বিচার বিভাগীয় সহযোগিতা
২৬ জুন ২০১৩বাংলাদেশের সুপ্রিম কোর্টের সব থেকে প্রবীণ এবং একমাত্র হিন্দু বিচারপতি সুরেন্দ্র কুমার সিনহার নেতৃত্বে পাঁচ সদস্যের বিচার বিভাগীয় এক প্রতিনিধিদল ভারতীয় সুপ্রিম কোর্টের প্রধান বিচারপতি আলতামাস কবির এবং অন্য দু'জন বিচারপতির সঙ্গে বৈঠককালে বাংলাদেশের কোটা-বদ্ধ বিচার বিভাগের নিয়ম-শৃঙ্খলার গুণগত উৎকর্ষ বাড়াতে ভারতে প্রশিক্ষণলাভের সুযোগ দেবার প্রস্তাব দেন৷
ভারতীয় বিচারপতিদের রাজ্য জুডিশিয়াল অ্যাকাডেমি এবং জাতীয় জুডিশিয়াল অ্যাকাডেমির মাধ্যমে ট্রায়াল কোর্ট থেকে সুপ্রিম কোর্টের স্তর পর্যন্ত যেভাবে ট্রেনিং দেয়া হয়, তাতে বাংলাদেশি সুপ্রিম কোর্টের বিচারপতিরা রীতিমত মুগ্ধ৷ তাই বিচারপতি সিনহা তাঁর দেশে অনুরূপ প্রশিক্ষণ ব্যবস্থার প্রয়োজনীয়তার কথা বলেন৷ বিচার বিভাগীয় প্রশিক্ষণ না থাকায় অপরাধিরা সহজেই জামিন পেয়ে যায়৷ বিচারকরা ভেবে দেখেন না সহজে জামিন পাওয়া আসামিরা সমাজের পক্ষে কতটা ক্ষতির কারণ হতে পারে৷
বাংলাদেশের বিচারপতি নিয়োগের অনেকটাই কোটা-ভিত্তিক৷ ৩০ শতাংশ বিচার বিভাগীয় পদ প্রাক্তন বিচারপতিদের সন্তানদের জন্য সংরক্ষিত৷ মহিলা ও স্থানীয়দের প্রত্যেকের জন্য ১০ শতাংশ করে, ৫ শতাংশ উপজাতিদের এবং সামান্য কিছু স্বাধীনতা সংগ্রামীদের ছেলে-মেয়েদের জন্য সংরক্ষিত৷
ভারতের প্রধান বিচারপতি আলতামাস কবির নীতিগতভাবে বিচারবিভাগীয় ট্রেনিং দেবার প্রস্তাবে রাজি হন, তবে তার আগে দু'দেশের সরকারের মধ্যে এ বিষয়ে চুক্তি সম্পাদন হওয়া দরকার বলেও জানান তিনি৷ ভারতের উচ্চ আদালতগুলিতে বিচার বিভাগীয় সব কাজকর্মে ব্যাপকভাবে কম্পিউটারের ব্যবহার দেখে সেক্ষেত্রেও ভারতে ট্রেনিং নেবার কথা বলেন বাংলাদেশের বিচারপতিরা৷
ভারতের শীর্ষ আদালতের বিচারপতিরা বিরোধ মীমাংসার বিকল্প উপায় হিসেবে ভারতের লোক আদালত, সালিশি ব্যবস্থা এবং গরিবদের জন্য আইনি সাহায্য দেবার কথা উল্লেখ করেন৷
ভারত-বাংলাদেশের বিচার ব্যবস্থার কাঠামো ব্রিটিশ ধাঁচে৷ বাংলাদেশে অবশ্য আইনি ব্যবস্থা মিশ্র৷ সেখানে সাধারণ আইনের সঙ্গে যুক্ত আছে ইসলামিক আইন৷