বৈধ ভোটের গণনা হলে আমিই জয়ী: ট্রাম্প
৬ নভেম্বর ২০২০একদিকে বড় আইনি লড়াইয়ের প্রস্তুতি নিচ্ছেন ট্রাম্প, অন্যদিকে তিনি বারবার নিজেকে বিজয়ী বলে ঘোষণা করে দিচ্ছেন। সংক্ষেপে এটাই হলো ট্রাম্পের ভোট পরবর্তী কৌশল। তিনি দাবি করেছেন, ''আমি প্রতারিত হয়েছি। পোস্টাল ব্যালটে ব্যাপক কারচুপি হয়েছে। ডেমোক্র্যাটরা কারচুপি করেছে। শুধু বৈধ ভোটের গণনা হলে আমি জয়ী।'' অর্থাৎ, পোস্টাল ব্যালটকে তিনি খারিজ করে দিচ্ছেন।
আবহটা তিনি আগেই তৈরি করে রেখেছিলেন। প্রচার চলার সময়েও বারবার বলেছেন, ফল বিপক্ষে গেলেও তিনি হার মানবেন না। সুপ্রিম কোর্টে যাবেন। আইনি লড়াই লড়বেন। হোয়াইট হাউসের দখল ছাড়বেন না। তখন থেকেই তিনি বলে যাচ্ছেন, পোস্টাল ব্যালটে ব্যাপক কারচুপি হয়েছে। এ বার যেহেতু করোনাকালের ভোট, তাই অনেকেই বুথে গিয়ে ভোট দেননি, পোস্টাল ব্যালটের মাধ্যমেই রায় জানিয়েছেন। ট্রাম্পসমর্থকরা আবার বুথে গিয়ে ভোট দেয়া পছন্দ করেছেন। যে কথাটা তিনি আগে বলেছেন, এখন সেই আইনি লড়াইয়ের জন্য প্রস্তুতি নিচ্ছেন ট্রাম্প।
অ্যামেরিকায় এ বার প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে হাড্ডাহাড্ডি লড়াই হয়েছে। অনেক রাজ্যেই ট্রাম্পঅপ্রত্যাশিতভাবে ভালো ফল করেছেন। কিন্তু তারপরেও তিনি অল্প কিছুটা পিছিয়ে। কয়েকটি রাজ্যের ফল ঘোষণা বাকি। এই দমবন্ধ উত্তেজনার পরিবেশে বাইডেন শান্ত। কিন্তু ট্রাম্প তাঁর স্বভাবসিদ্ধ ভঙ্গিতে সমানে বিবৃতি দিয়ে যাচ্ছেন। বৃহস্পতিবারও দিয়েছেন। আবার কারচুপির অভিযোগ এনেছেন। কিন্তু তার সমর্থনে কোনো তথ্যপ্রমাণ দেননি।
অ্যারিজোনা, জর্জিয়া, নেভাডা, পেনসিলভানিয়ার মতো রাজ্যে এখন পোস্টাল ব্যালটের গণনা চলছে। রাজ্যগুলিতে পোস্টাল ব্যালটের সিংহভাগ যাচ্ছে বাইডেনের পক্ষে। বাইডেনও তাঁর আগেকার দাবিতে অটল থেকে বলছেন, প্রতিটি ভোট গুণতে হবে।
ট্রাম্পের দল এখন প্রতিটি রাজ্যে কত ভোট কারচুপি হয়েছে সেই সংখ্যা দিতে শুরু করেছে। অ্যাটর্নি জেনারেলকে নেভাডার রিপাবলিকান পার্টি জানিয়েছে, অন্তত তিন হাজার ৬৩টি ভোট জাল। যাঁরা রাজ্য ছেড়ে চলে গেছেন, তাঁরা এই ভোট দিয়েছেন বলে ট্রাম্পের দলের অভিযোগ। বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় ট্রাম্প অভিযোগ করেন, পেনসিলভানিয়ায় গণনায় কারচুপি হয়েছে এবং গণনা হচ্ছে ডেমোক্র্যাটদের নিয়ন্ত্রণে। কিন্তু রাজ্যের কর্মকর্তারা এই অভিযোগ অস্বীকার করেছেন।
হেরে গেলে ট্রাম্পের শেষ আশা তাই সুপ্রিম কোর্টে বিচার। কারণ, মামলা শেষ পর্যন্ত সুপ্রিম কোর্টে হবে। ২০ বছর আগে জর্জ বুশ মামলা করে জিতেছিলেন। তখন তাঁর হয়ে আইনি লড়াই সামলেছিলেন সাবেক বিদেশ সচিব জেমস বেকার। ট্রাম্প এখন একজন জেমস বেকার খুঁজছেন, যিনি তাঁকে আইনি জয় দিতে পারবেন। বেশ কয়েকটি নাম নিয়ে চিন্তাভাবনা চলছে, তার মধ্যে ট্রাম্পের ব্যক্তিগত আইনজীবীও আছেন, যিনি সেনেটে ইমপিচমেন্ট প্রস্তাব নিয়ে আলোচনার সময় ট্রাম্পের পক্ষে ছিলেন।
কিন্তু জেমস বেকার বলেছেন, ''২০০০ এবং ২০২০-র মধ্যে বিশাল ফারাক। আমরা কখনো বলছি না, ভোট গণনা করা উচিত নয়। গণতন্ত্রে তা বলা যায় না। কিন্তু লোকের মনোভাব হলো, গণনা চলছে তো চলছেই। এ বার তা শেষ হওয়া দরকার।''
গণনাশেষে জিতে গেলে ঠিক আছে, হেরে গেলে সুপ্রিম কোর্টে আইনি লড়াইয়ের পথে হাঁটবেন ট্রাম্প।
জিএইচ/এসজি(এপি, রয়টার্স, এএফপি, ডিপিএ)