1. কন্টেন্টে যান
  2. মূল মেন্যুতে যান
  3. আরো ডয়চে ভেলে সাইটে যান

ভারত এবং চীনের প্রতি ট্রাম্পের বার্তা

১৭ জুলাই ২০২০

ফের ভারত-চীন সম্পর্ক নিয়ে মুখ খুললেন ডনাল্ড ট্রাম্প। বিশেষজ্ঞরা বলছেন মার্কিন ভোটের কথা মাথায় রেখেই নতুন বার্তা দিতে চেয়েছেন ট্রাম্প।

https://p.dw.com/p/3fSDv
ছবি: picture-alliance/AP Photo/E. Vucci

ভারত এবং চীনের মধ্যে শান্তি প্রতিষ্ঠার জন্য সব কিছু করতে রাজি ট্রাম্প। বৃহস্পতিবার মার্কিন প্রেসিডেন্টের এই বক্তব্য জানিয়েছেন হোয়াইট হাউসে ট্রাম্পের মুখপাত্র। তাঁর বক্তব্য, ট্রাম্প বলেছেন, ভারত অ্যামেরিকার বন্ধু। আর চীনের মানুষকে অ্যামেরিকা পছন্দ করে। ফলে দুই দেশের মধ্যে সুসম্পর্ক গড়ে তোলার জন্য অ্যামেরিকা সব কিছু করতে প্রস্তুত।

লাদাখে ভারত-চীন সংঘাত শুরু হওয়ার পরেই ট্রাম্প মধ্যস্থতার কথা বলেছিলেন। যদিও দুই দেশই তখন তা নাকচ করে দেয়। মার্কিন প্রেসিডেন্ট সহ একাধিক উচ্চপদস্থ সচিব সে সময় ভারতের পক্ষেও কথা বলেছিলেন। গত কয়েক দিন তাঁরা লাগাতার চীনের বিরুদ্ধে কথা বলে গিয়েছেন। দক্ষিণ চীন সাগরে চীনের আধিপত্য নিয়েও প্রশ্ন তুলেছেন। এই পরিস্থিতিতে ট্রাম্পের এই বক্তব্য নতুন করে ভাবাচ্ছে রাজনৈতিক বিশ্লেষকদের।

এ দিন সকালেই হোয়াইট হাউসের অর্থনৈতিক পরামর্শদাতা ল্যারি কুডলো সাংবাদিকদের বলেছিলেন, ভারত এবং অ্যামেরিকার সম্পর্ক অত্যন্ত ভালো। নরেন্দ্র মোদী ট্রাম্পের ঘনিষ্ঠ বন্ধু। এর ঠিক একদিন আগে মার্কিন সচিব মাইক পম্পেও ভারত নিয়ে বহু কথা বলেছিলেন। তাঁর বক্তব্য ছিল, ''ভারত অ্যামেরিকার অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ বন্ধু। ভারতের বিদেশমন্ত্রীর সঙ্গে আমার নিয়মিত কথা হয়। চীন কী ভাবে ভারত সীমান্তে আগ্রাসী মনোভাব দেখিয়েছে, তা নিয়ে আমাদের মধ্যে কথা হয়েছে। ভারতে চীনের অ্যাপ কী ভাবে নিরাপত্তা সংকট তৈরি করেছে, সে বিষয়েও আলোচনা হয়েছে।''

বস্তুত, এই মুহূর্তে ভারত এবং অ্যামেরিকার সম্পর্ক অভূতপূর্ব। করোনার আগে ট্রাম্পের শেষ বিদেশ সফর ছিল ভারত। কাশ্মীরে ৩৭০ অনুচ্ছেদ তুলে দেওয়া থেকে শুরু করে লাদাখ সংকট-- সব ক্ষেত্রেই কূটনৈতিক মহলে ভারতের পাশে দাঁড়িয়েছে অ্যামেরিকা। প্রকাশ্যে ভারতকে সমর্থন জানানো হয়েছে। শুধু তাই নয়, করোনাকালে চীনের সঙ্গে ক্রমশ দূরত্ব তৈরি হয়েছে অ্যামেরিকার। হংকং সংকটে চীনের সঙ্গে প্রকাশ্য বিতর্ক চলছে অ্যামেরিকার। হংকংয়ের সঙ্গে বাণিজ্য সম্পর্কও বন্ধ করেছে অ্যামেরিকা। চীন-অ্যামেরিকার এই দ্বন্দ্বমূলক সম্পর্ক কূটনৈতিক ভাবে ভারতের লাভ বলেই মনে করছেন বিশেষজ্ঞরা। কারণ, অ্যামেরিকা চীনের উপর চাপ বাড়াতেই ভারতকে আরও গুরুত্ব দেবে।

দুর্গম গালওয়ানের সংঘাতময় সীমান্তে

কিন্তু শুক্রবার ট্রাম্প যে কথা বলেছেন তাতে ভোটের রাজনীতি দেখতে পাচ্ছেন বিশেষজ্ঞরা। তাঁদের বক্তব্য, আর কয়েকমাস বাদেই অ্যামেরিকায় প্রেসিডেন্ট নির্বাচন। করোনাকালে ডনাল্ড ট্রাম্পের জনপ্রিয়তা চোখে পড়ার মতো কমেছে। ফ্লয়েডের ঘটনার পরে অ্যামেরিকার একটি অংশ ট্রাম্পের বিরুদ্ধে রাস্তায় নেমে পড়েছে। এই পরিস্থিতিতে অ্যামেরিকায় বসবাসকারী ভারতীয় এবং চীনাদের ভোট ট্রাম্পের জন্য অত্যন্ত জরুরি।

২০১০ থেকে ২০১৮ সালের মধ্যে অ্যামেরিকায় ভোটাধিকারপ্রাপ্ত ভারতীয়ের সংখ্যা ৪৯ শতাংশ বেড়েছে। এই মুহূর্তে অ্যামেরিকায় বসবাসকারী ভারতীয় ভোটদাতার সংখ্যা প্রায় ৩০ লাখ। চীনা ভোটাদাতার সংখ্যাও ৩০ লাখের কাছাকাছি। এই দু'টি গোষ্ঠীর ভোট পকেটে রাখতে পারলে ট্রাম্প অনেকটাই সুবিধাজনক জায়গায় থাকতে পারবেন। সে কারণেই বিশাল আয়োজন করে ভারত সফরে এসেছিলেন ট্রাম্প। নরেন্দ্র মোদী তাঁর বক্তৃতায় কার্যত ট্রাম্পের জন্য ভোট চেয়েছিলেন। বিশেষজ্ঞদের বক্তব্য, সে ভাবনা মাথায় রেখেই ফের ভারতের সঙ্গে সুসম্পর্কের বার্তা দিলেন ট্রাম্প। একই সঙ্গে বললেন, তিনি 'চীনের মানুষ'কে ভালোবাসেন। অর্থাৎ, চীনের সরকারের সঙ্গে তাঁর দ্বৈরথ চললেও সেখানকার সাধারণ মানুষের প্রতি তাঁর কোনও ক্ষোভ নেই।

এসজি/জিএইচ (রয়টার্স)