বৌদ্ধ পূর্ণিমা ভাসবে ভিক্ষুদের চোখের জলে
২ অক্টোবর ২০১২শনিবার ছিল বৌদ্ধ ধর্মাবলম্বীদের ‘মধু পূর্ণিমা'৷ আর সেই রাতেই হামলা এবং আগুন ধরিয়ে দেয়া হয় কক্সবাজারের রামুর বৌদ্ধ বিহারগুলোতে৷ লুটপাট এবং ভাঙচুর করা হয় বৌদ্ধ বসতিতে৷ ফলে তাঁদের পুজার সব আয়োজন পরিণত হয় ধ্বংস্তুপে৷ আর চলমান ‘বর্ষাবাস' অনুষ্ঠানও বন্ধ হয়ে গেছে৷ বৌদ্ধ বিহারে তিন মাস ধরে চলে এই আচার অনুষ্ঠান৷ শেষ হয় আশ্বিনের বৌদ্ধ পূর্ণিমার মধ্য দিয়ে৷ বর্ষাবাসে বৌদ্ধ পুরোহিতরা বিহারে বিহারে শান্তি আর ধর্মের আলোচনা করেন৷ অশান্তির আগুনে এখন আর তা সম্ভব হচ্ছেনা৷ যা ডয়চে ভেলেকে টেলিফোনে জানন রামু কেন্দ্রীয় সীমা বৌদ্ধ বিহারের শিলপ্রিয় ভান্তে ভিক্ষু৷
রামুর পর পটিয়া, উখিয়া এবং মহেষখালীতে হামলা হয়েছে ৷ এখন পরিস্থিতি শান্ত হয়ে আসা শুরু করলেও থমথমে অবস্থা কাটেনি৷ আর ক্ষতিগ্রস্তরা মানবেতর জীবনযাপন করেছেন বলে জানালেন ওই এলাকার ক্ষতিগ্রস্তদের একজন সুশীল বড়ুয়া৷
পরিস্থিতি কিছুটা শান্ত হয়ে আসায় আশেপাশের গ্রামসহ সারা দেশের বৌদ্ধ সম্প্রদায়ের লোকজন রামুর বড়ুয়া পাড়ায় ক্ষতিগ্রস্তদের দেখতে গিয়ে কান্নায় ভেঙে পড়ছেন৷ কান্নায় ভেঙে পড়ছেন বৌদ্ধ পুরোহিতরাও৷
এদিকে ঢাকায় দপ্তরবিহীন মন্ত্রী সুরঞ্জিত সেনগুপ্ত অভিযোগ করেছেন যে, পুলিশ ও প্রসাশনের নিষ্ক্রিয়তার জন্যই এই নারকীয় হামলা সম্ভব হয়েছে৷
এই হামলা ও আগুনের ঘটনায় এ পর্যন্ত কক্সবাজার এবং চট্টগ্রামের বিভিন্ন থানায় ১৪টি মামলা হয়েছে৷ এখনো পর্যন্ত গ্রেপ্তার করা হয়েছে ১৮৫ জনকে৷ আর রামু থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা নজিবুল হককে দায়িত্বে অবহেলার অভিযোগে সরিয়ে দেয়া হয়েছে৷ অব্যাহত রয়েছে সেনাবাহিনীর টহল৷ এছাড়া রামুতে হামলার সময় পুলিশের নিষ্ক্রিয়তা চ্যালেঞ্জ করে আজ হাইকোর্টে একটি রিট হয়েছে৷ তারপরেও অবশ্য বৌদ্ধ বসতিতে আতঙ্ক কাটছেনা৷
প্রতিবেদন: হারুন উর রশীদ স্বপন, ঢাকা
সম্পাদনা: দেবারতি গুহ