ভারতে তৈরি ‘ভেজাল' কফ সিরাপে আবার বৈশ্বিক সতর্কতা
৮ আগস্ট ২০২৩গত দশ মাসে ভারতে তৈরি কফ সিরাপের ওপর এটি পঞ্চম ‘নিষেধাজ্ঞা'৷ ২০২২ সালে গাম্বিয়া এবং উজবেকিস্তানে অন্তত ৮৯ জন শিশুর মৃত্যুর জন্য দায়ী করা হয় ভারতের মেইডেন ফার্মাসিউটিক্যালসের তৈরি কফ সিরাপকে৷ তারপর ডাব্লিউএইচও-র সতর্কতার মুখে কফ সিরাপ রপ্তানির বিষয়ে ভারতীয় কর্তৃপক্ষ সতর্ক হলেও ওষুধের বাজারে ভারতের কিছু কোম্পানির দুর্নাম কাটেনি৷
তাই রিমান ল্যাবস নামের আরেকটি ভারতীয় কোম্পানির নাম জড়ায় ক্যামেরুনের শিশু-মৃত্যুর ঘটনায়৷ ক্যামেরুন সরকারের অভিযোগ এবং ডাব্লিউএইচওর সতর্কবার্তার জেরে কফ সিরাপটি পরীক্ষা করে দেখে ভারতীয় কর্তৃপক্ষ৷ সিরাপে সত্যি সত্যি অতিরিক্ত টক্সিন পেয়ে কফ সিরাপ রপ্তানির আগে যথাযথ পরীক্ষা-নিরীক্ষার পর অনুমোদন দেয়ার সিদ্ধান্ত নেয়া হয়৷
তারপরও গত মার্চে উজবেকিস্তানে আবার একই অভিযোগ ওঠে৷ ১৮ জন শিশুর মৃত্যুর জন্য মারিয়ন বায়োটেক কোম্পানির কফ সিরাপকে দায়ী করায় লাইসেন্স বাতিল করে ওই কোম্পানির কয়েকজন কর্মীকে জেলেও পাঠানো হয়৷
তা সত্ত্বেও থামানো যায়নি ডাব্লিউএইচওর পঞ্চম সতর্কবার্তা৷ সেবন করলে ‘মারাত্মকভাবে আহত হওয়া বা মৃত্যুর' ঝুঁকি রয়েছে জানিয়ে ভারতে তৈরি কফ সিরাপের বিষয়ে তাই আবার সতর্ক করেছে জাতিসংঘের এই স্বাস্থ্য বিষয়ক সংস্থা৷
সোমবারের এই সতর্কতা ‘কোল্ড আউট' নামের একটি কফ সিরাপের কারণে৷
ফৌর্টস ল্যাবোরেটরিজকে দিয়ে সিরাপটি তৈরি করিয়েছিল ভারতের আরেক কোম্পানি ড্যাবিলাইফ ফার্মা৷
ডাব্লিউএইচও জানিয়েছে, ইরাকে রপ্তানি করা এই ঔষধে ০.২৫% ডায়েথিলিন এবং ২.১% ইথাইলিন পাওয়া গেছে৷ এ দুটি উপাদান সর্বোচ্চ ০.১০ % থাকলে তা সহনীয় মাত্রায় আছে বলে ধরে নেয়া হয়৷ দুটি উপাদানই অনেক বেশি থাকায় ‘কোল্ড আউট' সেবনে ‘‘তলপেটে ব্যথা, বমি, ডায়রিয়া, প্রস্রাবে অসুবিধা, মাথা ব্যথা, মানসিক অবস্থার পরিবর্তন, এমনকি কিডনির বড় রকমের ক্ষতি হতে পারে এবং এ কারণে মৃত্যুও হতে পারে'' জানিয়ে ডাব্লিউএইচও এই ঔষধ সেবনের বিষয়ে সবাইকে সতর্ক থাকতে বলেছে৷
ভারতের স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়কে উদ্ধৃত করে ব্লুমবার্গ জানিয়েছে, ইরাকের পরীক্ষাগারে ‘ভেজাল' ধরা পড়ার পর বাজার থেকে সব ঔষধ বাজেয়াপ্ত করা হয়েছে৷
তবে গত মাসে ড্যাবিলাইফ ফার্মার ভাইস প্রেসিডেন্ট বালা সুরেন্দ্রন ব্লুমবার্গকে জানান, ‘সাব কন্ট্রাক্ট'-এর মাধ্যমে ‘কোল্ড আউট' তৈরির দায়িত্ব এখন নতুন একটি কোম্পানিকে দেয়া হয়েছে৷ তিনি দাবি করেন, নতুনভাবে পরীক্ষা করে দেখা গেছে ‘কোল্ড আউট'-এ কোনো উপাদানই প্রয়োজনের অতিরিক্ত নেই৷
নিধি সুরেশ/ এসিবি