো৷

দাসপ্রথার অনুরূপ এমন চুক্তিভুক্ত শ্রম ১৯৭৬ সালেই নিষিদ্ধ করেছে ভারত৷ কিন্তু এখনো লাখো শ্রমিক ক্ষেত খামার, ইটভাটা, পতিতালয়, অথবা গৃহে কাজ করছেন৷

তবে কর্তৃপক্ষ উদ্ধার করলে অনেকে নগদ টাকা, জমি বা ঘর ক্ষতিপূরণ পান, তবে কেবল ভারতীয় হলেই৷ রোহিঙ্গারা যেহেতু অবৈধ অনুপ্রবেশ করেছেন, তাই তাদের ক্ষেত্রে কী হবে তা অনিশ্চিত৷

কেউ কেউ মনে করছেন, তাদের বিরুদ্ধে আইনি প্রক্রিয়া শুরু হতে পারে৷

এ পর্যন্ত বাংলাদেশে প্রায় দশ লাখ রোহিঙ্গা অনুপ্রবেশ করেছেন, যার মধ্যে গেল বছরের ২৫ আগষ্টের পর থেকেই গিয়েছেন প্রায় সাড়ে ছয় লাখ৷ অন্যদিকে গেল এক দশকে ভারতে প্রবেশ করেছেন প্রায় ৪০ হাজার রোহিঙ্গা

দিল্লি থেকে ১০০ কিলোমিটার দক্ষিণে মেওয়াতে ভারতের রোহিঙ্গা শরণার্থী শিবির৷ সেখানেই উঠেছেন রহমান৷ সেখানে প্রতি মাস-দু'মাসে নতুন নতুন রোহিঙ্গা শরণার্থীরা যুক্ত হচ্ছেন৷

গেল মাসেও ১৩ জনকে উদ্ধার করে আনা হয়েছে৷

রহমান অবশ্য ভারতে গিয়েছেন আরো বছর চারেক আগে, ২০১৩ সালে৷ চার বছর পর যখন উদ্ধার হলেন, তখন তার হাতে ফুটো কড়িও নেই৷ কারণ, মনিব যে পয়সায় তাঁকে কিনেছেন, তা তাঁর বেতন থেকে কেটে রাখা হতো৷

একই অবস্থা তার সঙ্গে উদ্ধার হওয়া বাকিদেরও৷ ২২ বছর বয়সি সাদিক হোসেন বলেন, ‘‘মনিবের কাছে আমার এখনো আরো ৫ হাজার রূপী ঋণ আছে৷''

তাই স্থানীয়রা শরণার্থীদের জন্য জায়গা দিলেও ঘর বানানোর পয়সা নেই তাদের কাছে৷

রোহিঙ্গারা মুসলিম বলে ভারতে তাদের কাজ পাওয়া খুব কঠিন৷ পাকিস্তানের জঙ্গি সংগঠনের সঙ্গে যোগাযোগ থাকতে পারে এমন যুক্তিতে নিরাপত্তার কারণ দেখিয়ে তাদের ফেরত পাঠানোর বা ভারত থেকে তাড়িয়ে দেয়ার আইনি উপায় খুঁজছে কর্তৃপক্ষ৷

সম্প্রতি দিল মোহাম্মদ নামের এক রোহিঙ্গাকে ফেরত পাঠানো হয়েছে৷ তিনি জম্মুতে ১১ হাজার রুপী বেতনে চাকরি করতেন৷

জেডএ/এসিবি (রয়টার্স)

স্কিপ নেক্সট সেকশন এই বিষয়ে আরো তথ্য