ভাইকিংদের গণকবর পাওয়া গেল ইংল্যন্ডে
১৩ মার্চ ২০১০লন্ডন অলিম্পিক ২০১২-র জন্য নতুন নির্মাণ কাজ চলছে ইংল্যন্ডে৷ ইংল্যন্ডের ওয়েমাউথের কাছে অলিম্পিকের জন্য নতুন রাস্তা তৈরি করতে শ্রমিকরা যখন কাজ করছিলেন, সেই খোঁড়াখুঁড়ির মধ্যে পাওয়া গেল মোট ৫১ জন তরুণ ভাইকিং-এর একটি গণকবর৷ তড়িঘড়ি বিশেষজ্ঞরা হাজির ঘটনাস্থলে৷ জানা গেল ইতিহাসের একটি অজানা অধ্যায় সম্পর্কে কিছু অনাবিস্কৃত তথ্য৷
অক্সফোর্ড আর্কিওলোজির প্রোজেক্ট ম্যানেজার ডেভিড স্কোর এই আবিস্কার প্রসঙ্গে জানাতে গিয়ে বলেন, গণকবর থেকে পাওয়া করোটি এবং অস্থি পরীক্ষা করে জানা গেছে এরা সকলেই ছিল তরুণ বয়স্ক৷ এবং এদের দাঁত পরীক্ষা করে জানা গেছে এরা এসেছিল ইংল্যন্ডের থেকেও অনেক শীতলতর কোন একটি অঞ্চল থেকে৷ সেই এলাকা যে আজকের স্ক্যান্ডিনেভিয়া অর্থাত হয় নরওয়ে কিংবা ফিনল্যান্ড, তাও বোঝা গেছে বিশেষ রেডিওকার্বন পরীক্ষার মাধ্যমে৷ নিহতেরা সকলেই যে ছিল ভাইকিং, এই তথ্য নিশ্চিত হওয়ার পর থেকেই রীতিমত উত্তেজিত বিশেষজ্ঞরা৷ যাঁদের মধ্যে ঐতিহাসিক যেমন রয়েছেন, রয়েছেন নৃতত্ববিদরাও৷ তাঁদের সকলেরই অভিমত, ৮৯০ থেকে ১০৩০ খৃষ্টাব্দের মধ্যে কোন একটি সময়ে ভয়ংকর মৃত্যুর মুখোমুখি হয়েছিল এরা সকলেই৷ এদের প্রত্যেককেই শরীর থেকে মাথা আলাদা করে হত্যা করা হয়েছিল৷
ইতিহাসের বিচারে ওই সময়টাকে বলা হয় মধ্যযুগ বা অন্ধকার যুগ৷ অসংখ্য কুসংস্কার আর ক্রমাগত যুদ্ধ হানাহানি তখন লেগেই থাকত৷ বিশেষ করে অ্যাংলো স্যাক্সনদের সঙ্গে অন্যান্য প্রজাতির লড়াই ছিল নিত্য নৈমিত্তিক ঘটনা৷ এই ভাইকিংরা, যাদের স্থান হয়েছিল গণকবরে, সে সময় তারা প্রায়শই হানা দিত আজকের ইংল্যান্ড যেখানে সেই এলাকায়৷ ধারণা করা হচ্ছে, সেরকমই কোন যুদ্ধে নিহত হয়ে থাকতে পারে এইসব তরুণরা৷
যুদ্ধ যে একাটা হয়েছিল, তার প্রভূত উদাহরণ দেখতে পেয়েছেন গবেষকরা ইতিমধ্যেই৷ নিহতদের শরীরে একাধিক ধারালো অস্ত্রের চিহ্ন মিলেছে৷ বিভিন্ন ধরণের পরীক্ষার মাধ্যমে চলছে আরও নিরীক্ষা৷ যার থেকে সেই অজ্ঞাত ইতিহাসের যবনিকা আরও উন্মোচিত হবে৷
প্রতিবেদন- সুপ্রিয় বন্দ্যোপাধ্যায়
সম্পাদনা- আরাফাতুল ইসলাম