1. কন্টেন্টে যান
  2. মূল মেন্যুতে যান
  3. আরো ডয়চে ভেলে সাইটে যান

ব্রেক্সিট চুক্তির বাইরে সমঝোতার সম্ভাবনা

২২ ফেব্রুয়ারি ২০১৯

ইইউ ব্রেক্সিট চুক্তিতে রদবদলের সম্ভাবনা উড়িয়ে দেবার পর ব্রিটেনের সরকার বিকল্প পথে অগ্রসর হচ্ছে৷ ব্যাকস্টপ সংক্রান্ত আইনি গ্যারেন্টির মাধ্যমে সংসদে ব্রেক্সিট চুক্তি অনুমোদন করাতে চান প্রধানমন্ত্রী৷

https://p.dw.com/p/3Dpvc
ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী টেরেসা মে ও ইইউ কমিশন প্রেসিডেন্ট জঁ ক্লোদ ইয়ুংকার
ছবি: Getty Images/T. Monasse

ব্রেক্সিট চুক্তিতে কোনো পরিবর্তন যে সম্ভব নয়, অবশেষে তা বুঝতে পেরেছে ব্রিটেনের টেরেসা মে সরকার৷ জানুয়ারি মাসে ব্রিটেনের সংসদ এই চুক্তির বিরুদ্ধে ভোট দেবার পর থেকেই ইউরোপীয় ইউনিয়ন বিষয়টি স্পষ্ট করে দিয়েছিল৷ তা সত্ত্বেও প্রধানমন্ত্রী বার বার ব্রাসেলসে গিয়ে সেই চুক্তির মধ্যে আয়ারল্যান্ড সীমান্তে ব্যাকস্টপ সংক্রান্ত বোঝাপড়ায় পরিবর্তনের দাবি জানিয়ে আসছিলেন৷ কিন্তু এমন প্রচেষ্টা বিফল হওয়ায় বৃহস্পতিবার ব্রিটেনের সরকার বাস্তব পরিস্থিতি কার্যত মেনে নিয়েছে৷ বৃহস্পতিবার ব্রেক্সিটের ভারপ্রাপ্ত মন্ত্রী ও অ্যাটর্নি জেনারেলের ব্রাসেলস সফরের পর এই উপলব্ধি দেখা গেছে৷

এমন প্রেক্ষাপটে আরও সময় নষ্ট না করে বরং সংসদে ব্রেক্সিট চুক্তির অনুমোদনের জন্য প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নিতে চান টেরেসা মে৷ তাই আগামী দিনগুলিতে ইইউ-র সঙ্গে সংলাপের লক্ষ্য হবে এমন আইনসিদ্ধ গ্যারেন্টি আদায় করা, যা ব্রিটিশ সংসদের ইইউ-বিরোধী সদস্যদের আশ্বস্ত করতে পারবে৷ মূল চুক্তির বাইরেই এক নথির মধ্যে ব্যাকস্টপ সংক্রান্ত আশ্বাস আদায় করার চেষ্টা করে যাবে ব্রিটিশ সরকার৷ উল্লেখ্য, ব্রিটেন ব্যাকস্টপ সংক্রান্ত ব্যবস্থার সময়সীমা সীমিত রাখার দাবি জানিয়ে আসছে৷ ব্রেক্সিট চুক্তির সঙ্গে দুই পক্ষের ভবিষ্যৎ সম্পর্ক নিয়ে প্রকাশিত রাজনৈতিক ঘোষণাপত্রে রদবদল করে এ বিষয়ে গ্যারেন্টি অন্তর্গত করা যেতে পারে৷ তবে এমন আপোশ মীমাংসা কট্টর ব্রেক্সিটপন্থিদের কাছে গ্রহণযোগ্য হবে কিনা, তা স্পষ্ট নয়৷

তাই এ বিষয়ে কোনো সমঝোতা যে ব্রিটেনের সংসদে অচলাবস্থা কাটাতে পারবে, সে বিষয়ে কোনো নিশ্চয়তা দেখা যাচ্ছে না৷ তাই ইউরোপীয় নেতারা এমন প্রস্তাব সম্পর্কে সংশয় প্রকাশ করছেন৷ তাঁদের ধারণা, ব্রিটেনের বিভক্ত সংসদে যে কোনো ব্রেক্সিট চুক্তির পক্ষে সংখ্যাগরিষ্ঠতা অর্জন করা অত্যন্ত কঠিন কাজ৷ ইইউ-র ধারণা, এই অবস্থায় ব্রিটেন বিচ্ছেদের সময়সীমা বাড়ানোর জন্য আবেদন করতে চলেছে৷ কারণ সংখ্যাগরিষ্ঠ সংসদ সদস্যরা চুক্তি ছাড়া ব্রেক্সিটের ঘোর বিরোধী৷ তাঁরা প্রধানমন্ত্রী মে-কে সময়সীমা বাড়ানোর আবেদন করতে বাধ্য করতে পারেন৷ সে ক্ষেত্রে ২১ ও ২২শে মার্চ ইইউ শীর্ষ সম্মেলনে সেই আবেদন বিবেচনা করবেন ইইউ নেতারা৷

ব্রিটেনের সংসদে ব্রেক্সিট চুক্তির পক্ষে সংখ্যাগরিষ্ঠতা অর্জনের চাবিকাঠি বিরোধী লেবার দলের হাতে রয়েছে৷ কারণ প্রধানমন্ত্রীর টোরি দলের মধ্যে কট্টর ব্রেক্সিটপন্থিরা দ্বিতীয় ভোটেও তাঁদের সমর্থন জানাবেন কিনা, তা স্পষ্ট নয়৷ লেবার নেতা জেরেমি কর্বিন বৃহস্পতিবার ব্রাসেলসে ইইউ-র মধ্যস্থতাকারী মিশেল বার্নিয়ে ও অন্যান্য কর্মকর্তাদের সঙ্গে বৈঠক করেন৷ তিনি বিচ্ছেদের পর ব্রিটেনকে ইইউ-র সঙ্গে শুল্ক ইউনিয়নে রাখার পক্ষে সওয়াল করে আসছেন৷ তাঁর যুক্তি, সে ক্ষেত্রে আয়ারল্যান্ড সীমান্ত নিয়ে জটিলতা ও অর্থনৈতিক বিপর্যয়ের আশঙ্কার কোনো কারণ থাকবে না৷ সংসদে কট্টর ব্রেক্সিটপন্থিরা অবশ্য এমন প্রস্তাবের ঘোর বিরোধী৷ তাদের উপর প্রধানমন্ত্রীর মাত্রাতিরিক্ত নির্ভরতার কড়া সমালোচনা করেন কর্বিন৷

ব্রিটেনের অর্থমন্ত্রী ফিলিপ হ্যামন্ড বৃহস্পতিবার আশার আলো দেখিয়েছেন৷ তাঁর মতে, ইইউ-র সঙ্গে ব্যাকস্টপ সংক্রান্ত বোঝাপড়া দ্রুত সম্ভব হবে৷ সে ক্ষেত্রে আগামী সপ্তাহেই সংসদে ব্রেক্সিট চুক্তি নিয়ে দ্বিতীয়বারের মতো ভোটাভুটি হতে পারে৷ তবে সরকার প্রকাশ্যে এতটা আশাবাদী হতে পারছে না৷ ইইউ সূত্র অনুযায়ী ২৮শে ফেব্রুয়ারির আগে এ ক্ষেত্রে রাজনৈতিক ঘোষণাপত্রে কোনো পরিবর্তনের সম্ভাবনা নেই৷

এসবি/জেডএইচ (এএফপি, রয়টার্স)