ভাই, কত দাম বনাম ডিজিটাল হাটের ক্লিক
কোরবানির হাটের মুখে সবচেয়ে বেশি শোনা যায় যে প্রশ্নটি তা হলো - ভাই কত? কত দামে কেনা হলো তা জানায় ক্রেতা, আর কী দামে বিক্রি করেতে চান তা জানান বিক্রেতা৷ কিন্তু ডিজিটাল যুগে এখন এক ক্লিকেই জানা যাচ্ছে গরুর দাম৷
গরু-ছাগলের বিরাট হাট
’গরু ছাগলের বিরাট হাট’ নাকি ’বিরাট গরু ছাগলের হাট’ তা নিয়ে অবশ্য বিতর্ক আছে৷ কোনটি সঠিক এর উত্তর হয়তো ভাষা বিজ্ঞানীরা ভালো বলতে পারবেন৷ তবে গরুর বাজারে দুটোই ব্যবহার করতে দেখা যায়৷
মাইক দিয়ে পুর্বঘোষণা
বাংলাদেশে বিভিন্ন অঞ্চলের সপ্তাহে কিংবা মাসে গরুর বাজারের প্রচলন থাকলেও ঈদুল আযহার সময়ে গরু কেনা-বেচার চাহিদাকে বিবেচনায় রেখে আয়োজন করা বিশেষ হাটের৷ মূলত ঈদের এক সপ্তাহ আগে থেকে শুরু হয় শুরু পুরোদমে গরুর বাজার৷ ঢাকা, চট্টগ্রামসহ কোনো কোনো জায়গায় ঈদের কয়েকদিন আগে থেকে শুরু হয়ে টানা চলতে থাকে বাজার৷ ক্রেতা বিক্রেতাদের মাইকে ঘোষণা দিয়ে জানিয়ে দেওয়া হয় বাজারের সময়সূচি৷
এক ক্লিকে গরুর বাজার
গত কয়েক বছরে আমূুল পরিবর্তন এসেছে বাংলাদেশে গরু কেনা-বেচায়৷ ডিজিটাল প্লাটফর্ম ব্যবহার করে সাধারণ গরুর বাজারের পাশাপাশি গরুর বিজ্ঞাপন দেখা যায় অনলাইনেও৷ আর একটি ক্লিকেও যুক্ত হয়ে যাচ্ছেন ক্রেতা বিক্রেত৷ সরকারের এটুআই দপ্তর বলছে, অনলাইনের এই বাজার মূলত করোনার সময় থেকে জনপ্রিয় হয়ে উঠে
গরু কত, কেজি কত?
দশকের পর দশক ধরে গরু বিক্রির যেই প্রথা অর্থাৎ একটি করে গরু বিক্রির পাশাপাশি অনলাইনে মার্কেটগুলোতে জনপ্রিয় হয়ে উঠেছে কেজি হিসেবে গরু বিক্রি৷ ডিজিটাল পাল্লায় তুলে গরু ওজন করে তা কেজি হিসেবে বিক্রি করা হচ্ছে৷ সংবাদমাধ্যমের খবর অনুযায়ী, গত বছর ৪৩০ থেকে ৫০০ টাকা দরে বিক্রি হয়েছিল গরু৷ অবশ্য চলতি বছর এখন পর্যন্ত বাজার ভেদে কেজি প্রতি পাঁচশ থেকে পাঁচশ ৭৫ টাকা দরে গরু বিক্রির খবর পাওয়া গেছে৷
ডিজিটাল হাটের সরকারি উদ্যোগ
সরকারের আইসিটি বিভাগের এটুআই, একশপ, ঢাকা উত্তর সিটি কর্পোরেশন, বাংলাদেশ ডেইরি ফার্মার্স এসোসিয়েশন এবং ই-ক্যাবের উদ্যোগে কোরবানি পশু বিক্রির জমজমাট অনলাইন প্ল্যাটফর্ম ‘ডিজিটাল হাট’৷ সারা দেশের গরু বিক্রেতারা এই হাটে গরু বিক্রি করতে পারছেন৷ সরকারি দপ্তরের তথ্য অনুযায়ী, দেশের বিভিন্ন এলাকার প্রায় শতাধিক পশুর খামার এই প্লাটফর্মে যুক্ত হয়েছে।
এগিয়ে আসছেন তরুণ উদ্যোক্তারা
ফেসবুক কিংবা অনলাইনে সার্চ করলেই দেখা যায় এমন গরুর হাটের তালিকা বেশ লম্বা৷ সাম্প্রতিক বছরগুলোতে তরুণদের অনেকেই খামার তৈরিতে উদ্যোগী হচ্ছেন হচ্ছেন৷ যোগাযোগ প্রযুক্তির বিষয়ে তাদের দক্ষতা তুলনামুলক ভাল হওয়ায় খুব সহজেই তারা গড়ে তুলছেন মার্কেটপ্লেস৷ তবে সম্প্রতি অনেকেরই আগ্রহ কমছে অনলাইন মার্কেটেরগুলোর ওপর৷
প্রান্তিক কৃষকদের সুবিধা
এমন উদ্যোক্তাদের একজন ঢাকায় অবস্থিত প্রাণ বৈচিত্র্য খামারে দেলোয়ার হোসেন (ছবিতে ডানে)৷ তার প্রতিষ্ঠানের ফেসবুক পাতায় ঘুরে দেখা গেল ঢাকার আশেপাশের বিভিন্ন গ্রামের কৃষকদের গরু বিক্রির তথ্য দেওয়া হচ্ছে৷ দেলোয়ার জানান, তার উদ্দেশ্যে প্রান্তিক পর্যায়ের কৃষকদের সরাসরি বিক্রেতার সাথে যুক্ত করে দেওয়া যেন লাভের টাকার পুরোটাই কৃষকের হাতে পৌছে৷
জমজমাট ইউটিউব
এদিকে যোগাযোগপ্রযুক্তিকে কাজে লাগিয়ে গড়ে উঠছে ইউটিউব চ্যানেলও৷ বাজার ঘুরে ঘুরে কন্টেন্ট ক্রিয়েটররা গ্রাহকদের বাজার দরের আপডেট দিচ্ছেন৷ কৃষিঘর, কৃষিকথা, চাকাবাংলাসহ বেশ কয়েকজন ইউটিবারকে বাজারে সক্রিয় দেখা যাচ্ছে৷ ভিউ থেকে তো আয়ের পাশাপাশি বেসরকারি স্পন্সরশিপের কারণে এরকম চ্যানেলগুলো এখন অনেকের কাছেই আকর্ষণীয়৷