বোরুসিয়া ডর্টমুন্ড
১২ জানুয়ারি ২০০৯ক্লপকে ট্রেনিং-পাগলও বলা চলতে পারে: প্লেয়ারদের জিভ বেরিয়ে গেছে প্রাক-মরশুম ট্রেনিং-এর ধকল সামলাতে৷ কেননা ক্লপ চান গতিবেগ এবং আবেগ, হৃদয় এবং মস্তিষ্ক, এক কথায় সব কিছু৷ এবং প্লেয়াররাও কোচকে সব কিছু দিয়েছে: তার প্রমাণ গত মরশুমের শেষ ১০টি খেলা থেকে অভাবনীয় ২৫ পয়েন্ট৷ তবুও যদি নতুন ইউরোপা লীগে খেলার সুযোগটা অল্পের জন্য ফস্কে যায়, তো কি করা যেতে পারে৷
ওদিকে ট্রেনিং এবং হৃদয়াবেগ, এই দিয়েই তো ক্লপকে কাজ চালাতে হবে৷ কেননা ছ’বারের বুন্ডেসলিগা চ্যাম্পিয়ন ডর্টমুন্ডের কিন্তু দামি প্লেয়ার কেনার সামর্থ্য নেই৷ মাটস হুমেলস সদ্য আন্ডার টোয়েন্টিওয়ান ইউরোপ চ্যাম্পিয়ন হয়ে আসার পর তার জন্য ডর্টমুন্ডকে বায়ার্ন মিউনিখকে গুণতে হয় ৪২ লক্ষ ইউরো৷ তার পরে বাকি ছিল আর লাখ দশেক৷ তা গেছে এ্যাটাকে দিমিতার রাঙেলভ আর কেভিন গ্রোসক্রয়েৎস, এবং মিডফিল্ডে মার্কুস ফয়েলনার এবং সোয়েন বেন্ডারকে কিনতে৷ সবারই নাকি ‘‘বিকাশের সম্ভাবনা’’ খুব ভালো৷ অন্তত ইয়ুর্গেন ক্লপের হাতে পড়লে তো বটেই৷
ক্লপ যখন বোরুসিয়াকে ঢেলে গড়তে শুরু করেন, তখন তাঁর নীতিই ছিল সুবোটিচ, হুমেলস, সাহিন, ব্লাজিকোভস্কির মতো তরুণদের সাথে ভালডেজ, হায়নাল, ওভোমোয়েলার মতো পোড় খাওয়াদের মেলানো৷ আর স্টার বলতে ক্যাপটেন সেবাস্টিয়ান কেল তো আছেই৷ ফরোয়ার্ড হিসেবে রাঙেলভ ইতিমধ্যেই ফ্রাই, ভালডেজ, জিদান - জিনেদিন জিদান নয়, মিশরের মোহামেদ জিদান - ইত্যাদিদের চমকে দিয়েছে তাদের চাইতে বেশি গোল করে৷ ক্লপও রাঙেলভকে বিশেষ পছন্দ করেন৷ ফয়েলনারকেও তাঁর পছন্দ৷ মিডফিল্ডে সোয়েন বেন্ডার হবে কেলের ব্যাক-আপ৷ তবে ক্লপের সবচেয়ে বড় সমস্যা হল, বুন্ডেসলিগার অন্যান্য টপ ক্লাবগুলির মতো তাঁর হাতে এমন কোনো তুরুপের তাস নেই, যা থেকে মরশুমে ১৫-২০টা গোল আশা করা যেতে পারে৷
ডর্টমুন্ড সীজন শুরু করে কোলোনকে ১-০ গোলে হারিয়ে৷ কিন্তু তার পরের সপ্তাহান্তেই হামবুর্গ ডর্টমুন্ডকে ৪-১ গোলে তুলোধোনা করে দেয়৷ তৃতীয় সপ্তাহান্তে ডর্টমুন্ড বনাম স্টুটগার্ট খেলার ফলাফল ১-১৷ এবং চতুর্থ সপ্তাহান্তেও ক্লপের দল ফ্রাঙ্কফুর্টের সঙ্গে ঐ ১-১-এর বেশি এগোতে পারেনি৷ ফুটবলের ট্র্যাজেডিই তো তাই: শেষ মেষ যে শুধু গোলের হিসেবই করা হয়!
প্রতিবেদক: অরুণ শঙ্কর চৌধুরী
সম্পাদনা: আব্দুল্লাহ আল-ফারূক