1. কন্টেন্টে যান
  2. মূল মেন্যুতে যান
  3. আরো ডয়চে ভেলে সাইটে যান

বেনজির’কে আজও ভুলে যায়নি পাকিস্তান

Debarati Guha২৭ ডিসেম্বর ২০১১

আজ ২৭শে ডিসেম্বর৷ চার বছর আগে ঠিক এই দিনে, অর্থাৎ ২০০৭ সালের ২৭শে ডিসেম্বর, আততায়ীর গুলিতে নিহত হন বেনজির ভুট্টো৷ মাত্র ৫৩ বছর বয়সে মারা যান পাকিস্তানের সাবেক এই প্রধানমন্ত্রী৷

https://p.dw.com/p/13ZTl
Former Pakistan's Prime Minister Benazir Bhutto, in a photo dated March 2000, in Paris, France. Benazir Bhutto was killed in Rawalpindi on December 27, 2007. Photo: Balkis Press +++(c) dpa - Report+++
বেনজির ভুট্টোছবি: picture-alliance/dpa

বেনজির ভুট্টোর জন্ম ২১শে  জুন ১৯৫৩, করাচিতে৷ বেনজিরের বাবা ছিলেন জুলফিকার আলি ভুট্টো৷ জুলফিকার আলি ভুট্টো ১৯৭১ সাল থেকে ১৯৭৭ সাল পর্যন্ত পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী ছিলেন৷ তাঁর রাজনৈতিক দলের নাম ‘পিপল্স পার্টি অফ পাকিস্তান' বা সংক্ষেপে পিপিপি৷ ১৯৮৮ সালে বেনজির ভুট্টো সাধারণ নির্বাচনে জয়ী হন এবং মাত্র ৩৫ বছর বয়সে পাকিস্তানের প্রথম মহিলা প্রধানমন্ত্রী হিসেবে দায়িত্ব গ্রহণ করেন৷     

পাকিস্তানে পড়াশোনা শেষ করার পর বেনজির অ্যামেরিকায় যান উচ্চশিক্ষার জন্য৷ এরপর ১৯৭৩ সাল থেকে ১৯৭৭ সাল পর্যন্ত তিনি ব্রিটেনের অক্সফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয়ে আন্তর্জাতিক আইন এবং কূটনীতি বিষয় নিয়ে পড়াশোনা করেন৷

১৯৭৭ সালে বেনজির ফিরে যান পাকিস্তানে৷ এবং এর পরপরই ‘হাউজ অ্যারেস্ট' করা হয় তাঁকে৷ সে সময় জেনারেল জিয়াউল হক সামরিক ক্যু-এর মাধ্যমে জুলফিকার আলি ভুট্টোকে ক্ষমতাচ্যুত করেন৷ এর এক বছর পর, জিয়াউল হক প্রেসিডেন্ট হন পাকিস্তানের এবং ১৯৭৯ সালে জুলফিকার আলি ভুট্টোকে ফাঁসি দেয়া হয়৷ প্রচণ্ডভাবে ভেঙ্গে পড়েন বেনজির৷ ১৯৮০ সালে আসে আরেক পারিবারিক দুর্ঘটনা৷ প্যারিসের একটি ফ্ল্যাটে বেনজিরের ভাই শাহনেওয়াজ ভুট্টোকে হত্যা করা হয়৷ ভু্ট্টো পরিবার থেকে দাবি ওঠে যে, তাঁকে বিষপ্রয়োগ করে মারা হয়েছে৷ অবশ্য আনুষ্ঠানিকভাবে পুলিশের কাছে কোনো অভিযোগ জানান না তাঁরা৷ এরপর আরেক ভাই মূর্তজা ভুট্টো ১৯৯৬ সালে করাচিতে একটি বন্দুকযুদ্ধে নিহত হন৷ সেসময় বেনজির ভুট্টো ক্ষমতায়৷ তিনিই তখন দেশের প্রধানমন্ত্রী৷

** FILE ** Benazir Bhutto, center, former prime minister of Pakistan, comes out of Landhi jail with her son Bilawal Bhutto, left, and daughter Asifa Bhutto after meeting her husband Asif Zardari on Sept. 25, 1998, in Karachi. Bhutto was assassinated Thursday Dec. 27, 2007 in a suicide attack that also killed at least 20 others at the end of a campaign rally, aides said. (AP Photo)
১৯৯৮ সালে ছেলে বিলাওয়াল এবং মেয়ে আসিফার সাথে বেনজিরছবি: AP

১৯৮৪ সালে বেনজির ফিরে যান ব্রিটেনে৷ ব্রিটেনে থেকেই তিনি পিপিপি-এর প্রধান হিসেবে দায়িত্ব গ্রহণ করেন৷ বেনজির পাকিস্তানে ফিরে আসেন ১৯৮৬ সালের এপ্রিল মাসে৷ পরবর্তী নির্বাচনের জন্য প্রস্তুতি নেন তিনি৷ ১৯৮৭ সালে আসিফ আলি জরদারিকে বিয়ে করেন৷ বেনজির পেছনে রেখে গেছেন তিনটি সন্তান৷ একমাত্র পুত্র বিলাওয়াল, দুই কন্যা বাখতাওয়ার এবং আসিফা৷

১৯৮৮ সালে পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী নির্বাচিত হন বেনজির ভুট্টো৷ কিন্তু ১৯৯০ সালের নির্বাচনে হার মানতে হয় তাঁকে৷ তাঁর বিরুদ্ধে দুর্নীতির অভিযোগ আনা হয়৷ ১৯৯৩ সালের নির্বাচনে তিনি আবারো নির্বাচিত হন এবং ১৯৯৬ সাল পর্যন্ত পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন৷

১৯৯৯ সালে বেনজির ভুট্টোকে দুর্নীতির দায়ে দোষী সাব্যস্ত করা হয় এবং তিন বছরের জন্য কারাদণ্ডে দণ্ডিত হন তিনি৷ এরপর ২০০২ সাল থেকে দুবাইতে স্বেচ্ছায় নির্বাসিত জীবন বেছে নেন বেনজির এবং বিদেশে থেকেই পিপিপি-এর নেতৃত্ব দেন৷

বেনজির ভুট্টো ২০০৭ সালের অক্টোবর মাসে পাকিস্তানে ফিরে আসেন৷ জানুয়ারি মাসের সাধারণ নির্বাচনের জন্য প্রস্তুতি নিতে থাকেন৷ বিশাল এক সমাবেশের মাধ্যমে তাঁকে স্বাগতও জানানো হয়৷ অথচ সেখানেই তাঁকে হত্যার জন্য চালানো হয় হামলা৷ এতে ১৩৬ জন মানুষ মারা যায় এবং অল্পের জন্য বেঁচে যান বেনজির৷

২০০৭ সালের ২৭শে ডিসেম্বর রাওয়ালপিন্ডিতে নির্বাচনী প্রচারাভিযানে যান বেনজির৷ তখন তাঁর গাড়িকে লক্ষ্য করে গুলি ছোঁড়া হয়৷ একটি গুলি বেনজিরের গলায় লেগে মাথার পেছন দিয়ে বের হয়ে যায়৷ মৃত্যুর কোল ঢোলে পড়েন তিনি৷ এর পরপরই দুটি আত্মঘাতী বোমা হামলা চালানো হয়৷ তাতে আরো ২৮ জন মারা যায়৷ ২৮শে ডিসেম্বর সিন্ধ প্রদেশের পারিবারিক কবরস্থানে বাবার পাশে চিরনিদ্রায় শায়িত করা হয় বেনজির ভুট্টোকে৷   

প্রতিবেদন: মারিনা জোয়ারদার

সম্পাদনা: দেবারতি গুহ

স্কিপ নেক্সট সেকশন এই বিষয়ে আরো তথ্য

এই বিষয়ে আরো তথ্য