ব্রাজিলের কোকেন ছাড়ছে না ইউরোপকেও
২৮ আগস্ট ২০১৯ভৌগোলিক ও অর্থনৈতিক দুই দিক দিয়েই বিশ্বের ষষ্ঠ বৃহত্তম দেশ ব্রাজিল৷ খাদ্যপণ্য রপ্তানির হারে ব্রাজিল বিশ্বের পঞ্চম স্থানে, জানাচ্ছে ইন্টারন্যাশনাল মনিটারি ফান্ড বা আইএমএফ৷
বর্তমানে ব্রাজিল বিশ্বের শিরোনামে জায়গা পাচ্ছেআমাজন বনাঞ্চলে লাগা ভয়াবহ আগুনের কারণে৷ কিন্তু এই মুহূর্তে, ব্রাজিলের সবচেয়ে বড় সংকট তা নয়৷ লোকচক্ষুর আড়ালে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের পরেই বিশ্বের দ্বিতীয় সর্বোচ্চ কোকেন ক্রেতার দেশ হয়ে উঠেছে ব্রাজিল৷ এর সাথে, এক লাখ জনে ৩০জন খুন হন সেখানে৷ শুধু ২০১৮ সালেই সেখানে ঘটেছে মোট ৬০ হাজার খুনের ঘটনা৷
আনাবেল জানাচ্ছেন, কোকেন বিক্রি ও ক্রয়ের এত বড় বাজার হয়ে ওঠার পেছনে রয়েছে ব্রাজিলের ভৌগোলিক অবস্থান৷ দেশটির চারপাশে রয়েছে পেরু, বলিভিয়া ও কলম্বিয়া, যে তিনটি দেশে বিশ্বের সবচেয়ে বেশি কোকেন তৈরি হয়৷ শুধুমাত্র কোলোম্বিয়া থেকেই আসে ৭০ শতাংশ কোকেন, জানাচ্ছে জাতিসংঘ৷
পরিসংখ্যান বলছে, ব্রাজিলে মাদক ব্যবহারকারীর সংখ্যা এই মুহূর্তে ৫৬ লাখ৷ এর কারণ শুধু কোকেনের বাড়ন্ত বাজারই নয়৷ ভাবতে হবে সিগারেটের বাড়তে থাকা দামও৷ এক গ্রাম কোকেনের দাম যেখানে এক মার্কিন ডলার, সেখানে সাধারন সিগারেট বিক্রি হয় পাঁচ মার্কিন ডলারে৷ অ্যামেরিকা বা অন্যান্য দেশে উচ্চদামের কারণে কোকেনের প্রতি আসক্তি দেখা যায় শুধুই উচ্চবিত্তদের মধ্যে৷ ব্রাজিলে কম দাম ও সহজলভ্য হওয়ায় কোকেন এখন সব শ্রেণীর হাতের নাগালে৷
মাদক ব্যবসায় সফল দেশগুলিতে দেখা যায়, মাদকের পাশাপাশি সেখানে রমরমিয়ে চলে চোরাকারবার৷ ব্রাজিলের ক্ষেত্রেও একথা সত্য৷ মাদকব্যবসার সাথে পাল্লা দিয়ে সেখানে বাড়ছে চোরাই গাড়ি ও অস্ত্রের কারবার৷ এই ধরনের ব্যবসা নিয়ন্ত্রিত হচ্ছে বিভিন্ন ক্ষমতাশালী গ্যাং বা চক্রের দ্বারা৷ অনেক ক্ষেত্রেই এই চক্রের রয়েছে বিভিন্ন জেলখানার কার্যকলাপ নিয়ন্ত্রণের মতো প্রাতিষ্ঠানিক ক্ষমতাও৷ ফলে, টেক্কা দিতে পারছে না স্থানীয় পুলিশ বা অন্যান্য কর্তৃপক্ষ৷ ইটালিয়ান বা অন্যান্য বিদেশি মাফিয়া চক্রের সাথে সুসম্পর্কের কারণে আন্তর্জাতিক চাপ সৃষ্টি করা যাচ্ছে না৷
ফলে, ব্রাজিলে গজিয়ে ওঠা মাদকচক্রের লম্বা হাত পৌঁছচ্ছে অ্যামেরিকা থেকে ইউরোপেও৷
আনাবেল হেরনান্দেজ/এসএস