1. কন্টেন্টে যান
  2. মূল মেন্যুতে যান
  3. আরো ডয়চে ভেলে সাইটে যান

ভারতে ধর্মীয় অসহিষ্ণুতা

অনিল চট্টোপাধ্যায়, নতুন দিল্লি২ ডিসেম্বর ২০১৫

ভারতে অসহিষ্ণুতা ইস্যু নিয়ে বিতর্ক যেভাবে বাড়ছে, তা শেষ পর্যন্ত কোথায় গিয়ে দাঁড়াবে – তা নিয়ে এখন ঘোর দুশ্চিন্তা৷ কারণ বিষয়টির রাজনীতিকরণ সমাজকে ক্রমশই বিভাজনের দিকে ঠেলে দিচ্ছে৷ সংসদের ভেতর ও বাইরেও চোখে পড়ছে তার ছবি৷

https://p.dw.com/p/1HFl3
Neu Delhi Proteste von Christen
ছবি: Reuters/A. Mukherjee

অসহিষ্ণুতা ইস্যু নিয়ে এখন সরকার ও বিপক্ষ দলগুলির মধ্যে চলেছে রাজনৈতিক দড়ি টানাটানি৷ সংসদের ভেতরে ও বাইরে চলেছে অভিযোগ-পাল্টা অভিযোগ৷ একে আরো ঝাঁঝালো করে তুলছে রাজনৈতিক নেতা, মন্ত্রী থেকে লেখক, শিল্পী ও বলিউড তারকাদের আল-টপকা মন্তব্য৷ আর ভয়টা এইখানেই৷

কংগ্রেস ভাইস-প্রেসিডেন্ট রাহুল গান্ধী মঙ্গলবার সংসদে গলা ফাটিয়েছেন এই বলে যে, অসহিষ্ণুতার প্রতিবাদ করলে মোদী সরকারের কাছে সেটা নাকি দেশদ্রোহীতার পর্যায়ে পড়ে৷ অথচ অসহিষ্ণুতার বিষয়ে প্রধানমন্ত্রী স্বয়ং নীরব রয়েছেন কেন? বিপক্ষ দলের এক নেতা বিষয়টিকে জাতিসংঘে তোলার কথাও বলেছেন৷ স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী রাজনাথ সিং সাফাই দিয়েছেন, ১২৫ কোটি জনসংখ্যার দেশে দু-একটা বিক্ষিপ্ত ঘটনা ঘটতেই পারে, সেটার বিহিত করা হবে৷ কিন্তু সেটাকে বুদ্ধিজীবী মহলের একাংশ যেভাবে বাড়িয়ে চড়িয়ে দেখাচ্ছেন, সেটা কি মোদী সরকারকে হেয় করার জন্য? বলিউড তারকা আমির খান অসহিষ্ণুতার আবহে দেশ ছেড়ে যাবার কথা বলায় তাঁর সঙ্গে গলা মেলাতে এগিয়ে আসেন শাহরুখ খান, শলমান খানের মতো মেগাস্টার এবং এ. আর. রহমানের মতো সংগীতকার৷ এখানেও বিভাজন৷ কারণ পাল্টা তোপ দেগেছেন অনুপম খের, প্রিয়াঙ্কা চোপরার মতো তারকারা৷

কথা হচ্ছে, একটা বহুত্ববাদী দেশে এই ধরণের অসহিষ্ণুতার ঘটনা নতুন নয়৷ ভারতের ইতিহাস ঘাটলে দেখা যাবে এই রকম অ-সহনশীলতা আগেও ছিল, এখনও আছে৷ অযোধ্যায় রামজন্মভূমির ওপরে বাবরি মসজিত নির্মাণ, হিন্দু মৌলবাদীদের হাতে তার ধ্বংস কিংবা দেশভাগের সময় সাম্প্রদায়িক দাঙ্গা, শিখধর্মের অপমানের বদলা নিতে প্রধানমন্ত্রী ইন্দিরা গান্ধীকে হত্যা, ১৯৯৩ সালে মুম্বই দাঙ্গা, জরুরি অবস্থা ঘোষণা, ২০০১ সালে গুজরাটের গোধরা গণহত্যা, অতি সম্প্রতি উত্তর প্রদেশের দাদরিতে গোমাংস নিয়ে গণপিটুনিতে মহম্মদ আখলাকের মৃত্যু, যুক্তিবাদী লেখক কালবুর্গির খুন হওয়ার মতো ঘটনা ঘটছে, যে দলই সরকারে থাকুক না কেন৷ তবে হ্যাঁ, দেশে-বিদেশে ভারতের ধর্মনিরপেক্ষতার পরিচয়কে সেজন্য কাঠগোড়ায় দাঁড়াতে হয়েছে এবং হবে সন্দেহ নেই৷ সবথেকে বড় কথা, ধর্মীয় অসহিষ্ণুতা নিয়ে দেশের রাজনৈতিক দলগুলিকে দাবা খেলা বন্ধ করতে হবে৷ প্রতিবাদ এক কথা আর রাজনৈতিক ফায়দা লোটা অন্য জিনিস৷ প্রখ্যাত অর্থনীতিবিদ বিবেক দেবরায়ের সঙ্গে আমি একমত যে, ধর্মীয় অসহনশীলতা, জাতপাত, লিঙ্গ বৈষম্য কিংবা মত প্রকাশের স্বাধীনতাকে যদি দাড়িপাল্লায় মাপা যায়, তাহলে হালের ঘটনাবলি সত্যিই কি মাত্রা ছাড়িয়ে গেছে? এটা কি একটা সাময়িক প্রতিক্রিয়া? যা কিনা যথাসময়ে থিতিয়ে যাবে?

ভারত কি সত্যিই অসহিষ্ণু হয়ে উঠছে? জানিয়ে দিন আপনার মন্তব্য, নীচের ঘরে৷

স্কিপ নেক্সট সেকশন এই বিষয়ে আরো তথ্য

এই বিষয়ে আরো তথ্য

আরো সংবাদ দেখান