চাঁদে ভ্রমণের সুযোগ
৮ ডিসেম্বর ২০১২বেসরকারি উদ্যোগে মহাকাশ ভ্রমণের সুযোগ করে দিতে বাজারে নেমেছে গোল্ডেন স্পাইক নামের একটি প্রতিষ্ঠান৷ এই প্রতিষ্ঠানের পেছনে রয়েছেন ইতিমধ্যে মহাকাশ অভিযানে সফল হওয়া অ্যাপোলো উড্ডয়নের সাবেক পরিচালক এবং নাসা'র জনসন মহাকাশ কেন্দ্রের পরিচালক জেরি গ্রিফিন এবং মহাকাশ বিজ্ঞানী ও নাসা'র বিজ্ঞান শাখার সাবেক প্রধান অ্যালান স্টার্ন৷ এছাড়া এই প্রতিষ্ঠানের এমন বড়মাপের উদ্যোগের সাথে উপদেষ্টা হিসেবে রয়েছেন মার্কিন সংসদের প্রতিনিধি পরিষদের সাবেক স্পিকার নিউট গিংরিশ ও প্রেসিডেন্ট বিল ক্লিন্টনের সরকারে থাকা শীর্ষ কর্মকর্তা ও নিউ মেক্সিকোর সাবেক প্রশাসক বিল রিচার্ডসন৷
১৯৭২ সালের ৭ই ডিসেম্বর অ্যাপোলো ১৭ চাঁদে সফল অভিযানের ৪০তম বর্ষপূর্তির লগ্নে বেসরকারি উদ্যোগে চাঁদে ভ্রমণের এমন সুযোগের কথা প্রকাশ করেছে গোল্ডেন স্পাইক৷ প্রতিষ্ঠানটির চেয়ারম্যান গ্রিফিন বলেন, ‘‘আমাদের লক্ষ্য হলো বাণিজ্যিক ভিত্তিতে মানুষের চাঁদে অভিযানের নির্ভরযোগ্য এবং সাধ্যের মধ্যে থাকে এমন ব্যবস্থা করা৷'' জানা গেছে, নাসা'র মহাকাশ বিজ্ঞানীদের জন্য আন্তর্জাতিক মহাকাশ কেন্দ্রে অভিযানের উপযোগী করে যেসব মহাকাশযানের উন্নতি সাধন করা হচ্ছে সেগুলোই ব্যবহার করবে গোল্ডেন স্পাইক৷
ঠিক কতোজন ব্যক্তি বা কতোগুলো প্রতিষ্ঠান চাঁদে ভ্রমণের জন্য নিবন্ধন করছে তার উপর ভিত্তি করে ২০২০ সাল নাগাদ গোল্ডেন স্পাইক তাদের প্রথম যাত্রা শুরু করবে বলে আশা করা হচ্ছে৷ তবে এখন পর্যন্ত কেমন আগ্রহ কিংবা সাড়া পাওয়া গেছে সেব্যাপারে বিস্তারিত প্রকাশ করেননি গ্রিফিন৷
এই অভিযানের প্রথম যাত্রায় ৭ থেকে ৮ বিলিয়ন ডলার বিনিয়োগ করতে হবে বলে জানিয়েছেন গোল্ডেন স্পাইক এর প্রেসিডেন্ট অ্যালান স্টার্ন৷ অবশ্য একবার যাত্রা শুরু করলে ধীরে ধীরে এই অভিযানের খরচ কমে দেড় বিলিয়ন ডলারে নামতে পারে বলে মনে করছেন তিনি৷ সেক্ষেত্রে দুই ব্যক্তির দুই দিনের জন্য চাঁদে ঘুরে আসতে খরচ পড়বে মাত্র দেড় বিলিয়ন ডলার৷ ওয়াশিংটনে স্টার্ন সাংবাদিকদের বলেন, ‘‘এটা অনেক বড় পট পরিবর্তনকারী ঘটনা হবে৷ কারণ এখন রোবোটের মহাকাশ অভিযানে যে পরিমাণ খরচ হচ্ছে আমরা সেই খরচে চাঁদে মানুষ পাঠাতে পারবো৷'' তবে প্রতিষ্ঠানটি কতোবার চাঁদে মানুষ পাঠানোর পর লাভের মুখ দেখবে সেব্যাপারে কিছু বলেননি তিনি৷
বাণিজ্যিকভাবে মানুষের জন্য চাঁদে ভ্রমণের সম্ভাব্যতা যাচাই করতে গিয়ে দেখা গেছে, বিশ্বের ১৫ থেকে ২৫টি দেশ এই সুযোগ গ্রহণ করার সামর্থ্য রাখে কিংবা আগ্রহী হতে পারে৷ চাঁদে ভ্রমণকারী সম্ভাব্য যাত্রীদের মধ্যে থাকতে পারে বেসরকারি মহাকাশ গবেষণা সংস্থা, এর সাথে জড়িত বাণিজ্যিক সংস্থা, বৈজ্ঞানিক গবেষণা প্রতিষ্ঠান এবং বিপুল পরিমাণ সম্পদের মালিক কিছু ব্যক্তি৷
স্টার্ন বলেন, ‘‘আমরা কোরিয়া, ইন্দোনেশিয়া, দক্ষিণ আফ্রিকার মতো মধ্যসারির দেশগুলোর জন্য চাঁদে গবেষণার সুযোগ সৃষ্টি করতে চেষ্টা করবো৷ কারণ এসব দেশগুলো যদি এককভাবে চাঁদে অভিযান চালাতে যায়, তাদের খরচ আমাদের অভিযানের চেয়ে অনেক বেশি পড়বে৷'' এই চাঁদে ভ্রমণের টিকেট বিক্রির আগে গোল্ডেন স্পাইক এখন মনোযোগ দিচ্ছে বিজ্ঞাপন এবং প্রচারণার মাধ্যমে তহবিল গঠনের দিকে৷
অবশ্য, বেসরকারি উদ্যোগে চাঁদে অভিযানের উদ্যোগ নেওয়ার ক্ষেত্রে গোল্ডেন স্পাইক প্রথম প্রতিষ্ঠান নয়৷ এর আগে মুন এক্সপ্রেস এবং স্পেসএক্স এমন চাঁদ ভ্রমণের উদ্যোগ নিয়ে কাজ শুরু করেছে৷
এএইচ / আরআই (এএফপি, রয়টার্স)