ভারতে নিষিদ্ধ ৫৯ চীনা অ্যাপ
৩০ জুন ২০২০চীনের ৫৯টি অ্যাপ আর ভারতে ব্যবহার করা যাবে না। এই তালিকায় আছে টিকটক, ইউসি ব্রাউজার, শেয়ারইট, ক্যামস্ক্যানার, উইচ্যাট, ক্ল্যাশ অফ কিংস, ডিইউ ব্যাটারি সেভার, এমআই কমিউনিটি, ক্লাবফ্যাক্টরি, এমআই ভিডিও কল ইত্যাদি।
তথ্যপ্রযুক্তি মন্ত্রী রবিশঙ্কর প্রসাদ বলেছেন, ''ভারতের নিরাপত্তা, প্রতিরক্ষা, সার্বভৌমত্ব ও সংহতি বজায় রাখার জন্য এবং ভারতীয়দের তথ্য ও গোপনীয়তা রক্ষা করতে এই পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে।''
ইলেকট্রনিক্স এবং তথ্য ও প্রযুক্তি মন্ত্রক বিবৃতি দিয়ে জানিয়েছে, স্বরাষ্ট্র মন্ত্রকের সাইবার ক্রাইম বিভাগের তরফ থেকে বিস্তারিত রিপোর্ট তাঁদের কাছে এসেছে। অ্যাপ ব্যবাহারকারীরাও তাঁদের কাছে অভিযোগ জানিয়েছেন। সব কিছু খতিয়ে দেখে দেশের স্বার্থ ও ১৩০ কোটি লোকের তথ্য ও গোপনীয়তার অধিকার সুরক্ষিত রাখতেই এই পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে। অর্থাৎ, অভিযোগ হলো, এই সব অ্যাপের মাধ্যমে নানা তথ্য চীনের কাছে চলে যাচ্ছিল।
বিশেষজ্ঞদের দাবি, ভারত এই সিদ্ধান্ত নেওয়ায় চীনা কোম্পানিগুলির ক্ষতি হবে। ভারতে ১০ কোটি লোকের কাছে টিকটক অ্যাপ ছিল। এমনকী সরকারও টিকটক অ্যাপ ব্যবহার করত। তাদের ১১ লাখ ফলোয়ার ছিল। তবে সেই টিকটক অ্যাপ মুছে ফেলা হয়েছে। অন্য অ্যাপগুলিও কমবেশি জনপ্রিয় ছিল। এখন অন্য দেশও যদি ভারতের মতো এই সব অ্যাপের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়, তা হলে চীনা কোম্পানিগুলি বিপাকে পড়বে।
বিজেপি সূত্রে দাবি করা হয়েছে, লাদাখের ঘটনার পর ভারত এই ভাবে প্রত্যাঘাত করল। এখন নানাভাবে প্রত্যাঘাত করা যায়। ভারত এই ডিজিটাল পথ বেছে নিয়েছে। যাতে চীন বুঝতে পারে, নানান পথে সফলভাবে প্রত্যাঘাতের ক্ষমতা ভারতের আছে। পাকিস্তানের বিরুদ্ধে সার্জিক্যাল স্ট্রাইক করা হলেও চীনের বিরুদ্ধে ডিজিটাল স্ট্রাইক করা হয়েছে।
এই ৫৯টি অ্যাপ যাতে ভারতে কেউ ব্যবহার করতে না পারেন, তা কী করে নিশ্চিত করা যাবে? অনেক সময় এই অ্যাপ ফোনের মধ্যে প্রি লোডেড এবং বাই ডিফল্ট অবস্থায় থাকে। সেগুলিকে ডিলিট করা বা মোছা যায় না। সেক্ষেত্রে ইন্টারনেট পরিষেবা যে সব সংস্থা দেয়, তাঁদের বলা হবে, ওই সব অ্যাপ ব্যবহার করার ক্ষেত্রে নেট না দিতে। তাছাড়া অ্যাপ স্টোর থেকে ওই অ্যাপ ডাউনলোড করা বন্ধ করে দেওয়া হবে। ফলে ভবিষ্যতে কেউ ওই সব অ্যাপ ডাউনলোড করতে পারবেন না।
টিকটকের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, তাঁরা সরকারি প্যানেলের কাছে গিয়ে তাঁদের মতামত জানাবে। গোপনীয়তার অধিকার বজায় রাখার জন্য তাঁরা বদ্ধপরিকর। এ জন্য ভবিষ্যতে যা করার তাঁরা করবে।
সরকারি স্তরে চীনা জিনিস কেনার ওপরেও নিষেধাজ্ঞা জারি করার কাজ শুরু হয়েছে। উপভোক্তা, খাদ্য ও গণবন্টনমন্ত্রী রামবিলাস পাসোয়ান নির্দেশ দিয়েছেন, তাঁর মন্ত্রক কোনও চীনা জিনিস কিনবে না। সরকার ইতিমধ্যে ই কমার্স সংস্থাগুলিকে নির্দেশ দিয়েছে, তারা যেন প্রতিটি জিনিস কোথায় তৈরি হয়েছে, তা জানায়। এর আগে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রকের অধীনে যাবতীয় সংস্থায় বিদেশি ব্র্যান্ডের জিনিস কেনা নিষিদ্ধ করা হয়েছে।
এই অবস্থায় মঙ্গলবার বিকেল চারটের সময় জাতির উদ্দেশে ভাষণ দেবেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। তিনি চীন ও করোনা নিয়ে কী বলেন, তার দিকে নজর থাকবে দেশের লোকের।
জিএইচ/এসজি(পিটিআই, এএনআই)