ভারতে করোনা আক্রান্তের রেকর্ড, মৃত্যু দুই লাখ ছাড়ালো
২৮ এপ্রিল ২০২১ভারতে প্রতিদিনই করোনার নতুন রেকর্ড হচ্ছে। গত ২৪ ঘণ্টায় তিন লাখ ৬০ হাজার মানুষ করোনায় আক্রান্ত হয়েছেন। মারা গেছেন তিন হাজার ২৯৩ জন। করোনার প্রকোপ শুরু হওয়ার পর থেকে ভারতে এই রোগে মৃতের সংখ্যা দুই লাখ ছাড়ালো। আক্রান্ত হয়েছেন এক কোটি ৭৯ লাখ মানুষ।
দিল্লির অবস্থা ভয়াবহ। গত ২৪ ঘণ্টায় ২৪ হাজারের বেশি মানুষ আক্রান্ত হয়েছেন। মারা গেছেন ৩৮১ জন। দিল্লিতে হাসপাতালে চিকিৎসা না পেয়ে মানুষ মারা যাচ্ছেন। অক্সিজেনের সংকট আগের মতোই তীব্র। শুধু দিল্লি নয়, সারা ভারতের অবস্থা একই রকম।
দিল্লির ঘটনা
মঙ্গলবার রাতে আলাউদ্দিনকে হাসপাতালে ভর্তি করার জন্য তার আত্মীয়, অফিসের সহকর্মীরা প্রচুর চেষ্টা করেছিলেন। পরেননি। কোনো হাসপাতালে বেড পাননি তারা। আলাউদ্দিন তাদের চেষ্টার হাত থেকে রেহাই দিয়ে চলে গেছেন। আলাউদ্দিন চাকরি করতেন গুরুগ্রামে একটি এডুকেশনাল কনসালটেন্সি অফিসে।
বিশাখাপত্তনমের অবস্থা
অন্ধ্র প্রদেশে দেড় বছরের মেয়েকে নিয়ে বাবা-মা অ্যাম্বুলেন্সে অপেক্ষা করছিলেন। কিং জর্জ হাসপাতালের সামনে। হাসপাতাল ভর্তির জন্য দেরি করছিল। মেয়ের অবস্থা খারাপ হচ্ছিল। বাবা এসওএস করেন, ''মেয়েকে বাঁচান।'' একঘন্টা পর হাসপাতাল যখন ভর্তি করতে চাইল, তখন মেয়ে জীবনের বন্ধন কাটিয়ে চলে গেছে।
পশ্চিমবঙ্গের অবস্থা
ডিডাব্লিউর প্রতিনিধি স্যমন্তক ঘোষ কলকাতা থেকে জানাচ্ছেন, সেখানে যত মানুষের করোনা পরীক্ষা হচ্ছে, তার অর্ধেকের পরীক্ষার ফল পজিটিভ আসছে। চিকিৎসকরা মনে করছেন, যাদের করোনা পরীক্ষা হয়নি, তাদের মধ্যেও অনেকে করোনায় আক্রান্ত। করোনার প্রথম ঢেউয়ে কলকাতা সহ শহরগুলিতে মানুষ আক্রান্ত হলেও গ্রামের দিকে বেশি মানুষ আক্রান্ত হননি। এবার ছবিটা বদলে গেছে। উত্তর থেকে দক্ষিণবঙ্গ, সব জায়গায় গ্রামের মানুষও করোনায় আক্রান্ত হচ্ছেন। অনেককে জেলা হাসপাতাল থেকে কলকাতায় রেফার করা হচ্ছে। কিন্তু কলকাতায় বেড নেই বলে তারা আসতে পারছেন না।
স্যমন্তক জানিয়েছেন, কলকাতাতেও হাসপাতালে বেড পাওয়া যাচ্ছে না। অক্সিজেনের অভাব। পরিস্থিতি দিল্লির মতো অতটা খারাপ না হলেও বেশ চিন্তাজনক। রাজ্য সরকার সব হাসপাতালে ৬০ শতাংশ বেড করোনা রোগীর চিকিৎসার জন্য রাখতে বলায় পরিস্থিতি একটু ভালো হয়েছে। কিন্তু সকালে কোনো হাসপাতালে বেড খালি বলে জানালে দুপুরের মধ্যে তা ভরে যাচ্ছে।
অনীশ দেবের মৃত্যু
করোনায় আক্রান্ত হয়ে মারা গেলেন পশ্চিমবঙ্গের অন্যতম প্রধান কল্পবিজ্ঞান লেখক অনীশ দেব।
তিনি হাসপাতালে ভেন্টিলেশনে ছিলেন। আনন্দবাজার জানাচ্ছে, তার চিকিৎসার জন্য প্লাজমার দরকার হয়েছিল। মঙ্গলবার রাতে নেটমাধ্যমে সেই আবেদনের বেশ কয়েকঘণ্টা পর প্লাজমা জোগাড় হয়। ততক্ষণে তার প্রয়োজন মিটে গেছে।
কৌশিক গঙ্গোপাধ্যায়ের করোনা
চিত্র পরিচালক কৌশিক গঙ্গোপাধ্যায় করোনায় আক্রান্ত। আনন্দবাজার জানাচ্ছে, তিনি বোলপুরে শুটিং করছিলেন। ২৪ তারিখ কলকাতায় ফেরেন। তারপর করোনা ধরা পড়ে। ছবির অভিনেতা ঋত্বিক খাবারে স্বাদ পাচ্ছিলেন না। এখন তা ফিরে পেয়েছেন। করোনা পরীক্ষার ফলের জন্য অপেক্ষা করছেন। অভিনেত্রী সোহিনী সরকার নিভৃতবাসে আছেন।
জিএইচ/এসজি(পিটিআই, এনডিটিভি)