1. কন্টেন্টে যান
  2. মূল মেন্যুতে যান
  3. আরো ডয়চে ভেলে সাইটে যান

ভারত-জার্মান বাণিজ্যিক সম্পর্ক

অনিল চট্টোপাধ্যায়, নতুন দিল্লি২২ সেপ্টেম্বর ২০১৬

বিশ্ব অর্থনীতির সঙ্গে তাল মেলাতে ভারত-জার্মানির মধ্যে বাণিজ্যিক প্রতিবন্ধকতাগুলি পারস্পরিক স্বার্থেই দূর করা জরুরি৷ এ বিষয়ে শীঘ্রই ভারত-জার্মান বৈঠক শুরু হবে৷ সাংবাদিক সম্মেলনে এ কথা জানান জার্মান রাষ্ট্রদূত মার্টিন নেই৷

https://p.dw.com/p/1K6Ls
ছবি: DW/A. Chatterjee

ভারতে দ্বিপাক্ষিক ব্যবসা-বাণিজ্য ও বিনিয়োগ বাড়াতে জার্মান শিল্পগুলির সামনে যেসব অন্তরায় আছে, তার আশু সুরাহা করা জরুরি৷ এই যেমন জমি পাওয়ার সমস্যা, উচ্চহারে পণ্য শুল্ক, দক্ষ কর্মীদের অভাব, ভারত ও ইউরোপীয় ইউনিয়নের মধ্যে বিনিয়োগ সুরক্ষা চুক্তি না থাকা এবং ভারত-ইউরোপীয় ইউনিয়নের মধ্যে অবাধ বাণিজ্য চুক্তি সংক্রান্ত আলোচনা অসমাপ্ত থাকা৷ মঙ্গলবার নতুন দিল্লিতে এক সংবাদ সম্মেলনে এ কথা জানান জার্মান রাষ্ট্রদূত মার্টিন নেই৷

এ সব বিষয় নিয়ে গত বছরের অক্টোবর মাসে আলোচনা হয়েছিল, কিন্তু বিশেষ কোনো অগ্রগতি হয়নি৷ তাই আগামি সপ্তাহে আবারো এ বিষয়ে দ্বিপাক্ষিক বৈঠক বসতে চলেছে৷ আর তাতে আলোচ্য বিষয়গুলির মধ্যে থাকছে দ্বিপাক্ষিক ব্যবসা-বাণিজ্য ও বিনিয়োগ বাড়ানোর বাধাগুলি দূর করতে ফাস্ট-ট্র্যাক মেকানিজম গড়ে তোলা৷ এছাড়াও ভারত-ইউরোপীয় ইউনিয়নের মধ্যে অবাধ বাণিজ্য চুক্তির মধ্যেই বিনিয়োগ সুরক্ষা চুক্তির সংস্থান রাখা, উন্নত প্রযুক্তি, শ্রমশক্তির দক্ষতা বাড়ানো, বৃত্তিমূলক প্রশিক্ষণ ইত্যাদি সুনিশ্চিত করতে জার্মানি খুবই আগ্রহী, যাতে ভারত বিশ্বের এক অগ্রণী ম্যানুফ্যাকচারিং কেন্দ্রে পরিণত হতে পারে৷

Indien VDMA Pressekonferenz
সংবাদ সম্মেলনে অংশগ্রহণকারীরাছবি: DW/A. Chatterjee

জার্মান রাষ্ট্রদূত বলেন, আশার কথা মোদী সরকার সেই লক্ষ্যে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নিচ্ছে৷ পণ্য ও পরিষেবা শুল্ক সংসদে পাশ হয়েছে ইতিমধ্যেই এবং সেটা বাস্তবায়িত হলে তা হবে এক ঐতিহাসিক মাইলফলক৷ আছে সিঙ্গল-উইন্ডো ক্লিয়ারেন্স, বিদেশি বিনিয়োগের জন্য অন্য আরও অনেক ক্ষেত্র খুলে দেওয়াও৷

ভারতে জার্মান সহায়তায় সৌর প্রকল্প

রাষ্ট্রদূত নেই বলেন, ইউরোপীয় ইউনিয়নের মধ্যে জার্মানি ভারতের বৃহত্তম বাণিজ্যিক সহযোগী দেশ৷ ভারতে ১৭০০ জার্মান কোম্পানি কর্মরত৷ গত তিন বছরে আরও ১২০টি জার্মান কোম্পানি তাদের উত্পাদন সুবিধা বাড়িয়েছে৷ ভারত-জার্মান ব্যবসা-বাণিজ্য ও বিনিয়োগের ক্ষেত্রে জার্মান মেকানিক্যাল ইঞ্জিনিয়ারিং ফেডারেশনের ভূমিকা নিসন্দেহে গুরত্বপূর্ণ৷ গত বছরে ভারতে জার্মানির রপ্তানির পরিমাণ ছিল প্রায় এক হাজার কোটি ইউরো, যার মধ্যে জার্মান মেশিনারি ৩০ শতাংশ৷ চলতি বছরের প্রথম তিন মাসে জার্মানিতে ভারতের রপ্তানির পরিমাণ প্রায় ৩০০ কোটি ইউরো৷ এর পাশাপাশি ভারতে প্রথম পর্যায়ে যে ২০টি স্মার্ট সিটি গড়ে তোলা হবে৷ এর মধ্যে জার্মানি তার নিজস্ব পরিবেশ-বান্ধব মানদণ্ড ও পরিকল্পনা অনুযায়ী ভুবনেশ্বর, কোট্টায়াম ও কোচি শহরকে স্মার্ট সিটিতে উন্নীত করবে৷

মঙ্গলবারের সাংবাদিক সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন ইউরোপের বৃহত্তম ইন্ডাস্ট্রিয়াল নেটওয়ার্ক, ৩১৫০টি কোম্পানি যার সদস্য, সেই জার্মান মেকানিক্যাল ইঞ্জিনিয়ারিং ফেডারেশন ভিডিএমএ-এর প্রেসিডেন্ট ড. রাইনহোল্ড ফেস্টগে-ও৷ নিজের বক্তব্যে ভারতে কল কারখানা স্থাপনের প্রয়োজনীয় মেশিনপত্রের বাজারে আসার নানা সমস্যার কথা তুলে ধরেন তিনি৷ যেমন মোট আমদানি শুল্কের উচ্চহার, জমির দলিলপত্র নিয়ে সমস্যা, দক্ষ শ্রমশক্তির অভাব, যার ফলে অত্যাধুনিক মেশিনপত্র ব্যবহার করার জন্য যথেষ্ট ইনঞ্জিনিয়ার পাওয়া যায় না৷ সংশ্লিষ্ট কোম্পানিগুলিকে এর জন্য শিখিয়ে পড়িয়ে নিতে হয়৷ এই অসুবিধা দূর করতে জার্মানির ভিডিএমএ প্রয়োজনীয় ট্রেনিং দিয়ে সাহায্য করতে পারে, বিশেষ করে ছোট ও মাঝারি আয়তনের শিল্প ক্ষেত্রে৷

তিনি বলেন, ভারতে ভিডিএমএ-এর উপস্থিতি সেই ২০০০ সাল থেকে হলেও বর্তমানে ভারতে জার্মানির মেশিন সরবরাহের গতি এখন নিম্নমুখী৷ তবে তা সত্ত্বেও এশিয়ায় ভারতের স্থান তৃতীয়৷ ভারতের ‘মেক-ইন-ইন্ডিয়া' অভিযান সার্থক করে তুলতে অত্যাধুনিক শিল্পোৎপাদন পরিকাঠামোর সর্বাত্মক উন্নতির পাশাপাশি ডিজিটাল-প্রযুক্তি নির্ভর৷ মেকানিক্যাল এবং প্লান্ট ইঞ্জিনিয়ারিং শিল্পে ডিজিটাইজেশন অপরিহার্য৷ গত বছর হ্যানোফার শিল্প মেলার সহযোগী দেশ হিসেবে ভারতের প্রধানমন্ত্রী মোদী শিল্প মেলা পরিদর্শন করে সেটা স্বচক্ষেই দেখে এসেছেন৷ তাই ভবিষ্যতে ভারতসহ প্রতিটি দেশকে এর সঙ্গে পা মিলিয়ে চলতে হবে, না হলে শিল্পায়নের সুযোগ হারাতে হবে৷ জার্মানির মেকানিক্যাল ইঞ্জনিয়ারিং সেক্টর ডিজিটাল প্রযুক্তি চালিত৷ মোটকথা, ভিডিএমএ-এর সদস্য সংস্থাগুলির উচ্চ-প্রযুক্তির সহযোগিতা গ্রহণ করতে হলে ভারতকে বিতর্কিত জমি অধিগ্রহণ আইনের সংশোধন করতে হবে, হ্রাস করতে হবে আমদানি শুল্কও৷ বলা বাহুল্য, ভারতে উৎপাদন ব্যয় কম হলে বিশ্বের প্রতিযোগিতামূলক বাজারে ভারত তার স্থায়ী আসন ধরে রাখতে সক্ষম হবে৷

এ বিষয়ে আপনার কি কিছু বলার আছে? লিখুন নীচের ঘরে৷

স্কিপ নেক্সট সেকশন এই বিষয়ে আরো তথ্য

এই বিষয়ে আরো তথ্য

আরো সংবাদ দেখান